শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪
তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতা দোষী সাব্যস্ত
Home Page » প্রথমপাতা » তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতা দোষী সাব্যস্তবঙ্গ-নিউজ ডট কম:বেঙ্গালুরু: হিসাব বহির্ভূত সম্পত্তি মামলায় অবশেষে দোষী সাব্যস্ত হলেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতা। শনিবার বেলা সওয়া দু’টো নাগাদ তাকে দোষী সাব্যস্ত করল বেঙ্গালুরুর বিশেষ আদালত।দীর্ঘ ১৮ বছর মামলা চলার পরে দোষী সাব্যস্ত হলেন তিনি। এই রায় তার রাজনৈতিক জীবনে বড়সড় এক ধাক্কা। তামিলনাড়ুর রাজনীতিতে এই রায়ের আশু এবং সুদুরপ্রসারী ফল কী হবে সে দিকে তাকিয়ে গোটা দেশ।এ দিন সকালেই বিশেষ বিমানে করে বেঙ্গালুরু পৌঁছfন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতা। তার সঙ্গে ছিলেন মামলার অন্য অভিযুক্ত শশীকলা নটরাজন এবং লাভারাসি। ৬৬ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকার হিসাব বহির্ভূত মামলায় অপর অভিযুক্ত শশীকলার ভাইপো এবং তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রীর পালিত পুত্র সুধাকরণ। রায় ঘোষণার আগে পারাপ্পান্না আগ্রাহারা জেলের এক কিলোমিটার এলাকাকে ছোটখাটো দুর্গে পরিণত করা হয়েছে। ১৮ বছরের পুরনো এই মামলার রায় ঘোষণা করা হলো এখানকারই বিশেষ আদালতে। রায় ঘোষণা করেন বিচারপতি জন মাইকেল ডি’কুনহা। মুখ্যমন্ত্রীর ‘ভবিষ্যত্’ জানতে প্রচুর আম্মা সমর্থক জড়ো হন এই এক কিলোমিটার সীমানার বাইরে। আগেই বেঙ্গালুরু পৌঁছে যান তামিল মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্য। কোনো রকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সামলাতে মোতায়েন করা হয়েছে প্রচুর পুলিশ ও র্যাফ।
১৯৯১ সালে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী হন জয়া। কিন্তু পাঁচ বছর বাদে তাকে সরিয়ে ডিএমকে নেতা এম করুণানিধি ক্ষমতায় ফিরতেই জয়ললিতার বিরুদ্ধে হিসাব বহির্ভূত সম্পত্তির মামলা দায়ের হয়। জয়ললিতার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ২৮ কেজি সোনা, ৮৮০ কেজি রুপো, সাড়ে দশ হাজার শাড়ি, ৭৫০ জোড়া জুতো, ৯১টি দামি ঘড়ি ও আরও অনেক মূল্যবান জিনিস আটক করে আয়কর দফতর। অভিযোগ প্রমাণে আয়কর দফতর তথা সরকার পক্ষ মোট ২৫৯ জন সাক্ষ্যকে হাজির করিয়েছেন এ পর্যন্ত। এর পাল্টা জয়ললিতার তরফে পেশ করা হয়েছে ৯৯ জন সাক্ষীকে। মামলায় অভিযুক্ত কিছু বেসরকারি সংস্থা বারবার দিন পিছনোর আর্জি জানিয়েও শ্লথ করেছেন মামলার গতি। পরে এ ধরনের পাঁচটি সংস্থার বিরুদ্ধে জরিমানা ধার্য করে আদালত। ২০০৩ সালে এক ডিএমকে নেতার আর্জিতে নিরপেক্ষ বিচারের স্বার্থে মামলাটি চেন্নাই থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় প্রতিবেশী রাজ্যের বেঙ্গালুরুতে।
১৪ জুন ১৯৯৬: জয়ললিতার বিরুদ্ধে সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর মামলা
২১ জুন ১৯৯৬: জয়ললিতার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরুর নির্দেশ
১৮ জুন ১৯৯৬: হিসাব-বহির্ভূত সম্পত্তি থাকার অভিযোগে জয়ললিতার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়েরের নির্দেশ তদানীন্তন ডিএমকে সরকারের
৪ জুন ১৯৯৭: ৬৬ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকার হিসাব-বহির্ভূত সম্পত্তি থাকার অভিযোগে জয়ললিতার বিরুদ্ধে চার্জশিট গঠন
২১ অক্টোবর ১৯৯৭: জয়ললিতা ছাড়া ভি কে শশীকলা, ভি এন সুধাকরণ এবং জে লাভারাসির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন
মার্চ ২০০২: তৃতীয় বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হলেন জয়ললিতা
নভেম্বর ২০০২-ফেব্রুয়ারি ২০০৩: বয়ান বদলের জন্য ৭৬ জন সাক্ষীকে আদালতের তলব
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০০৩: নিরপেক্ষ বিচারের স্বার্থে চেন্নাই থেকে মামলা সরানোর আর্জি ডিএমকে নেতা আনবাঝাগানের। মামলা দায়ের সুপ্রিম কোর্টে
১৮ নভেম্বর ২০০৩: চেন্নাই থেকে বেঙ্গালুরুর বিশেষ আদালতে মামলা সরালো সুপ্রিম কোর্ট
জানুয়ারি ২০১০: বহু বার পিছনোর পর সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপে ফের শুরু মামলা
ডিসেম্বর ২০১০-ফেব্রুয়ারি ২০১১: সাক্ষীদের ফের আদালতে ডাকা হল
১৬ মে ২০১১: ফের ক্ষমতায় এআইএডিএমকে। মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে জয়ললিতা
২০ অক্টোবর-২৩ নভেম্বর ২০১১: বিশেষ আদালতে চার বার সাক্ষ্য জয়ললিতার
১৩ অগস্ট ২০১২: বিশেষ সরকারি আইনজীবী হিসাবে জি ভবানী সিংহের নিয়োগ
২৩ অগস্ট ২০১২: ভবানী সিংহের নিয়োগে আপত্তি তুলে হাইকোর্টে ডিএমকে নেতা আনবাঝাগান
২৬ অগস্ট ২০১২: বিশেষ সরকারি আইনজীবীর পদ থেকে জি ভবানী সিংহকে সরিয়ে দিল কর্নাটক সরকার
সেপ্টেম্বর ২০১২: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ভবানী সিংহের নিয়োগ বহাল
২৯ অক্টোবর ২০১২: হাইকোর্টের নির্দেশে বিশেষ আদালতের বিচারপতি নিযুক্ত হলেন জন মাইকেল ডি’কুনহা
২৮ আগস্ট ২০১৪: শুনানি শেষ। ২০ সেপ্টেম্বর রায় দেওয়ার কথা ঘোষণা করল শীর্ষ আদালত
১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪: নিরাপত্তার স্বার্থে রায় ঘোষণার স্থান পরিবর্তন করার অনুরোধ জয়ললিতার
১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪: জয়ললিতার আর্জি মেনে বেঙ্গালুরু সেন্ট্রাল জেলের কাছে সরানো হলো রায় ঘোষণার জায়গা। নথি সরানোর জন্য ৭দিন পিছনো হল রায় ঘোষণা।
২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪: দোষী সাব্যস্ত হলেন জয়ললিতা
বাংলাদেশ সময়: ১৭:০৫:১৫ ৩১৩ বার পঠিত