সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০১৪
বগুড়ায় সাত মাসেও উদ্ধার হয়নি সোনালী ব্যাংকের লুট হওয়া ৩২ লাখ টাকা
Home Page » জাতীয় » বগুড়ায় সাত মাসেও উদ্ধার হয়নি সোনালী ব্যাংকের লুট হওয়া ৩২ লাখ টাকাবগুড়া ব্যুরো:বঙ্গ-নিউজ:বগুড়ায় সোনালী ব্যাংকের আদমদীঘি শাখা থেকে লুট হওয়া ৩২ লক্ষাধিক টাকা দীর্ঘ সাত মাসেও উদ্ধার করতে পারেনি গোয়েন্দা পুলিশ। ব্যাংক সংলগ্ন একটি দোকান থেকে সুড়ঙ্গ কেটে ভেতরে ঢুকে ভল্ট ভেঙে দুর্বৃত্তরা এই টাকা লুট করে। গত ৮ মার্চ বিকেলে এ বিষয়টি ব্যাংক কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় থানা ও গোয়েন্দা পুলিশ ১৫ জনকে গ্রেফতার করেও কোনো তথ্য উদঘাটন করতে পারেনি। এ কারণে লুট হওয়া একটি টাকাও উদ্ধার হয়নি। বর্তমানে মামলাটির তদন্ত কার্যক্রমও ঝিমিয়ে পড়েছে। গ্রেফতারকৃত ১৫ জনও জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।
জানা গেছে, ৬ মার্চ বৃহস্পতিবার বিকেলে কর্তৃপক্ষ ব্যাংকের ভল্টে ৩২ লাখ ৫১ হাজার টাকা রাখে। এরপর শনিবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচন কাজে ব্যাংক খোলা হয়। ওই দিন বিকেল ৫টার দিকে ভল্টের তালা ভাঙার বিষয়টি ব্যাংক কর্মকর্তাদের নজরে আসে। পরে পুলিশে খবর দেয়া হলে পুলিশ ব্যাংকের ভল্ট থেকে পাশের দোকান পর্যন্ত বিশাল সুড়ঙ্গের সন্ধান পায়। এ ঘটনায় সোনালী ব্যাংকের ডিজিএম আবদুস সামাদ থানায় মামলা করেন। পরদিন ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেয়। এ ছাড়া দায়িত্বে অবহেলার জন্য ব্যাংকের ডিজিএম ও মামলার বাদী আবদুস সামাদ, ম্যানেজার শরিফ উদ্দিন, ক্যাশিয়ার আজাহার আলীসহ ৫ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এ ছাড়া মামলাটির গুরুত্ব বিবেচনা করে ১৮ মার্চ মামলাটি জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি মিজানুর রহমানকে তদন্তের দায়িত্ব দেন বগুড়ার পুলিশ সুপার।
মামলার প্রথম তদন্তকারী কর্মকর্তা আদমদীঘি থানার ওসি (তদন্ত) জহুরুল ইসলাম কয়েক দফায় ব্যাংকের নিরাপত্তা প্রহরীসহ ১২ জনকে গ্রেফতার করেন। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়েও কোনো তথ্য উদঘাটন করতে পারেননি। মামলাটি গোয়েন্দা পুলিশে স্থানান্তর হওয়ার পর তদন্ত কর্মকর্তা আরো ৩ জনকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়েও কোনো তথ্য উদঘাটন করতে পারেননি। ফলে দিনে দিনে তদন্ত কার্যক্রম ঝিমিয়ে পড়ে। ব্যাংকের গঠিত তদন্ত কমিটিও এ ঘটনায় ব্যাংকের কোনো কর্মকর্তার সংশ্লিষ্টতা পায়নি বলে জানিয়েছেন মামলার বাদী।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি মিজানুর রহমান জানান, তদন্তে ব্যাংকের টাকা লুটের পরিকল্পনাকারীদের গ্রেফতার করা হয়েছিল। কিন্তু রিমান্ডে তারা মুখ খোলেনি এবং আদালতেও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়নি। এ কারণে লুট হওয়া টাকা উদ্ধার করা যায়নি।
তিনি আরো জানান, পরিকল্পনাকারী হিসেবে যে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল তাদের স্বীকারোক্তি আদায় করতে পারলে টাকা উদ্ধারের সম্ভাবনা ছিল।
মামলার বাদী সোনালী ব্যাংক বগুড়া অঞ্চলের ডিজিএম আবদুস সামাদ জানান, আসামিরা সবাই জামিনে রয়েছে। মামলার ধার্য তারিখে তিনি ব্যাংকের পক্ষে আদালতে খোঁজখবর রাখছেন। এ ছাড়া ব্যাংকের তদন্তে ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এ কারণে তিনি নিজে এবং ম্যানেজার ও ক্যাশিয়ারকে চাকরিতে পুনর্বহাল করা হয়েছে। অপর ২ দুই নৈশপ্রহরী গ্রেফতার হওয়ায় তারা সাময়িক বরখাস্ত অবস্থায় রয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১০:৩৮:৩৩ ৩৩৯ বার পঠিত