বৃহস্পতিবার, ৯ অক্টোবর ২০১৪
৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর সরকার দেশি-বিদেশি অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছে।
Home Page » জাতীয় » ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর সরকার দেশি-বিদেশি অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছে।বঙ্গ-নিউজ:মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা এবং বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমা কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়া সম্পন্ন হওয়ায় আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ঐকমত্যের সরকার ফুরফুরে মেজাজে আছে। এছাড়া আবদুল লতিফ সিদ্দিকী ইস্যুতে বিরোধী শিবির রাজনীতির মাঠ ঘোলা করার আগেই ব্যবস্থা গ্রহণ এবং প্রতিবেশী দেশ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক সরকারের মেজাজ ফুরফুরে থাকার আরো একটি অন্যতম কারণ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সার্বিক বিষয় নিয়ে সরকারের বেড়ে যাওয়া মনোবল কাজে লাগাতে পারলে রাজনীতির মাঠে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা আরো ব্যাপক আকার ধারণ করবে। সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলেছে, গেল ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর বর্তমান সরকার এরই মধ্যে দেশি-বিদেশি অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছে। বিশেষ করে মে মাসে ভারতে নতুন সরকারের শুভ সূচনার মধ্য দিয়ে মোদি জামানার শুরু হলে বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক কি হবে তা নিয়ে রাজনৈতিক ও কূটনেতিক মহলে ছিল নানা জল্পনা-কল্পনা। কূটনৈতিক সূত্র জানায়, এ বাস্তবতায় গত ২৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে নিউইয়র্কে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে। এ বৈঠকে মোদি তার মনোভাব স্পষ্ট করার পর গণমাধ্যমগুলো ইতিবাচক প্রতিবদেন এবং বিশ্লেষণ শুরু করে।
বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী মানবকণ্ঠকে বলেন, দুই দেশের শীর্ষ নেতার মধ্যে অত্যন্ত আন্তরিকতাপূর্ণ পরিবেশে আলোচনা হয়েছে এবং মোদি বাংলাদেশের সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে যাওয়ার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করেছেন। সূত্র মতে, এরই মধ্যে সরকারের ‘নীতিনির্ধারক’ হিসিবে পরিচিত আইসিটি (ইনফরমেশন টেকনোলজি) মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী ‘বেফাঁস’ মন্তব্য করলে সরকারি-বেসরকারি শিবিরে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া শুরু হয়। আর সরকারও বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে এর যথাযোগ্য সমাধানে উদ্যোগ নেয়।
সরকারের নীতিনির্ধারক দায়িত্বশীল ব্যক্তি বলেন, বিষয়টি নিয়ে শীর্ষ থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যন্ত সন্তুষ্ট। আর এ কারণে সরকারকে এ নিয়ে বেশ একটা বেগ পেতে হচ্ছে না। সূত্র মতে, বতর্মান সরকারের সময়ে এ প্রথম তিনটি ধর্মীয় উৎসব একসঙ্গে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ফলে এ তিন উৎসবকে ঘিরে আগে থেকেই সরকারের প্রস্তুতি ছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাসহ ঘরমুখো মানুষকে নিরাপদে বাড়ি ফেরানো। গেল সপ্তাহ থেকে শুরু হওয়া সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দুর্গাপূজার উৎসব এবং চলতি সপ্তাহে ঈদুল আজহা ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রবারণা পূর্ণিমা শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সূত্র মতে, তিন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি এবং দেশের মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে উৎসব পালন করতে পেরেছে।
সার্বিক বিষয় নিয়ে বেশ কয়েক রাজনৈতিক বিশ্লেষকর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন, পক্ষকালের মধ্যে যেসব ইস্যু ছিল সবই সরকার মোকাবিলা করতে পেরেছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়েছে সরকার এসব বিষয়ে আন্তরিক ছিল।
কূটনৈতিক সূত্র জানায়. ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক নিঃসন্দেহে ঐতিহাসিক। কারণ এতদিন বিরোধী শিবির বলে আসছিল ভারতের বিজেপি সরকার আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে ‘তেমন’ কিছু করবে না। কিন্তু বাস্তবতা হয়েছে ভিন্ন, মোদি নিজেই বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে আগ্রহী। এছাড়া বাংলাদেশের সঙ্গে অমীমাংসিত ইস্যুগুলো সমাধানেও মোদি যে আন্তরিকতা দেখানোর কথা বলেছেন তাতেও সরকারের মনোবল বেড়েছে।
বিশ্লেষকরা বলেন, অন্যদিকে নিউইয়র্ক সফরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা কর্তৃক প্রধানমন্ত্রীপুত্র সজিব ওয়াজেদ জয়ের প্রশংসা এবং জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন শেখ হাসিনা ও বর্তমান সরকারের প্রশংসা করেছেন কিছু কিছু ক্ষেত্রে। ফলে সার্বিক বিষয়ে সরকারের মেজাজ এখন ফুরফুরে হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব ও সাবেক কূটনীতিক ওয়ালিউর রহমান বলেন, কয়েকটি বিষয় স্পষ্ট হয়েছে যে, মোদি বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের কথা বলেছেন, সরকারের পাশে থাকার কথা বলেছেন, অমীমাংসিত ইস্যুগুলো সমাধানের কথা বলেছেন, যা নিঃসন্দেহে সরকারের জন্য একটি বড়ো পাওনা।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী আরো বলেছেন, শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে মোদি বলেছেন, ভারত সব সময় বাংলাদেশের পাশে থাকবে। তিস্তা চুক্তি এবং সীমান্ত প্রটোকল বাস্তবায়নের ব্যাপারে ভারত সরকার কাজ করছে বলে জানিয়েছেন মোদি। মোদি খুব শিগগির বাংলাদেশে সফরে আসতে পারেন। অন্যদিকে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর শেখ হাসিনা বাংলাদেশে যে স্থিতিশীলতা বজায় রেখেছেন তার জন্য বান কি মুন প্রশংসা করেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:০৭:২২ ৪০১ বার পঠিত