রবিবার, ৯ নভেম্বর ২০১৪

বেরোবির ২৮ শিক্ষকের পদত্যাগ

Home Page » শিক্ষাঙ্গন » বেরোবির ২৮ শিক্ষকের পদত্যাগ
রবিবার, ৯ নভেম্বর ২০১৪



rongpur.jpgবঙ্গ-নিউজ ডটকমঃ পদোন্নতিসহ বিভিন্ন দাবিতে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) বিভিন্ন প্রশাসনিক ও একাডেমিক পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন ২৮ শিক্ষক। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. পরিমল চন্দ্র বর্মন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, রবিবার সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির আহবানে সাড়া দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের চার অনুষদের চার ডিন, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, দুই হলের দুই প্রভোস্ট, তিন সহকারী প্রভোস্ট, বিভাগীয় প্রধান ১৫ জন, এক সহকারী প্রক্টর, লাইব্রেরি পরিচালক এবং সাইবার সেন্টার পরিচালকের পদ থেকে শিক্ষকরা পদত্যাগপত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে জমা দিয়েছেন।

বাকি কয়েকটি পদের দায়িত্বে থাকা শিক্ষকরা ছুটিতে থাকায় পদত্যাগপত্র জমা দিতে পারেননি। পরবর্তী সময়ে তারাও উপস্থিত হয়ে পদত্যাগপত্র জমা দেবেন বলেও জানান ড. পরিমল চন্দ্র বর্মন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. নূর উন নবীর সঙ্গে তার মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন।

তিনি বলেন, ২৮টি পদ থেকে শিক্ষকরা পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। এরপর মিটিং করছেন, পরে যোগাযোগ করতে বলে তিনি ফোন কেটে দেন।

এর আগে, শিক্ষক সমিতির বৃহস্পতিবারের জরুরি সভায় রবিবার পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বেরোবি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফেরদৌস রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভা পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক ড. পরিমল চন্দ্র বর্মন।

ড. পরিমল চন্দ্র বর্মন বলেন, ৩০ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪২তম সিন্ডিকেট সভার মাধ্যমে ২৭ প্রভাষককে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়। কিন্তু তারা অনেক আগেই যোগ্যতা অর্জন করেন। তাদের পদমর্যাদা ও প্রাপ্য সুবিধাদি সিন্ডিকেট সভার দিন থেকে কার্যকরের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

এ ছাড়া অধ্যাপক ও সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতির জন্য শিক্ষকরা আবেদন করে রাখলেও তা নিয়ে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় শিক্ষকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। এ বিষয়ে উপাচার্যের কাছে বার বার ধরনা দিলেও কোনো লাভ হয়নি। একপর্যায়ে পদমর্যাদা ও প্রাপ্য সুবিধা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন উপাচার্য।

বিষয়টি নিরসনে ২৭ অক্টোবর শিক্ষক সমিতি সাধারণ সভার মাধ্যমে উপাচার্যকে স্মারকলিপি দিলেও তিনি এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেননি।

শিক্ষক সমিতি ১ নভেম্বর সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত উপাচার্যকে বয়কটের সিদ্ধান্ত নেয়। এরপরও উপাচার্য শিক্ষকদের দাবি মেনে না নেওয়ায় বৃহস্পতিবার জরুরি সাধারণ সভার মাধ্যমে প্রশাসনিক ও একাডেমিক পদ থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন শিক্ষকরা। তবে ক্লাস ও পরীক্ষা চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তারা।

সাধারণ সভায় শিক্ষকরা অভিযোগ করেন, উপাচার্যের স্বেচ্ছাচারী আচরণ ও একগুয়েমির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও একাডেমিক কাজে স্থবিরতা নেমে এসেছে। তিনি একাই বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক পদ আঁকড়ে আছেন এবং বেশিরভাগ সময় দাপ্তরিক কাজের অজুহাতে ঢাকায় অবস্থান করেন। এ কারণে সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে।

বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষকদের শিক্ষা ছুটির জন্য মন্ত্রণালয়ের দ্বারস্থ না হওয়া লাগলেও বর্তমান উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ে এ প্রথা চালু করে শিক্ষকদের হয়রানি করছেন বলেও অভিযোগ শিক্ষকদের।

শিক্ষকরা বলেন, উপাচার্যের এমন আচরণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে একাডেমিক শাখা। কিন্তু সেদিকে তার কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ছয়টি বিভাগের শিক্ষার্থীরা তাদের স্নাতক ডিগ্রি শেষ করলেও স্নাতকোত্তর ডিগ্রির বিধিমালা করার বিষয়ে উপাচার্য মহোদয় উদাসীন। ফলে শিক্ষার্থীরা তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।

শিক্ষকদের অভিযোগ, ওয়াজেদ রিসার্চ ইনস্টিটিউটে দুই বছর আগে গবেষক ভর্তি করা হলেও সেখানে কোনো কার্যক্রম শুরু হয়নি। এমনকি সেখানে কোনো সিলেবাস পর্যন্ত নেই। বরং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত যারা ছুটি নিয়ে গবেষণার জন্য ভর্তি হয়েছেন তাদের ছুটির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় তারা বিপাকে পড়েছেন।

এর আগে সকাল ১০টায় ১৯টি প্রশাসনিক পদ থেকে ১০ শিক্ষক পদত্যাগ পত্র জমা দেন।

 

বাংলাদেশ সময়: ১৯:০০:০৯   ৫০১ বার পঠিত