শনিবার, ৪ অক্টোবর ২০১৪

ওপারে যায় সোনার বিস্কুট এপারে আসে গরু

Home Page » আজকের সকল পত্রিকা » ওপারে যায় সোনার বিস্কুট এপারে আসে গরু
শনিবার, ৪ অক্টোবর ২০১৪



image_76013_0.jpgডেস্ক:সোনা যাচ্ছে, আসছে গরু। কোরবানির ঈদ সামনে রেখে দেশের বিভিন্ন সীমান্তের চোরা পথে আসা হাজার হাজার ভারতীয় গরুর মূল্য এখন সোনার বিস্কুটে পরিশোধ হচ্ছে। কাস্টমস সূত্র জানায়, সোনা চোরাকারবারিরা কোরবানির ঈদ সামনে রেখে খুবই তৎপর। গত এক মাসে চোরা পথে দেশের বিমানবন্দর হয়ে সোনার চালান এসেছে চোরাই গরু ব্যবসাকে কেন্দ্র করে। গত এক সপ্তাহে সীমান্ত এলাকাগুলো থেকে বিজিবি অন্তত ১০ কেজি সোনার বার আটক করেছে। বিজিবি জানিয়েছে, এসব সোনা চোরাই গরুর বিনিময় মূল্য হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছিল।সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এপার-ওপারে চোরাই গরুর ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছে এখন সোনা চোরাকারবারি চক্র। প্রতিদিন শতাধিক পয়েন্টে কাঁটাতারের বেড়ার ওপর দিয়ে কাঠের তক্তা বসিয়ে তারা শত শত ভারতীয় গরু পাচার করে আনছে। আর বাংলাদেশ থেকে গরুর মূল্য বাবদ দেওয়া হচ্ছে মনকে মন সোনা।বাংলাদেশের গরু ব্যবসায়ী ও অন্য সূত্রগুলো বলছে, গরুর ব্যবসায় সোনা পাচারকারীরা ঢুকে পড়ায় চোরাই পথে আসা গরুর বিনিময় মূল্য এখন আর নগদ টাকায় পরিশোধ করা যাচ্ছে না। টাকার বদলে তারা সোনা দাবি করছেন। তাই বাংলাদেশের গরু ব্যবসায়ীরা বাধ্য হয়েই সোনার বিস্কুট দিয়ে মূল্য শোধ করছেন।সূত্র জানায়, বাংলাদেশ থেকে কাঁচা টাকার বদলে গরুর দাম সোনার বিস্কুটে রফা হচ্ছে, এতে ভারতের বাজারে বাড়তি লাভের রাস্তা খুলে গেছে। বাংলাদেশে সোনার দাম ভারতের চেয়ে প্রতি কেজিতে ৪ লাখ টাকা কম। তা ছাড়া আমদানি শুল্ক ফাঁকি দিয়ে চোরা পথে ১ কেজি সোনা ভারতে নিলে বাড়তি লাভ আরও প্রায় ৪ লাখ টাকা।সূত্রমতে, বিএসএফের চোখে ধুলা দিয়ে লাখ লাখ টাকা নিয়ে যাতায়াতে যথেষ্ট সমস্যা হয়। ধরপাকড়ও অনেক বেশি। নগদ টাকার বদলে ছোট ছোট সোনার বিস্কুট বহন করা সে তুলনায় অনেক সহজ।
সূত্র জানায়, একটা গরু বাংলাদেশে এনে যে টাকায় বিক্রি হয়, সে টাকার সোনা চোরা পথে ভারতে বিক্রি করতে পারলে দুই দফায় লাভ। একে তো ভারতে সোনার দাম বেশি। দ্বিতীয়ত, আমদানি শুল্কও ফাঁকি দেওয়া হচ্ছে। এ দুই কারণে ভারতীয় গরু ব্যবসায়ীরা সোনার বিস্কুট ছাড়া গরু বিক্রি করছেন না। অতিরিক্ত মুনাফার কারণে সোনা পাচারকারীদের অনেকেই এখন সীমান্তে গরু পাচারে লিপ্ত। জানা গেছে, কোরবানির ঈদ টার্গেট করে সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশের হাটগুলোয় প্রতিদিনই হাজার হাজার ভারতীয় গরু ঢুকছে। এসব গরু দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাড়ি জমাচ্ছে। ভারতীয় গরু চোরা পথে দেশে ঢোকায় সরকার লাখ লাখ টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। দেশ থেকেও যাচ্ছে সোনার চালান।
সীমান্ত এলাকার একাধিক সূত্র জানিয়েছে, রংপুর অঞ্চলের কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী, নাগেশ্বরী, কচাকাটা, ফুলবাড়ী, রৌমারী, রাজীবপুর, চিলমারী; লালমনিরহাটের পাটগ্রাম, হাতিবান্ধা; নীলফামারীর ডিমলা; ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, দিনাজপুর, যশোর, বেনাপোল, মেহেরপুর, কুমিল্লা, সিলেট জেলার শতাধিক সীমান্ত দিয়ে আসছে চোরাই গরু। সূত্রটি জানিয়েছে, এসব স্পটে প্রতিদিন ভারতের কাঁটাতারের বেড়ার ওপর দিয়ে কাঠের তক্তা বসিয়ে চোরাকারবারিরা শত শত ভারতীয় গরু পাচার করে আনছে।

বাংলাদেশ সময়: ১০:২৬:০০   ৩৪৭ বার পঠিত