মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০১৪
দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে ভাসানটেক থানার পরিদর্শকসহ ১৯ পুলিশ বরখাস্ত
Home Page » জাতীয় » দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে ভাসানটেক থানার পরিদর্শকসহ ১৯ পুলিশ বরখাস্তবঙ্গ-নিউজ ডটকমঃরাজধানীর মিরপুরের ভাসানটেকে বোনের উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় ভাই নাসির হোসেনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে তিন দিনের মাথায় ভাসানটেক থানার পরিদর্শক (তদন্ত) গোলাম নবী ও ফাঁড়ির ১৯ সদস্যকে বরখাস্ত করা হয়েছে।সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিরপুর বিভাগের উপ-কমিশনারের কার্যালয় থেকে এ সংক্রান্ত আদেশ জারি হয়।
এ ব্যাপারে মিরপুর বিভাগের উপ-কমিশনার নিসারুল আরিফ বলেন, থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) ও ভাসানটেক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আনিসুর রহমানসহ ১৯ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্তের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
তিনি জানান, তাদেরকে প্রত্যাহার করে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে পাঠানো হয়েছে। হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন এসআই আনিসুর রহমান। তাকেও ওই মামলার তদন্তের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে।
এদিকে এ ঘটনাটি তদন্তের জন্য মিরপুর বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার জসীম উদ্দিনকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন দুইজন সহকারী কমিশনার। কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট মিরপুর বিভাগের উপ-কমিশনার কার্যালয়ে জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
গত শুক্রবার রাতে ভাসানটেকের গোলটেকে মামাতো বোনকে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় বখাটেরা নাসির হোসেনকে পিটিয়ে হত্যা করে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের মিরপুর বিভাগের একটি সূত্র জানায়, আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষা করতে না পারা এবং ঘটনার তিন দিন পরও কোনো আসামি গ্রেফতার করতে না পারায় ফাঁড়ির সব পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হলো। পাশাপাশি ওই ঘটনায় ভাসানটেক থানা পুলিশের কোনো সদস্যের দায়িত্বে অবহেলা রয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মামলার তদন্তভার এসআই জহির রায়হানকে দেয়া হয়েছে।
এদিকে ঘটনার তিন দিন পার হলেও পুলিশ মামলার এজাহারভুক্ত কোনো আসামিকে গ্রেফতার করতে পারেনি।সোমবার খোকন নামে এক আসামির বাড়িতে অভিযান চালানো হলেও তাকে গ্রেফতার করা যায়নি।
এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই মোশারফ হোসেন বাদী হয়ে আবুল, মামুন, বাবলু, টোক্কা, কানা আলম, দাঁতভাঙ্গা খোকন ও সুজনের নাম উল্লেখ ও আরো অজ্ঞাতনামা ৬ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার বাদী অভিযোগ করেছেন, মামলা দায়েরের সময় ভাসানটেক থানার পরিদর্শক (তদন্ত) গোলাম নবী কয়েকজনের নাম বাদ দিতে বলেছিলেন। পুলিশের সঙ্গে চিহ্নিত আসামিদের যোগাযোগ রয়েছে। পুলিশের অনীহার কারণেই আসামিরা গ্রেফতার হচ্ছে না।
তিনি আরো অভিযোগ করেন, তিন দিন চুপ থাকার পর সোমবার পুলিশ আসামি দাঁতভাঙ্গা খোকনের বাড়িতে লোক দেখানো অভিযান চালিয়েছে। আসামিকে না পেলেও ওই বাসা থেকে ইয়াবা সেবনের সরঞ্জাম উদ্ধার করে পুলিশ। মামলাটি ভাসানটেক থানার পরিদর্শকের (তদন্ত) তদারকিতে থাকলে সুষ্ঠু তদন্ত হবে না। এজন্য তিনি এর তদন্ত দায়িত্ব ডিবি পুলিশের কাছে দেয়ার দাবি জানান।
নিহত নাসির হোসেনের মা রিজিয়া বেগম বলেন, ছেলে হারিয়ে সবাই আতঙ্কে আছেন। আসামিদের বাড়ির কাছে বড় মেয়ের বাসা। এজন্য আসামি পক্ষের লোকজন নানাভাবে হুমকি দিচ্ছিল। আতঙ্কের মধ্যে তার মেয়ে সোমবার পুলিশের সহায়তায় বাসা ছেড়েছে।
এ ব্যাপারে ভাসানটেক থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) গোলাম নবীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
ভাসানটেক থানার ওসি হোসনে আরা বলেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতার করতে অভিযান চলছে।
বাংলাদেশ সময়: ৯:১৮:৫৭ ৩৪৫ বার পঠিত