বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০১৪
স্বাস্থ্য ঘাতী ফাস্টফুড! সচেতনতা প্রয়োজন এখনই
Home Page » স্বাস্থ্য ও সেবা » স্বাস্থ্য ঘাতী ফাস্টফুড! সচেতনতা প্রয়োজন এখনইবঙ্গ-নিউজ ডটকম:fast-foodমানুষ স্বভাবত নতুন বিষয়ে আগ্রহী থাকে । নতুনত্ব নিয়ে আসতে চায় সবক্ষেত্রে । তাই খাদ্যের নতুন ও আকর্ষনীয় ভাব মানুষের দৃষ্টি কাড়ে । জিহ্বার স্বাদ যে অনেক সময় ক্ষতির কারণ হয় সেটা আমাদের অনেকেরই জানা নেই । তাই আসুন জেনে নিই ফাস্টফুডের ক্ষতিকর দিকগুলো।
স্বাস্থ্য ঘাতী ফাস্টফুড বর্তমানে সারাবিশ্বে বাড়ছে অনেক অজানা খাদ্য বাহিত রোগ । আর এগুলোর মুল কারণ হিসেবে সামনে এসে দ্বাড়িয়ে আছে রসনা তৃপ্তিদায়ক ফাস্টফুড । বিশ্বজুড়ে যার নাম ‘জাংক ফুড’ । যুক্তরাষ্ট্রে খাদ্য সংশ্লিষ্ট রোগে আক্রান্ত হয় প্রায় দিনে দুই লাখ লোখ । যার মধ্যে প্রায় ৫০ জন মারা যায় ।
বার্গার, খাবেন কি না সিদ্ধান্ত নিনঃ
In-N-Out_Burger_cheeseburgersফাস্টফুড বলতে গেলে অন্তরে প্রথমে যে জিনিষের কল্পনা আসে তা হলো বার্গার । অনেকের খুব প্রিয় এই বার্গার । বার্গার এর সম্পর্কে ভালো না জানা বা সঠিক না জানাই তা প্রিয় ভাব ধরে রেখেছে । আসুন একটু দেখি বার্গার এর গোপন কথা । বার্গার এ যে গরুর বা খাসির গোশত দেয়া হয় তার অবস্থা সম্পর্কে কিছু জানি। আমেরিকার কথা বলি তাহলে দেশের অবস্থা আপনারা বুঝবেন । সেখানে কি ভাবে গোশত প্রস্তুত করা হয় ? সেখানে একটি বিফ বার্গারে যে মাংসের কিমা থাকে তা অন্তত এক ডজন গরু এবং কখনো কখনো কয়েক শত পর্যন্ত গরুর গোশত মিশ্রিত থাকে । আর গুরুর অবস্থাও তেমন পর্যাবেক্ষন করা হয়না ।
সেখানে চামড়া , এমনকি গোবর পর্যন্ত লেগে থাকে । সাথে মাংস বাহিত জীবানু যেমন ই কোলাই, সালমোনেলা সহ আরো অনেক জীবানু । এক মণ মাংস সংক্রামিত করতে একটি জীবানুই যথেষ্ট । আর আপনি বুঝবেন বা কিভাবে তা আপনার কাছে আসার আগে প্রচন্ড চাপে দীপ ফ্রাই করা হয় । আর ভাবছেন যে ফ্লেভার তা অর্জিনাল ! না তা হচ্ছে যোগ করা । এক প্রকার দ্রব্য পাওয়া যায় যা মাংসের মত গন্ধ দেয় । যা খেয়ে হাজার হাজার লোক খাদ্য জনিত রোগে আক্রান্ত হয় । সম্মানিত পাঠক মহাদয় একটু চিন্তা করুন সভ্যতার সর্বোচ্চ আসনে থেকে যদি তাদের খাদ্য নিরাপত্তার এই অবস্থা হয় , তাহলে আমাদের দেশের কি অবস্থা??
শুধু তাই নয় ১৯৯৭ সালের আগে সে দেশে মৃত গবাদী পশুর গোশত বাজারে বিক্রি করা হয় । এক সময় বৃটেনে মাট কাউ ডিজিজ মহামারি আকারে ছড়িয়ে পরে । মার্কিন সাংবাদিক এরিক শ্লোজার টানা তিন বছর গবেষনা ও অনুসন্ধান চালিয়ে ফাস্টফুড নেশন নামে একটি বই লিখেন , যাতে আমেরিকার খাদ্য অবস্থার প্রমান রয়েছে। ২০০২ সালে তা প্রকাশিত হয়।
গবেষকরা দেখেছেন, মানুষের শরিরে একটি আনুবিক উপাদান পিজিসি-১ বিটা। স্যাচুরেটেড ফ্যাট শরীরে প্রবেশ করলে এটি লিভার কে এলডিএল এবং ট্রাই গ্লিসারিন তৈরিতে বাধ্য করে । যা হার্ট এ্যটাক ও উচ্চরক্তচাপ এর জন্যে দায়ী। ক্যান্সার এর কারণ ও হতে পারে এই বার্গার।
ফ্লেভারঃ জীবন নাশের নতুন হাতিয়ার
ফাস্টফুডে আকর্ষনীয় ফ্লেভার আসলে স্বাভাবিক ভাবে তৈরি হয় না । বিশেষ কিছু উপাদান ব্যবহার করা হয় যার কারনে অনেক সময় নরমালের চেয়ে অনেক বেশী ফ্লেভার হয় ।এসব ফ্লেভার গুলো এত শক্তিশালী যে একটি শুকনো কাঠের উপর দেয়া হলে তাও সুস্বাদু করে তোলা সম্ভব । আর বেশি ব্যবহৃত টেস্টিং সল্ট যা খুবিই ক্ষতিকর ।
বাড়ছে মেদস্থুলতাঃ
মেদ স্থুলতার বর্তমানে সবচেয়ে বড় কারণ এই ফাস্টফুড । আর এগুলোর প্রতিক্রিয়া উচ্চরক্তচাপ , ডায়াবেটিস ও হৃদরোগ সহ মানুষিক অশান্তি ।অতিরিক্ত ওজন ধারিদের অকাল মৃত্যুর হার অনেক বেশী।
ফাস্টফুডে বুদ্ধিনাশ!
তিন বছরের আগে শিশুদের এই ফাস্টফুড খাওয়ালে তাদের আই কিউ কমে যায় । লন্ডনে ২০১০ সালে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় । তিন থেকে পাঁচ বছরের চার হাজার শিশুর উপর চালোনে এই গবেষনায় বিজ্ঞানিরা বলেন , ফাস্টফুড খাওয়ায় ফলে শিশুদের মস্তিষ্কের ক্ষমতা স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে । অন্য দিকে যেসব শিশুরা ফলমূল , শাকসবজি সহ গরে তৈরি তাজা পুস্টিকর খাবার খাওয়ানো হয় তাহলে তাদের আই কিউ ৫ পয়েন্ট পর্যন্ত বাড়তে পারে । আই শিশুদের ফাস্টফুডে অভ্যস্ত না করে ফলমুলের প্রতি চাহিদা বাড়ানো উচিত ।
তাই আসুন নিজের স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে জেনে বুঝে স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহন করি । স্বাস্থ্যই সকল সুখের মুল ।
তথ্যসুত্রঃ ফাস্টফুড নেশন, ডেইলি মেইল অনলাইন, টাইম ম্যাগাজিন অনলাইন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:৪৮:২০ ৪০৯ বার পঠিত