রবিবার, ২ নভেম্বর ২০১৪

এক সমাধি গ্রামের বাণিজ্য

Home Page » এক্সক্লুসিভ » এক সমাধি গ্রামের বাণিজ্য
রবিবার, ২ নভেম্বর ২০১৪



82816_philip.jpgবঙ্গনিউজ:ফিলিপাইনে একটি সমাধিক্ষেত্রকে কেন্দ্র করে অনিয়ম বন্ধে সোচ্চার হয়েছেন দেশটির আইনপ্রণেতা টেরি রিদোন। এই অন্যায় ব্যবসা বন্ধ করতে আইন সংশোধনের কথাও বলছেন তিনি।
গলফ নিউজ জানায়, ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলায় একটি বহুতলবিশিষ্ট সমাধিক্ষেত্রকে কেন্দ্র করে হাজার বছর ধরে চলে আসছে বাণিজ্য। মৃতদের পাশাপাশি সেখানে অনেক জীবিত লোকের বসবাস। তাদের পূর্বপুরুষদের সমাধিও এখানেই। পাশাপাশি খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী ফিলিপাইনের অনেক লোককেই মৃত্যুর পর এখানে সমাধিস্ত করা হয়। এতে প্রায় সবসময়ই কোলাহলপূর্ণ থাকে সমাধিক্ষেত্রটি।
তবে এখানে কবর দিতে আসা মৃতের আত্মীয় ও বন্ধুবান্ধবদের ভোগান্তির শিকার হতে হয়। সমাধিক্ষেত্রে ঢোকার পর এগিয়ে আসেন সমাধি দালালরা। তারাই ভাগাভাগি করে লাশ বহন করেন। কেউ লাশে সুগন্ধি দেন, সমাধি খুঁড়েন। আবার লাশ নিয়ে নানা যাগযজ্ঞের আয়োজনও করেন। মৃতের আত্মীয়রা এদের হাতে লাশ হস্তান্তর করতে বাধ্য হন। এ ছাড়া এর জন্য বিপুল অঙ্কের টাকা গুণতেও বাধ্য করা হয় এদের।
সম্প্রতি সমাধিগ্রামের এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে কাজ করছেন আইনপ্রণেতা রিদোন। তিনি বলেন, ফিলিপাইনের সংস্কৃতি অনুযায়ী মানুষ মারা যাওয়ার পর তার লাশটি তিন দিন রেখে দেয়া হয়। এ তিন দিন স্বজন ও বন্ধুবান্ধবরা এসে লাশ ঘিরে কান্নাকাটি করেন।
তিনি বলেন, সম্ভবত কঠিন পৃথিবী থেকে পালিয়ে যাওয়ার একটি পথ মৃত্যু। কিন্তু এ মৃত্যুর কারণেই রেখে যাওয়া পরিবারকে ভোগান্তির শিকার হতে হয়। আর এ ভোগান্তিটা শুরু হয় তাকে সমাধি দেয়ার আয়োজন থেকেই। এর জন্য বড় অঙ্ক পকেট থেকে খসে যায়। সমাধিক্ষেত্রগুলোর এসব কার্যকলাপ মূলত অবৈধ এবং অনেকটা জুয়ার মতো।
এর সাথে স্থানীয় হাসপাতালগুলোরও যোগসাজস আছে উল্লেখ করে রিদোন বলেন, অনেক হাসপাতালই পরিবারের অনুমতি ছাড়াই মৃতদেহগুলোকে সুবাসিত করার নামে সমাধি ব্যবসায়ীদের হাতে তুলে দেয়।
তিনি বলেন, দেশটির অধিকাংশ অন্তেষ্টিক্রিয়াতে এবং সমাধিক্ষেত্রেই লোক জড়ো হন। তারা মৃত ব্যক্তির জন্য প্রার্থনা করেন। তবে সমাধিক্ষেত্রে কিছু লোকের ব্যবসায়িক স্বার্থে অনেকেই এতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না।তিনি এর প্রতিকার চেয়ে দেশটির কংগ্রেসের হেলথ এন্ড সোসাইল সার্ভিস কমিটির প্রতি অনুরোধ করবেন বলে জানান। পশাপাশি সমাধিক্ষেত্রের যাগযজ্ঞের বিরোধিতা না করে তিনি বলেন, আইন সংশোধন করা হলে সমাধি শিল্প আরো বিকশিত হবে। সমাধিক্ষেত্রগুলোতে আরো বেশি মানুষকে আকৃষ্ট করা যাবে। বিশেষ করে দেশের অভাবীরা উপকৃত হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭:২৫:৩৪   ৩৫৯ বার পঠিত