বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০১৪

২২ বছরের কুমারীকে বিয়ে করলেন ১১৭ বছরের বৃদ্ধ

Home Page » সারাদেশ » ২২ বছরের কুমারীকে বিয়ে করলেন ১১৭ বছরের বৃদ্ধ
বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০১৪



 haji-345x230.jpg

চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার শিলক ইউনিয়নের ফকিরাঘাট গ্রামের বৃদ্ধ হাজী মুক্তুল হোসেন ১১৭ বছর বয়সে এসে দ্বিতীয় বিয়ে করে এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। গত ৯ জুন উপজেলার চন্দ্রঘোনা কদমতলি ইউনিয়নের ছুপিপাড়া গ্রামের মৃত আবদুল মালেকের ২২ বছর বয়সি মেয়ে খতিজা বেগমকে এক লাখ টাকার কাবিন নামায় দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে বিয়ে করে তিনি ঘরে তোলেন।

১৯৩২ সালে উপজেলার স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া ইউনিয়নের দৈবকিনন্দন গ্রামের সফুরা খাতুনকে প্রথম স্ত্রী হিসেবে সামাজিক ভাবে বিয়ে করেন হাজী মুক্তুল হোসেন। ১৯৯২ সালে অসুস্থতাজনিত কারণে মারা যান প্রথম স্ত্রী সফুরা খাতুন।

তাদের সংসারে রয়েছে তিন ছেলে ও চার মেয়ে সন্তান। তাদের ছেলেমেয়েরাও বিয়েশাদী করে হয়েছেন সংসারী। ১১৭ বছর বয়সে এসে মুক্তুল হোসেনের বিয়ের স্বাদ জাগায় নতুন বউ ও তাকে দেখতে দিনরাত তার বাড়িতে ভিড় জমান এলাকার উৎসুক নারী-পুরুষরা।

বৃদ্ধ বয়সে আলোড়ন সৃষ্টি করা রসিক মনমানসিকতা সম্পন্ন হাজী মুক্তুল হোসেন শিলক ফকিরাঘাট এলাকার মৃত জেয়াব উদ্দিনের পুত্র। বৃটিশ আমল থেকে বাবার সাথে ভারতের কলকাতায় ব্যবসা করতেন। কলকাতায় তাদের একটি বাড়িও ছিল।

১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর নিজ গ্রামের এক হিন্দু পরিবারকে কলকাতার বাড়িটি দিয়ে ঐ পরিবারের এখানকার বাড়িটি বদল করে নেন। সেই থেকেই ফকিরাঘাট হিন্দু পাড়া সংলগ্ন বাড়িটিতে পরিবার পরিজন নিয়ে তিনি বসবাস করে আসছেন।

গত সোমবার চন্দ্রঘোনা ছুপিপাড়া গ্রামে দরিদ্র পরিবারের খতিজাকে বউ হিসেবে তুলে আনার সময় বর যাত্রি হিসেবে যান মুক্তুল হেসেনের বড় মেয়ে লাইলা বেগম, জামাই শামসুল আলম, দুই নাতি আবুল হাশেম ও আবুল কাশেমসহ মোট ৬ জন।

হাজী মুক্তুল হোসেন ১৮৯৭ সালে তার জন্ম দাবী করে বলেন, ১১৭ বছর বয়স হলেও এখনো আমি চশমা ছাড়া কোরান শরীফ ও পত্রিকা পড়তে পাড়ি। লাঠি ছাড়া চলাফেরা করতে পারি। বর্তমান যুগের যুবকেরা ভোররাতে উঠে ফজরের নামাজ পড়েননা।

অথচ আমি প্রতিদিন মসজিদে গিয়ে নিজে আযান দিয়ে ফজরের নামাজ আদায় করি। বিয়ে করার মতো শক্তি-সামর্থ আমার আছে, তাই কারো উপর নির্ভরশীল না হতে শরিয়ত মতে বিয়ে করলাম। শখের বশে নয় প্রয়োজনের তাগিদে তিনি বিয়ে করেছেন জানিয়ে বলেন, নতুন বউকে আমার চোখে সুন্দর লেগেছে। পরিবারের সবাই মেনে নিয়েছেন, আত্মীয়-স্বজনরা গিয়েই নতুন বউ ঘরে তুলে এনেছেন।

“যখন তোমার কেউ ছিলনা তখন ছিলাম আমি, এখন তোমার সব হয়েছে পর হয়েছি আমি” এই ধরণের শ্লোক বলে ক্ষোভের সাথে মুক্তুল হোসেন দরিদ্র পরিবারের ২২ বছরের খতিজাকে বিয়ে করে নিজের মৃত্যুর পর তার নিরাপত্তার জন্য সম্পত্তির অর্ধেকাংশ নতুন বউয়ের নামে লিখে দিবেন বলে জানান।

ফকিরাঘাট গ্রামের আবু জাফর ও মাষ্টার শাহ আলম বলেন, হাজী মুক্তুল হোসেন গ্রামের বয়োবৃদ্ধ মানুষ। নিজের প্রয়োজনে বিয়ে করলেও এলাকার উৎসুক মানুষ তার বাড়িতে ভিড় জমিয়েছে। এলাকার মানুষ তাকে নিয়ে নানা রসিকতা করছেন।

শিলক ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল্লাহ চৌধুরী আয়ুব খাঁন বলেন, হাজী মুক্তুল হোসেনের বিয়ের খবর শুনেছি। ১১৭ বছর বয়সে এসে বিয়ের ঘটনাটি এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১২:২৭:০২   ৩৪৪ বার পঠিত