শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০১৪

বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বও উন্নয়নের ক্ষেত্রে চীনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে-সিপিবি

Home Page » প্রথমপাতা » বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বও উন্নয়নের ক্ষেত্রে চীনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে-সিপিবি
শনিবার, ১১ অক্টোবর ২০১৪



07_bangladesh-china-relation_purbani-hotel_10102014_0004.jpgবঙ্গ-নিউজঃ বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে চীনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম।
শুক্রবার রাজধানীর একটি হোটেলে বিএনপি সমর্থিত সংগঠন বাংলাদেশ কালচারাল একাডেমি ফাউন্ডেশন আয়োজিত এক সেমিনারে অংশ নিয়ে চীনের অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবং বাংলাদেশে তাদের বন্ধুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রশংসা করেন তিনি।চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কের বিষয় নিয়ে আয়োজিত সেমিনারে বিএনপি নেতা, বুদ্ধিজীবীরারা চীনের অগ্রগতির প্রশংসার পাশাপাশি এশিয়ার অন্যতম এই শক্তিকে বিশ্ব রাজনীতিতে আরো জোরালো ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।

চীনের অগ্রগতি রুখতে যুক্তরাষ্ট্রের নানা তৎপরতার সঙ্গে যুক্ত থাকায় ভারতের তীব্র সমালোচনা করেন বক্তারা।

গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের ৬৫তম এবং চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কের ৩৯তম বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা আকবর আলি খান।

বাংলাদেশ কালচারাল একাডেমি ফাউন্ডেশনের প্রধান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন।

সিপিবি সভাপতি সেলিম বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের ‘দ্বি-মাত্রিক’ সম্পর্কের বিষয় তুলে ধরে বলেন, “বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক অগ্রগতির জন্যই চীনের সঙ্গে সম্পর্ক রাখা গুরুত্বপূর্ণ।

“সম্পর্কের অন্য দিকটি হচ্ছে চীনকে দমানোর বৈশ্বিক রাজনীতি থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করা। এই ষড়যন্ত্র থেকে নিজেদের রক্ষা করতেই আমাদের চীনের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে হবে।”

চীনকে চাপে রাখতেই যুক্তরাষ্ট্র এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে তাদের কৌশলগত অবস্থান বদলে ফেলেছে বলে মন্তব্য করেন সেলিম।

বৃহৎ অর্থনীতির দেশটিকে ঘিরে রাখার উদ্দেশ্যেই যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গোপসাগরে নৌঘাঁটি স্থপেনের জন্য বাংলাদেশের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে বলে জানান তিনি।

এই বামপন্থী নেতা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই তৎপরতায় এরইমধ্যে যুক্ত হয়েছে ভারত।

তিনি বাংলাদেশে চীনের ইতিবাচক ভাবমূর্তির পক্ষে শক্ত জনমত গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ তার বক্তৃতায় অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে চীনের উত্থানকে ‘বিস্ময়কর’ বলে মন্তব্য করেন।

“কিন্তু বিশ্বে ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা এবং বিশ্বশান্তির জন্য তাদের এক নম্বর সামরিক শক্তি হওয়া উচিত। ভবিষ্যতে তাদেরই মূল ভূমিকা পালন করা উচিত।”

বাংলাদেশ বড় প্রতিবেশি ভারতের প্রভাব বলয় থেকে বের হতে পারছে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, “ভারসাম্যের জন্যই চীনকে শুধু আমাদের অর্থনীতির জন্যই প্রয়োজন নয়, সামরিক ক্ষেত্রেও প্রয়োজন।”

বিএনপির ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) লতিফ খান বলেন, “চীন আমাদের সঙ্গে থাকলে আর কোনো বন্ধুর দরকার নেই।”

জাতিসংঘের সহায়তায় মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসতে তিনি বেইজিংয়ের প্রতি আহ্বান জানান।

সাবেক উপদেষ্টা আকবর আলি খান বলেন, “বাংলাদেশের নিজের স্বার্থেই ভারত ও চীনের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে হবে।

“কিন্তু নিজেদের স্বার্থ সম্পর্কে আমাদের খুবই সজাগ থাকতে হবে।”

চীনের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স কু গুয়াংজু বলেন, “চীন তার অর্থনৈতিক অগ্রগতি নিয়ে গর্বিত কিন্তু আত্মতৃপ্ত নয়। আমরা এখনো উন্নয়নশীল দেশ এবং অঅমরা সব সময় বন্ধু বাংলাদেশের সঙ্গে আছি।”

তিনি জানান, চীনের প্রেসিডেন্ট তার সাম্প্রতিক ভারত সফরের সময় বলেছেন, আগামী পাঁচ বছরে চীন দক্ষিণ এশিয়ায় তার বিনিয়োগ ৩০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার পাশাপাশি ৩০ বিলিয়ন ডলার ঋণও দেবে।

এছাড়া এ অঞ্চলের প্রায় ২৫ হাজার শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেওয়া, বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কর্মসূচিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহায়তায় অর্থায়নেও চীন প্রস্তুত বলেও জানান তিনি।

“এ অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ একটি দেশ হিসেবে বাংলাদেশ অবশ্যই এসব পদক্ষেপের সুফল পাবে।”

অন্যদের মধ্যে বিএনপির সমর্থিত আইনজীবী তুহিন মালিক, সাংবাদিক সাদেক খান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষক দিলারা চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এমাজউদ্দিন আহমদ সেমিনারে বক্তব্য রাখেন।

বাংলাদেশ সময়: ৮:৫৯:২৮   ৪৪১ বার পঠিত