বুধবার, ২১ জানুয়ারী ২০১৫

২০ দল বিষধর সাপ

Home Page » আজকের সকল পত্রিকা » ২০ দল বিষধর সাপ
বুধবার, ২১ জানুয়ারী ২০১৫



3vo4v1vu-e1404383701985.jpgবিশেষ প্রতিনিধিঃপ্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০ দল বিষধর সাপ হয়ে দেশ ও দেশের মানুষকে দংশন করছে। দেশের মানুষকে দীর্ঘদিন অবরুদ্ধ করে রেখেছে। সবচেয়ে বড় কথা মানুষকে পুড়িয়ে মারছে।দশম জাতীয় সংসদের পঞ্চম অধিবেশনে মঙ্গলবার রাতে ‘পয়েন্ট অব অর্ডারে’ তিনি এসব বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা মানুষকে হত্যা করবে, পেট্রোল বোমা ছুঁড়বে প্রত্যেক পাড়া মহল্লায় সন্ত্রাস বিরোধী কমিটি করে তাদেরকে ধরিয়ে দিন। একজন খুনীর যে বিচার হওয়া উচিত, বোমা নিক্ষেপকারীর সে বিচারই হবে।’

নির্বাচন প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, ‘এখন নাকি আবার নির্বাচন দিতে হবে। যখন সময় হবে, তখনই নির্বাচন হবে। তিনি নির্বাচন ঠেকাতে চেয়েছিলেন। এখন আবার উনি মানুষ খুন করতে শুরু করেছেন। তাকে নাকি অবরোধ করে রাখা হয়েছে? নিজের বাড়ি ছেড়ে অফিসে আছেন। এখন তো পুলিশ নাই, তিনি ঘরে ফেরে যেতে পারেন। এখন তিনি ঘরে ফিরবেন না। সবকিছু গুছিয়ে নিয়েই তিনি সেখানে থাকার ব্যবস্থা করেছেন।’

খালেদা জিয়া যেটা করছে, সেটা গণতান্ত্রিক আন্দোলন না, জঙ্গিবাদী কার্যকলাপ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে কোনো জঙ্গির স্থান হবে না। দেশের মানুষের নিরাপত্তার জন্য যা যা করতে হয়, সেটা আমরা করবো। বোমা নিয়ে যারা আসবে, তাদেরকে যেখানেই পাওয়া যায়, সেখানেই তাদেরকে ধরতে হবে। যারা ধরা পড়েছে, তারা স্বীকার করেছে, তারা টাকার বিনিময়ে বোমা মারতে এসেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে আমি বলেছি, বোমাবাজদের যারা ধরিয়ে দেবে তাদের জন্য সুনির্দিষ্ট পুরস্কারের অঙ্ক বলে দিন।’

খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তিনি নিজেও আগে বিশ্ব ইজতেমায় যেতেন। এবার তিনি অবরোধ, হরতাল তুলেননি। ঈদে মিলাদুন্নবীতেও অবরোধ ছিলো। সে দিনটির প্রতিও সম্মান দেখায়নি। সম্মান কাকে দেখাবে? ১৯ তারিখে জিয়াউর রহমানের জন্মদিন। তার বক্তৃতায় আমি কোথাও জিয়ার জন্মদিনের কথা দেখিনি। আমি যে কপি পেয়েছি, সেখানে জিয়ার কথা কোথাও নেই।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের কিছু আঁতেল শ্রেণী আছেন, তারা একদিকে কথা বলেন। আমাকে কোনো খুনীর সঙ্গে মেশাবেন না। নিজেদের ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য খুনীর সঙ্গে আমাকে মেলাবেন, এটা আমার কাছে গ্রহণযোগ্য না। যারা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য আমাকে মেশায়, তাদের জন্য আমি দুঃখিত। সংসদ সদস্যরা যার যার এলাকায় জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবিরোধী কমিটি করেন। বাংলাদেশকে জঙ্গিবাদের জায়গা করতে দিতে পারি না। আমি বেঁচে থাকতে জঙ্গিবাদ হতে দিবো না। যেভাবেই হোক তা দমন করবো।’

খালেদার সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘তিনি গণতন্ত্র রক্ষা করবেন। জনগণকে হত্যা করে গণতন্ত্র রক্ষা করবেন কীভাবে? তার উদ্দেশ্য যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানো ও তার ছেলেকে রক্ষা করা। দুর্নীতি করেছেন আপনি। এ মামলা থেকে নিজেকে রক্ষা ও মানি লন্ডারিং ও যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা করাই তার ইস্যু। জনগণকে বাঁচানো তার ইস্যু না।’

অমিত শাহের টেলিফোন প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিজেপির প্রেসিডেন্ট অমিত শাহের টেলিফোন পেয়েছেন। পত্র পত্রিকায় বড় করে এসেছে। ছয়জন কংগ্রেসম্যানের সই নকল করে তার আন্দোলনের প্রতি সমর্থন দিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। এটা যে ডাহা মিথ্যা সেটা কংগ্রেসম্যানদের বক্তব্যে এসে গেছে। ১৯ তারিখের প্রেস ব্রিফিংয়েও তিনি মিথ্যাচার করেছেন। এই মিথ্যাচার দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চাইছেন।’

খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ করে রাখা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তাকে নাকি অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। কিছুদিন আগেই তার পার্টি থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে, তাকে নিরাপত্তা দেয়ার জন্য। নিরাপত্তা দিলেই সেটা অবরোধ হয়ে যায়। হ্যাঁ কিছু ব্যবস্থা নিতেই হয়। ৫ জানুয়ারি নির্বাচনকে উদ্দেশ্য করে তিনি হাজার হাজার মানুষ মেরেছেন।’

তিনি বলেন, ‘গরিবের পেটে লাথি মারাই যেনো তার (খালেদা) কাজ। এদেশের খেটে খাওয়া মানুষগুলোর প্রতিই যেনো তার আক্রোশ। মানুষ হত্যা করাই যেনো তার কাজ। একবারও তিনি তার বক্তব্যে সে কথা বলেননি।’

হাসিনা প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘আমার একটাই শুধু আমাদের অপরাধটা কী? যারা নির্বাচন করবে, তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে খালেদা জিয়া। আমরা সরকার গঠন করেছি। এক বছর এদেশের মানুষ শান্তিতে ছিলো। মানুষ একটু সুখের স্বপ্ন দেখতে কেবল শুরু করেছে। হঠাৎ করে তিনি নেমে পড়লেন। তার আন্দোলন মানে একই কায়দায় মানুষ খুন করা। মানুষের রক্ত নিয়ে তিনি কী অর্জন করতে চান? মিথ্যাচার তো তার স্বভাব।’

প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যের সময় ইডেনের পেট্রোলবোমা দগ্ধ ছাত্রী, আহত পুলিশ সদস্যসহ নাশকতায় বিভিন্ন আহতদের ছবি সংসদে তুলে ধরেন।

বাংলাদেশ সময়: ৯:১৩:০৮   ৪১৭ বার পঠিত