শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৪

৫ সেকেন্ডেই বিখ্যাত

Home Page » এক্সক্লুসিভ » ৫ সেকেন্ডেই বিখ্যাত
শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৪



95008_pk1.JPGহাসান মাহমুদ,বঙ্গনিউজ:বড় পর্দায় মাত্র পাঁচ সেকেন্ডের উপস্থিতি খ্যাতি এনে দিয়েছে এক ভিক্ষুককে। বাস্তবে অন্ধ সেজে বছরের পর বছর ভিক্ষা করেছেন তিনি। কিন্তু কেউ ধরতে পারেননি। এবার বড় পর্দায় সেই অন্ধের অভিনয়ই বিখ্যাত করেছে তাকে।
নাম মনোজ রায়। বয়স ৩৯ বছর। ভারতের আসাম রাজ্যের সোনিতপুর জেলার বেদেতি গ্রামের বাসিন্দা।সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া আমির খানের পিকে সিনেমায় মাত্র পাঁচ সেকেন্ডের জন্য পর্দায় দেখা গিয়েছিল তাকে। আর তাতেই জীবন বদলে গেছে তার। এখন বিখ্যাত হয়ে গেছেন তিনি। কিন্তু সবকিছু অতো সহজ ছিল না, অনেক কষ্টের পর আজ সুখের মুখ দেখেছেন তিনি।হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, জন্মের কিছু সময় পরই মাকে হারান মনোজ। এরপর তার মদ্যপ বাবা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে এক স্কুলের পাশে ভিক্ষার জন্য বসিয়ে দেন। সেই থেকে পথে পথে মানুষের কাছে হাত-পাতা শুরু। এক সময় অন্ধ সেজে ভিক্ষা করতে থাকেন। বছরখানেক পর কাজের সন্ধানে দিল্লিতে আসেন তিনি। কিন্তু স্বভাব বলে কথা, অন্ধের অভিনয়ে পাকা মনোজ তাই আগের পেশায় চলে যান। প্রতিদিন নয়াদিল্লির যন্তোর মন্তোরে থালা নিয়ে বসে পড়েন।তারপরের ঘটনা মনোজের মুখেই শোনা যাক ‘একদিন দুই ভদ্রলোক আমার কাছে এসে অভিনয়ের প্রস্তাব দিলেন। আমি তখন তাদের বললাম, দু’ বেলা খাবারের জন্য প্রতিনিয়তই তো অভিনয় করে যাচ্ছি। তারা চলে যাওয়ার আগে আমার হাতে একটি ফোন নাম্বার ও ২০ রুপির নোট গুঁজে দিয়ে যান। আর বলে যান, আমি যেন ফোন নাম্বারটি না হারাই। আগামীকাল যেন নেহরু স্টেডিয়ামে হাজির থাকি।’
‘পর দিন আমি সেখানে যাই এবং দেখি আমার মতো আরো সাত ভিক্ষুক সেখানে উপস্থিত। শ্যুটিং স্পটে আমাদের অডিশন নেয়া হয়। এক সপ্তাহ পর আমাকে বাছাই করা হয়। কিন্তু ওই সাত দিনই আমি স্পটে ছিলাম। সেখানে ফ্রি ফ্রি খাবার খেয়েছি। তবে সবচেয়ে মজা পেয়েছি যখন আমাকে ফাইভ স্টার হোটেলে থাকতে দেয়া হয়েছে।’
মনোজ বলেন, ‘আমি যেহেতু বস্তিতে থাকতাম তাই প্রতিদিন গোসল করতে পারতাম না। ভাবতে পারেন সেই আমি, আমির খান ও আনুশকার শর্মার মতো হোটেলের সুইমিং পুলে গোসল করছি!’
‘এরপর এলো সেই মহেন্দ্রক্ষণ, আমার শ্যুটিংয়ের সময়। সেখানে রাস্তার ধারে থালা হাতে আমি বসে থাকব। আর আমির খান নাচতে নাচতে এসে আমার থালা থেকে ভিক্ষার পয়সাগুলো চুরি করে নিয়ে যাবেন।’
প্রমোর এই শেষ পাঁচ সেকেন্ড যে মনোজের জীবন বদলে দিবে তা হয়ত সে কল্পনাও করেননি।পিকের এই প্রমো প্রচারের পরপরই বিখ্যাত হয়ে যান মনোজ। বলেন, ‘অভিনয়ের পারিশ্রমিক নিয়ে আমি যখন গ্রামে যাই, সেকি অভিনন্দন আমাকে! এখন গ্রামে আমার একটা দোকান আছে। শুধু তা-ই নয়, আছে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট। আর আছে প্রেমিকাও।’

বাংলাদেশ সময়: ১৫:২৪:৫৭   ৪৩২ বার পঠিত