সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০১৪
বাংলাদেশী রাজনীতিকের তথ্য পেতে এফবিআইকে ঘুষ
Home Page » জাতীয় » বাংলাদেশী রাজনীতিকের তথ্য পেতে এফবিআইকে ঘুষবঙ্গ-নিউজ:বাংলাদেশের এক রাজনৈতিক ব্যক্তির বিষয়ে তথ্য পেতে এফবিআইয়ের সাবেক এজেন্টকে ঘুষ দেওয়ার কথা যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে স্বীকার করেছেন এক বাংলাদেশী তরুণসহ দুই ব্যক্তি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েবসাইট ‘এক্সামিনার ডট কম’ এক সংবাদে এই তথ্য প্রকাশ করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস জানিয়েছে, বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত রিজভী আহমেদ ওরফে সিজার (৩৫) ও জোহানেস থালের (৫১) গত ১৭ অক্টোবর নিউইয়র্কের হোয়াইট প্লেইন ফেডারেল আদালতে বিচারক ভিনসেন্ট এল ব্রিকেটির সামনে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
তারা দু’ জনেই স্বীকার করেন, ২০১১ সালের সেপ্টেম্বর ও ২০১২ সালের মার্চের মধ্যে তারা এফবিআইয়ের সাবেক স্পেশাল এজেন্ট রবার্ট লাস্টিককে ঘুষ সাধেন, যিনি ওই সময়ে এফবিআইয়ের কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স স্কোয়াডে দায়িত্বরত ছিলেন।
এদের মধ্যে থালের এফবিআই এজেন্ট লাস্টিকের ছোটবেলার বন্ধু। আর একটি দোকানে একসঙ্গে কাজ করার সুবাদে রিজভীর সঙ্গে খালেরের পরিচয়। ঘুষের এই মামলায় রিজভী ও থালেরকে গত আগস্টে গ্রেফতার করা হয়। আর লাস্টিককে অন্য এক অভিযোগে আগেই গ্রেফতার করা হয়। জবানবন্দিতে রিজভী বলেন, তার বিপরীত মতাদর্শের একজন বাংলাদেশী রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্বের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর গোপন নথি এবং সন্দেহজনক কর্মকান্ডের বিষয়ে একটি প্রতিবেদন পাওয়ার জন্য তিনি ওই ঘুষ সাধেন। তবে ওই বাংলাদেশি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের নাম-পরিচয় ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস প্রকাশ করেনি।
রিজভী ও খালের জবানবন্দিতে স্বীকার করেন, ওই রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্বের অবস্থান জেনে তার এবং তার সঙ্গে সংশি্লষ্টদের ক্ষতি করতেই ওই গোপন তথ্য চাইছিলেন তিনি। এ বিষয়ে রবার্ট লাস্টিকের সঙ্গে মেইল ও টেক্সট ম্যাসেজ চালাচালি হয়। এফবিআই এজেন্ট লাস্টিক প্রাথমিকভাবে ৪০ হাজার ডলার এবং পরে মাসিক ভিত্তিতে ৩০ হাজার ডলারের বিনিময়ে সব তথ্য দিতে রাজি হন।
২০১১ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর, ১৩ অক্টোবর ও ৩ নভেম্বর লাস্টিকের নির্দেশে একজন এজেন্ট তিন দফা এফবিআইয়ের ডাটাবেজে প্রবেশ করেন এবং ওই বাংলাদেশী রাজনীতিকের বিষয়ে সন্দেহজনক কার্যক্রমের গোপন নথি সংগ্রহ করেন। এরপর ২০১১ সালের ৯ ডিসেম্বর ডানবুরির এক শপিং মলের ফুড কোর্টে থালের ও রিজভির বৈঠক হয়। সেখানে থালের এফবিআইয়ের ওই গোপন নথি রিজভির হাতে দেন এবং বিনিময়ে রিজভি দেন এক হাজার ডলার। এরপর রিজভিকে চাপ দিয়ে কীভাবে বাড়তি টাকা আদায় করা যায় সে বিষয়ে থালের ও লাস্টিকের মধ্যে এসএমএস আদান প্রদান হয়। একটি রেসে্তারঁায় বৈঠক করার বিষয়েও তারা সম্মত হন। ওই এসএমএস থেকে জানা যায়, বাংলাদেশের আরেক রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্বের বিরুদ্ধে অভিযোগ বাদ দেওয়ার জন্য ঘুষ দিতে রাজি হন রিজভি ও তার সঙ্গীরা।
২০১২ সালের জানুয়ারির শেষ দিকে লাস্টিক জানতে পারেন, রিজভি আরেকটি সূত্র থেকে গোপন তথ্য বের করার চষ্টোয় আছেন। এরপর তিনি থালেরকে একটি টেক্সট ম্যাসেজ পাঠান, যাতে বলা হয়, ওই এফবিআই এজেন্ট বাংলাদেশি সেই রাজনীতিকের নম্বর পেয়েছেন এবং দ্রুত ১০ হাজার ডলার না পেলে তিনি রিজভির গোপন তথ্য চাওয়ার বিষয়টি ফাঁস করে দেবেন। এ ঘটনায় রিজভীর পেছনে আর কে বা কারা ছিল-সে বিষয়ে কিছু এজাহারে উল্লেখ করা হয়নি। আগামী বছর ২৩ জানুয়ারি রিজভি ও থালের বিরুদ্ধে এ মামলার শুনানি শুরু হবে বলে যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস জানিয়েছে। আর লাস্টিকের বিচার শুরু হবে আগামী ১৭ নভেম্বর।
বাংলাদেশ সময়: ২২:৪২:৪০ ৩৭৯ বার পঠিত