বৃহস্পতিবার, ২ অক্টোবর ২০১৪
গোদাগাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নতুন ভবনে ‘ভয়ঙ্কর’ ফাটল
Home Page » সারাদেশ » গোদাগাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নতুন ভবনে ‘ভয়ঙ্কর’ ফাটলবঙ্গ-নিউজঃশরিফুল ইসলাম গোদাগাড়ী রাজশাহীঃরাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নবনির্মিত ভবনে ‘ভয়ঙ্কর’ আকারে ফাটল দেখা দিয়েছে। চার কোটি ২৩ লাখ টাকা বাজেটের দ্বিতল বিশিষ্ঠ ভবনটির নিচতলার প্রতিটি কক্ষ এবং নিচতলা থেকে দোতলা পর্যন্ত সিঁড়ির বিভিন্ন স্থানে এসব ফাটল দেখা দিয়েছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও চিকিৎসকরা বলছেন, মাত্র এক মাস আগে কার্যক্রম শুরু হওয়া এই ভবনটিতে এখন অফিস করতেই গা শিউরে উঠছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার প্রেমতলীতে অবস্থিত ৩০ শয্যা বিশিষ্ঠ এই হাসপাতালটিকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করতে ২০১০-১১ অর্থবছরে চার কোটি ২৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ভবনটি নির্মাণ করে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। ২০১১ সালের ২৩ মার্চ ভবনটির উদ্বোধন করা হলেও মাত্র এক মাস আগে শুধুমাত্র ভবনটির নিচতলায় কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে ভবনের নিচতলার ১২টি কক্ষ ও দোতলার সিঁড়ি থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্থানে ভয়ঙ্কর আকারের ফাটল দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, ওই সময় ভবনটি নির্মাণের কার্যাদেশ পান রাজশাহীর মেসার্স সাদিয়া ট্রেডার্স নামের একটি ঠিাকাদারী প্রতিষ্ঠান। অভিযোগ রয়েছে, বিশাল বাজেটের এই ভবনটি নির্মাণের সময় তৎকালীন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা. তৌফিক উদ্দীন মো. বেলাল ও রাজশাহীর স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী এএসএম সাইদুল আলমকে ‘ম্যানেজ’ করে ঠিকাদার রিপন হাজি অত্যন্ত নিন্মমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করে ভবনটি নির্মাণ করেন। এ কারণে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার তিন বছরের মাথায় ভবনটির বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কয়েকজন কর্মচারীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভবনটি নির্মাণের সময় প্রথমে তদারকির দায়িত্বে ছিলেন মাহফুজুল ইসলাম নামের একজন প্রকৌশলী। নিন্মমানের কাজে বাঁধা দেওয়ায় ওই সময় ঠিকাদারের লোকজন তাকে লাঞ্ছিত করে সাইট থেকে বিতাড়িত করেন। এরপর স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী এএসএম সাইদুল আলম নিজেই কাজটি তদরকি করেন।
এই ভবনের নিচতলার একটি কক্ষে অফিস করেন মহিলা স্বাস্থ্য পরিদর্শিকা মোকসেদা খাতুন। তিনি জানান, মাত্র এক মাস আগে তাঁরা ভবনটির নিচতলায় কার্যক্রম শুরু করেছেন। হাসপাতালের বহির্বিভাগ ছাড়াও কয়েকটি বিভাগের কার্যক্রম চলছে এখানে। তিনি বলেন, ‘প্রধান ফটকের তালা খুলে প্রথমেই ভবনের ফাটলগুলো আমাদের নজরে এসেছে। এত টাকার নতুন এই ভবনের বড় বড় ফাটলের মধ্যে প্রতিদিন অফিস করতে শরীর শিউরে ওঠে।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা. মোহাম্মদ হোসেন আলী বলেন, ভবন নির্মাণের পর তিনি এখানে যোগদান করেছেন। কাজের ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না। তবে কাজটি ঠিকমতো হচ্ছে কিনা তা দেখে নেয়ার দায়িত্ব ছিলো তৎকালীন কর্মকর্তা ও দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলীর। তিনি আরো বলেন, ভবনের ফাটলের ব্যাপারে স্থানীয় সাংসদ ও সিভিল সার্জন জানেন। এ বিষয়ে আপাতত: তাঁর কিছু করণীয় নেই।
বাংলাদেশ সময়: ১:০১:২২ ৩৩০ বার পঠিত