সোমবার, ৩ নভেম্বর ২০১৪

কামারুজ্জামানের আপিলের রায় আজ

Home Page » জাতীয় » কামারুজ্জামানের আপিলের রায় আজ
সোমবার, ৩ নভেম্বর ২০১৪



kamruzzaman-final.jpgবঙ্গনিউজ:জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের আপিলের রায় আজ সোমবার ঘোষণা করা হবে। মামলাটি আপিল বিভাগে সোমবারের কার্যতালিকার একনম্বরে রায় ঘোষণার জন্য রাখা হয়েছে। গতকাল সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে এই তালিকা প্রকাশ করা হয়। এ ছাড়া সুপ্রিম কোর্টের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এস এম কুদ্দুস ও সাংবাদিকদের বলেছেন, সোমবার সকালে কামারুজ্জামানের আপিলের ওপর রায় দেয়া হবে।
গত ১৭ সেপ্টেম্বর মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের আপিলের শুনানি শেষ হয়। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি সুরেন্দ্রকুমার সিনহা, বিচারপতি মো: আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরীর বেঞ্চ উভয় পক্ষের শুনানি গ্রহণ শেষে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রেখেছিলেন।
গত বছরের ৯ মে কামারুজ্জামানকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করে ট্রাইব্যুনাল-২।
কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আনা হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন, দেশত্যাগে বাধ্য করাসহ মানবতাবিরোধী সাতটি অভিযোগের মধ্যে ৩ ও ৪ নম্বর অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেন ট্রাইব্যুনাল। ১ ও ৭ নম্বর অভিযোগে তাকে যাবজ্জীবন সাজা এবং ২ নম্বর অভিযোগে ১০ বছর কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। আর, ৫ ও ৬ নম্বর অভিযোগ থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
গত বছরের ৬ জুন ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে খালাস চেয়ে আপিল করেন কামারুজ্জামান।
গত ১৮ মে ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে কামারুজ্জামানের মামলার আপিল শুনানি শুরু হয়।
কামারুজ্জামানের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এস এম শাহজাহান আপিলের শুনানি করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে যুক্তি উপস্থাপন করেন।
২০১২ সালের ৪ জুন কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।
কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে সাত অভিযোগ:
১. বদিউজ্জামান হত্যা: ১৯৭১ সালের ২৯ জুন সকালে শেরপুরের ঝিনাইগাতী থানার রামনগর গ্রামের আহম্মেদ মেম্বারের বাড়ি থেকে বদিউজ্জামানকে অপহরণ, নির্যাতন ও হত্যার অভিযোগে কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এই অভিযোগ ও সাত নম্বর অভিযোগ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন ট্রাইব্যুনাল।
২. প্রিন্সিপাল হান্নানকে নির্যাতন : মুক্তিযুদ্ধের সময় শেরপুর কলেজের অধ্য সৈয়দ আবদুল হান্নানকে মাথা ন্যাড়া করে চুনকালি মাখিয়ে পুরো শহর ঘোরানোর ঘটনায় কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এই অভিযোগে ট্রাইব্যুনাল তাকে ১০ বছর কারাদণ্ড প্রদান করেন।
৩. সোহাগপুর গণহত্যা: ১৯৭১ সালের ২৫ জুলাই আলবদর ও রাজাকাররা পাকিস্তানি সেনাদের নিয়ে শেরপুরের সোহাগপুর গ্রামে হত্যাযজ্ঞ ও নারী ধর্ষণের ঘটনায় কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এই অভিযোগ ও ৪ নম্বর অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন ট্রাইব্যুনাল।
৪. গোলাম মোস্তফা হত্যা: ১৯৭১ সালের ২৩ আগস্ট আলবদর সদস্যরা গোলাম মোস্তফাকে সুরেন্দ্র মোহন সাহার বাড়িতে আলবদর ক্যাম্পে নিয়ে গুলি করে হত্যার ঘটনায় কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।
৫. লিয়াকত-মুজিবুরসহ অজ্ঞাত ৮ জনকে হত্যা: মুক্তিযুদ্ধকালে রমজান মাসের মাঝামাঝি সময়ে শেরপুরের চকবাজার থেকে লিয়াকত আলী ও মুজিবুর রহমানকে অপহরণ করে বাঁথিয়া ভবনের রাজাকার ক্যাম্পে আটকে রাখা হয় এবং পরে পাকিস্তান আর্মি লিয়াকত, মুজিবুরসহ ৮ জনকে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যার ঘটনায় কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এই অভিযোগ থেকে তাকে খালাস প্রদান করেন ট্রাইব্যুনাল।
৬. টুনু হত্যা: ১৯৭১ সালের নভেম্বর মাসে টুনু ও জাহাঙ্গীরকে ময়মনসিংহ জেলা পরিষদের ডাকবাংলোতে আলবদর ক্যাম্পে নিয়ে টুনুকে নির্যাতন করে হত্যার ঘটনায় কামারুজ্জামানকে অভিযুক্ত করা হয়। এই অভিযোগ থেকেও তাকে খালাস প্রদান করেন ট্রাইব্যুনাল।
৭. দারাসহ ছয় হত্যা: মুক্তিযুদ্ধকালে ২৭ রমজান ময়মনসিংহের গোলাপজান রোডের টেপা মিয়া ও তার বড় ছেলে জহুরুল ইসলাম দারাকে জেলা পরিষদের ডাকবাংলোয় আলবদর ক্যাম্পে নেয়া হয়। পর দিন ওই দু’জনসহ সাতজনকে আলবদররা গুলি করলে টেপা মিয়ার পায়ে লাগে। তিনি পালাতে সম হন। অন্য ছয়জনের মৃত্যু হয়। এই ঘটনায়ও কামারুজ্জামানকে অভিযুক্ত করা হয়।
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার অভিযোগের পুলিশের মামলায় ২০১০ সালের ২৯ জুলাই কামারুজ্জামানকে গ্রেফতার করা হয়। পরে ২ আগস্ট তাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতার দেখানো হয়।

বাংলাদেশ সময়: ৭:২১:৪৯   ৩১২ বার পঠিত