রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০১৪

২০ দল বিষফোড়া, হুমকি ধমকিতে কাজ হবে না:প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

Home Page » জাতীয় » ২০ দল বিষফোড়া, হুমকি ধমকিতে কাজ হবে না:প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০১৪



hasina.jpgবঙ্গ-নিউজ ডটকমঃবিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তারা জাতির জন্য আজ বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে, এতে সন্দেহ নেই। তবে যতই হুমকি-ধমকি দেয়া হোক না কেন তাতে কোনো কাজ হবে না। এ দেশের অগ্রযাত্রা কেউ ব্যাহত করতে পারবে না। এ জন্য যুবলীগসহ মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের সব শক্তিকে সতর্ক থাকতে হবে।যুবলীগের ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যুব পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বন্ধ করার অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছিল। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিগুলো সক্রিয় থাকায় কোনো ষড়যন্ত্রই গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা বন্ধ করতে পারেনি। ইনশাআল্লাহ পারবেও না।অনুষ্ঠানে উপস্থিত যুবলীগ নেতাকর্মীদের শপথবাক্য পাঠ করান সংগঠনের চেয়ারম্যান আলহাজ ওমর ফারুক চৌধুরী। সভায় আরো বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, যুবলীগের সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ। এ ছাড়া সভায় প্রেসিডিয়াম সদস্য শহীদ সেরনিয়াবাত, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুর আলম শাহীন, দফতর সম্পাদক কাজী আনিসুর রহমান, ইকবাল মাহমুদ বাবলু, শেখ ফজলে ফাহিম ও ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নাঈমসহ যুবলীগের কেন্দ্রীয় ও মহানগর নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে যুব গবেষণা কেন্দ্র প্রকাশিত রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার পরিবর্তনের ডাক, রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার অর্থনৈতিক পরিবর্তনের ডাক এবং ইসলামি মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনা শীর্ষক তিনটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০১ সালে গ্যাস বিক্রি করতে রাজি হইনি বলে ক্ষমতায় আসতে পারিনি। তখন আলবদর প্রধান হয়ে যায় এ দেশের মন্ত্রী। জিয়া মন্ত্রী বানিয়েছিলেন, পরে তার স্ত্রী খালেদা জিয়াও মন্ত্রী বানিয়েছেন। ২০০৮ সালে নির্বাচনের আগে আমরা ওয়াদা দিয়েছিলাম যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করব। আমরা ক্ষমতায় এসে বিচার শুরু করি। বিচারের রায়ও কার্যকর করেছি।
বিএনপির সাথে জামায়াতের সম্পর্কের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি নেত্রীর জনসভাগুলোতে রাজাকারদের মুক্তি দাবির প্ল্যাকার্ড তুলে ধরা হয়। তাহলে উনি (খালেদা জিয়া) কি স্বাধীনতার পক্ষে? তাহলে উনার জনসভায় যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তির দাবি উঠে কিভাবে। উনি কী চান এটা তখন স্পষ্ট হয়ে যায়।
শেখ হাসিনা বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে বিএনপি নেত্রী সন্ত্রাসী লেলিয়ে দিয়েছিলেন। উনি বুঝেন না এসব করলেই তো বিচার বন্ধ হয়ে যাবে না। এ বিচার চলছে, চলবে। একে একে প্রত্যেকের রায়ও কার্যকর হবে। এ দেশের মাটি লাখো শহীদের রক্তে ভেজা। যারা একাত্তরে হত্যা-গুম-ধর্ষণ-অগ্নিসংযোগ করেছে তাদের স্থান বাংলার মাটিতে হবে না।
মানবাধিকারের প্রশ্নে শেখ হাসিনা বলেন, যারা স্বজন হারানোর বেদনা নিয়ে চলছেন, তাদের মানবাধিকার নিশ্চিত করতে হবে। তাদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে।যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে বিভিন্ন দেশ ও সংগঠনের উদ্বেগের প্রতি ইঙ্গিত করে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের মানুষ কারো কাছে মাথানত করে না। যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। বাঙালি জাতি বীরের জাতি।
যুব সম্প্রদায়ের উন্নয়নে বর্তমান সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, যুবকদের কল্যাণে সরকার ঋণ সুবিধা দিচ্ছে, প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। ন্যাশনাল সার্ভিস ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট করা হয়েছে প্রতিটি থানায়।
প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের বিভিন্ন সফলতা তুলে ধরে বলেন, সরকার শুধু দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণই করেনি; বাংলাদেশ এখন দেশের বাইরে খাদ্য রফতানিও করছে। সবজি, মাছসহ বিভিন্ন কৃষিজদ্রব্য রফতানি করা হচ্ছে। কারো কাছে ভিক্ষা চাইতে হবে না। শেখ হাসিনা বলেন, আমরা পারি; আমাদের আন্তরিকতা আছে। যে দল স্বাধীনতা দেয় তারা ক্ষমতায় থাকলে দেশের উন্নয়ন হয়।
সমাবেশের সময় বেলা ২টা ঘোষিত থাকলেও দুপুরের পর থেকেই সারা দেশের যুবলীগ নেতাকর্মীরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আসতে থাকে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিশাল প্যান্ডেল ছাড়াও রঙ-বেরঙের বিভিন্ন প্ল্যাকার্ডে শোভা পায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। থেমে থেমে চলে বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনাকে নিয়ে স্তুতিমূলক বিভিন্ন গান। বাদ্যের তালে তালে সবাই প্রবেশ করেন উদ্যানের মূল সমাবেশস্থলে। তবে শত শত গাড়ি একযোগে শাহবাগের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানমুখী হওয়ায় নগরবাসীকে একটু ভোগান্তির মুখেও পড়তে হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২:১৮:৪৭   ৩৪৬ বার পঠিত