শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০১৪
গুরুকে দূধ দিয়ে গোসল,সেই দূধ দিয়ে তৈরি ক্ষীরের প্রসাদ
Home Page » এক্সক্লুসিভ » গুরুকে দূধ দিয়ে গোসল,সেই দূধ দিয়ে তৈরি ক্ষীরের প্রসাদবঙ্গ-নিউজঃপানি নয়। ভারতের স্বঘোষিত ধর্মগুরুর গোসলপর্বের জন্য প্রতিদিন হিসারের সতেলাক আশ্রমে আসত লিটার লিটার খাঁটি দুধ। পরম ভক্তিভরে বাবার আদুল গায়ে সেই দুধ ঢেলে দিতেন তার সুন্দরী ভক্তরা। আশ্রমের পুরুষ ভক্তদের তখন সেখানে প্রবেশ নিষেধ। ভক্তদের দুধ-স্নানে শুদ্ধ হতেন বাবা। দৈব প্রসাদও দিতেন খুশি হয়ে! আসলে যে দুধ বাবার গায়ে ঢালা হতো, তা দিয়েই পরে তৈরি হতো ক্ষীর। আর সেই ক্ষীরই বাবার প্রসাদ হিসাবে ভক্তদের মধ্যে ভাগ করে দেয়া হতো।শুধু কি তাই! সমাজের চোখ এড়িয়ে বাবার আমোদ-প্রমোদের হরেক উপকরণ মজুত ছিল সতেলাক আশ্রমের নিরাপদ গণ্ডির ভিতরেই। ছিল বিশাল সুইমিং পুল। বিলাসব্যসনের অভিনব ব্যবস্থা। বাবার নিরাপত্তার জন্য ছিল সিসিটিভি ও মেটাল ডিটেক্টরও।ধর্মগুরু রামপাল নিজেকে সন্ত কবীরের আধ্যাত্মিক বরপুত্র বলে মনে করতেন। কারণ তার চোখে ব্রহ্মা, বিষ্ণু কিংবা মহেশ্বর নয়, দোঁহা-রচয়িতা কবীরই সর্বশক্তিমান ঈশ্বর। রামপালের দাবি ছিল, তার জন্মের পূর্বাভাস করেছেন স্বয়ং নস্ত্রাদামুস। আর তাই, তিনি জাগতিক লৌকিকতার অনেক ঊধের্ব।তবে ‘গডম্যান’-র থেকেও ভয়ঙ্কর ছিল তার আশ্রমের দায়িত্বে থাকা শিষ্য-সমর্থকদের কাজকর্ম। আশ্রম চত্বরের ভিতরেই বহু মহিলা ভক্তদের বিবস্ত্র করে নিগ্রহ করা হতো। আশ্রমকর্মীদের আতঙ্কে কখনো কখনো ঘরের বাইরে বেরোতে পারতেন না তারা। এই কারণেই মহিলা ভক্তদের অধিকাংশই কোনোদিন আশ্রমের বন্দি-জীবন থেকে মুক্তি পাওয়ার আশা দেখেননি।বুধবার রাতে পুলিশের জালে ধরা পড়ার পর ‘গডম্যান’ রামপালের একের পর এক কীর্তির নমুনা এইভাবেই স্থানীয়দের মুখে মুখে ফিরছে।
বৃহস্পতিবারই হাই কোর্টে জামিনের আর্জি খারিজ হয়েছে তার। ফলে আরো বিপাকে পড়েছেন বিতর্কিত বন্দি ‘গডম্যান’ রামপাল।এদিন পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাই কোর্ট রামপালকে তোলা হলে আদালত তার জামিনের আর্জি খারিজ করে ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজত দিয়েছে। ২০০৬ সালে একটি খুনের মামলায় জড়িত থাকার মামলার পরবর্তী শুনানিও ওই দিন হবে বলে জানাল হাইকোর্ট।এদিকে, রামপালের বিরুদ্ধে ওই খুনসহ বেশ কয়েকটি অপরাধমূলক ঘটনার তদন্তে হরিয়ানা পুলিশ একটি বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করেছে। জানিয়েছেন রাজ্য পুলিশের আইজি (হিসার রেঞ্জ) এ কে রাও।
তপ্ত হিসারের রামপালের ‘সতেলাক’ আশ্রম থেকে তাকে বিশাল সিআরপিএফ বাহিনী গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়ার পর এদিনও সেখানে ছিল টানটান উত্তেজনা। রামপালকে আদালতে হাজির করানোর সময় বৃহস্পতিবার গোটা আদালত চত্বর কড়া নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়। ধর্মগুরুকে আদালতে নিয়ে আসার খবরে সংবাদমাধ্যমের পাশাপাশি ছিল সাধারণ মানুষের ভিড়। আদালতে তোলার আগে নিয়মমতো ধর্মগুরুর শারীরিক পরীক্ষা করা হয়। শারীরিক পরীক্ষার জন্য অ্যাম্বুল্যান্সে করে তাকে নিয়ে আসা হয় পঞ্চকুলার সরকারি হাসপাতালে। অ্যাম্বুল্যান্স থেকে নিজেই নেমে হাসপাতালে প্রবেশ করেন গডম্যান।
বাংলাদেশ সময়: ৯:৪২:৫৬ ৪৩৯ বার পঠিত