রবিবার, ৫ অক্টোবর ২০১৪
গরুর ব্যাপারীরা হতাশ!
Home Page » প্রথমপাতা » গরুর ব্যাপারীরা হতাশ!
বঙ্গ-নিউজ:নিজস্ব প্রতিবেদক:পশুর হাটে ৪০ থেকে ৮০ হাজার টাকা দামের গরু সহজেই বিক্রি হলেও, বাজারে একেবারে অবহেলিত ৪/৫ লাখ টাকা দামের বড় গরু। গাবতলী পশুরহাটের প্রবেশ পথেই শামিয়ানা টানিয়ে বড় বড় ষাঁড় ও বলদ গরু রাখা হয়েছে। বিক্রির জন্য হাটে তোলা হলেও, অবিক্রিত রয়ে গেছে বিশাল আকৃতির গরুগুলো।
১৮ থেকে ২০ মণ মাংস হবে এমন গরুর দাম হাঁকা হচ্ছে গড়ে ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা। কিন্তু গাবতলী পশুরহাটে বড় গরুর ক্রেতা নেই-ই বলা চলে। গরুগুলোর পাশে হাঁটুতে মাথাগুঁজে বসে আছেন চাপাইনবাবগঞ্জের মতিন ব্যাপারী।
ক্ষোভ প্রকাশ করে মতিন ব্যাপারী জানান, বড় গরু লিছে নাকো। দামই কইছে না। বাজারে কোনো উন্নতি নাই, পিট পিটি (পর পর) তিনবার বসান খালাম (ক্ষতি হওয়া)।
কুষ্টিয়ার শাহজাহান ব্যাপারী। তিনি ১০টি বড় গরু বাজারে তুলেছিলেন। এর মধ্যে ৬টি গরু লোকসানে বিক্রি করেছেন। বাকি ৪টি গরুর ক্রেতা পাচ্ছেন না বলেও জানান তিনি।
শাহজাহান ব্যাপারী বলেন, ১০ গরুতি ১০ লাখ নচ (লোকসান)। বড় গরুর খদ্দির (ক্রেতা) নাই। এবার ঋণের জন্য বউ-বাড়ি ব্যাচা লাগবি, নইলে লাল দালানে (জেল) উঠা লাগবি। পিটি পিট তিনবার মাইর খালাম।’
একই অবস্থা কুষ্টিয়ার মিরপুরের জামাল ব্যাপারীর। তিনি গাবতলীতে ৬০টি গরু হাটে উঠালেও তার সব গরুই অবিক্রিত রয়ে গেছে। কারণ জামাল ব্যাপারী সবক’টি গরুই বড়। প্রতিটি গরুর দাম হাঁকছেন ৪/৫ লাখ টাকা। ব্যাপারীর দাবি এসব গরু থেকে ১৮ থেকে ২০ মণ মাংস পাওয়া যাবে।
জামাল ব্যাপারী বলেন, ‘বড় গরু বউনিই (বিক্রি শুরু) হয়নি কো। ছোট গরুয়ালারা কিছু পাইছে এবার, বড় গরুয়ালারা কেউ বাচপি না নে.. পাঁচ লাখ টাকা দামের গরু দ্যাড় লাখ কচ্চে, এখন কাক কি কবো? পর পর তিনবার ঘায় (ক্ষতি) খাইলাম। গেল ঈদে এক টাকা হোক দুই টাকা হোক দাম কইছে। এবার দামই কই নাকো।’
বড় গরু বিক্রি না হওয়ার জন্য গণমাধ্যমকে দোষারোপ করছেন ব্যাপারীরা। পাবনার ঈশ্বরদীর ব্যাপারী আবু তালেব বলেন, পাঁচ লাখের গরুতি ২ লাখ কই। আর কি কবো? সরকার কি আমাদের ক্ষতি দিবি। পত্রিকায় কই বড় গরুতি নাকি
ইনডাকশন (ইনজেকশন) দেয়া। সংবাদিকরাই আমাদের শ্যাষ করে দিলো। ক্যাবা করে জীবন বাঁচে। লচের (ক্ষতি) কতা (কথা) কাকে কবো।’
নগরীর পশুরহাট ঘুরে দেখা গেছে শুক্রবার ও শনিবার গরুর দাম কিছুটা ভালো গেলেও, রোববার একে বারে ছোট গরুর বাজারও পড়ে গেছে। ব্যাপারীরা জানান ক্রেতার তুলনায় গরুর সরবরাহ বেশি হওয়াতেই গরুর দাম কমে গেছে।
রেজাউল ব্যাপারী বলেন, বড় গরু গতবার ঘুরি নিয়া গেচি। আবারও একই গরু হাটে নিয়া আইচি। এবারও বাড়িত নিয়া লাগবে। গতবারের দামও কয় না। আমি যে সম (সারা) বছর গুইড়ি (ধানের গুঁড়া), চাল ও ভাত খাওয়ালাম এর দাম দিবি কে? দ্যাশে (কুষ্টিয়া) ৫ লাখ কইছে, গাবতলীতে দামই বলে নাকো।’
বাংলাদেশ সময়: ২২:০৫:৪১ ২৯৫৬ বার পঠিত