মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৪

হংকংয়ের কাছে বাংলাদেশের পরাজয়

Home Page » খেলা » হংকংয়ের কাছে বাংলাদেশের পরাজয়
মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৪



bafufe2.jpgবঙ্গ-নিউজ:প্রথমার্ধ গোলশূন্য। দ্বিতীয়ার্ধে একটা গোল করে সেটি ধরে রাখতে পারলেই লক্ষ্যপূরণ। প্রথমবারের মতো এশিয়ান গেমস ফুটবলে দ্বিতীয় রাউন্ডের হাতছানি।বাফুফে ভবনে সবাই আশায় বুক বাঁধলেন। আগের ম্যাচটা অনলাইন চ্যানেল বি ইন-এ দেখানোয় এদিন বাফুফে ভবনে বড় পর্দায় খেলা দেখার আয়োজন। কিন্তু খেলা দেখায়নি ওই চ্যানেলটি। অগত্যা সবার চোখ ওয়েবসাইটে।

উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বাড়ছে। কী হলো…বাংলাদেশ গোল পেল? কিন্তু ৫৪ মিনিটে উল্টো গোল হজম। ৭৪ মিনিটে আরেকটি। ২-০ পিছিয়ে পড়ে ৭৭ মিনিটে একটা গোল শোধ। কিন্তু এশিয়াডের শেষ ষোলোতে পা রাখার জন্য দরকার ছিল আরও ২টি গোল দেওয়া। বাকি ১৩ মিনিটে সেটি সম্ভব হলো না। হংকংয়ের কাছে ২-১ গোলে হার বাংলাদেশ দলের এশিয়ান গেমস অভিযানে ইতি টেনে দিল গ্রুপপর্বেই।

কিছু বিদায়ে হতাশা কম থাকে। এটিও তেমন এক বিদায়। প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানকে ১-০ গোলে হারানোর তৃপ্তি সঙ্গে নিয়েই আগামীকাল দেশে ফিরবে বাংলাদেশ দল। এশিয়াডে এই জয়টি যে এসেছে দীর্ঘ ২৮ বছর পর। দ্বিতীয় ম্যাচে শক্তিশালী উজ‌বেকিস্তানের কাছে ৩-০ গোলে হার। শেষ ম্যাচে স্বপ্নপূরণ না হলেও হংকংয়ের সঙ্গে হারের ব্যবধান অসহনীয় নয়।

ইনচন থেকে অধিনায়ক মামুনুল ইসলাম অবশ্য বলছেন, ‘হংকংয়ের সঙ্গেই আমরা প্রতিযোগিতার সেরা ম্যাচ খেলেছি। আমাদের ৩-৪ গোলে জেতা উচিত ছিল ম্যাচটা। আগের দুই ম্যাচের চেয়ে অনেক ভালো খেলেও আমরা হারলাম স্রেফ গোল করার ব্যর্থতায়।’

হংকংয়ের সঙ্গে ৩-৪ গোলে জেতা উচিত ছিল বাংলাদেশের! অনেকের কাছেই ধাঁধা মনে হতে পারে। কিন্তু মামুনুলের কাছে তা নয়, ‘জামাল, জাহিদ, ওয়াহেদ সহজ সুযোগ নষ্ট করেছে। এগুলো কাজে লাগাতে পারলে অবধারিতভাবে আমরাই জিতলাম। বল পজেশনে আমরা অনেক এগিয়ে ছিলাম।’

তবে অফিশিয়াল পরিসংখ্যান বলছে, বল পজেশনে এগিয়ে ছিল হংকংই (৫৫-৪৫)। বাংলাদেশ গোলে শট নিয়েছে ১০টি, যার তিনটি ছিল পোস্টে। প্রতিপক্ষের নয় শটের আটটিই পোস্টে। যার একটি থেকে প্রথম গোল পায় হংকং, যদিও সেটির দায় বাংলাদেশের রক্ষণের। মার্কিং ঠিক ছিল না। হংকংয়ের দ্বিতীয় গোলটি হেডে।

বাংলাদেশের একমাত্র গোলের উৎস মামুনুল-জাহিদের গড়া আক্রমণ। জাহিদের শট হংকং গোলরক্ষকের হাত ফসকে বেরিয়ে এলে সজীব তীব্র শটে করেন ২-১।

ম্যাচ শেষে বাংলাদেশ দলের ফুটবলাররা পরাজয়ের কষ্ট চেপে রাখতে পারেননি। মাঠে কেঁদেই ফেলেছেন অনেকে। ধরা গলায় মামুনুল জানালেন, ‘শেষ পর্যন্ত ড্র করলেও সান্ত্বনা পেত সবাই। কিন্তু আমরা অনেক সুযোগ নষ্ট করে ফেলেছি। ম্যাচ শেষে অনেকেই চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি।’

মামুনুল নিজে এই নিয়ে তিনবার অধিনায়ক হিসেবে পুড়লেন আশাভঙ্গের বেদনায়। শেখ জামালের জার্সিতে কলকাতায় আইএফএ শিল্ডের ফাইনাল, ঘরোয়া শেখ রাসেলের হয়ে জিততে পারেনি চতুর্থ ট্রফি। এ নিয়ে আক্ষেপ করতে করতে যোগ করেন, ‘গোটা দলই ভালো খেলেছে। বিশেষ করে জাহিদের খেলা চোখ কেড়েছে সবার। কোচ (ডি ক্রুইফ) আমাদের অনেক প্রশংসা করেছেন। আমরা দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোর চেয়ে এশিয়াডে ভালো করেছি।’

দাবিটা ঠিকই আছে। ভারত, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, নেপাল সব ম্যাচই হেরেছে; এমনকি গোল পায়নি একটিও। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে আর মালদ্বীপই শুধু একটি ম্যাচ জিতেছে। সেটিও দুর্বল (র‍্যাঙ্কিং ১৯৩ নম্বর) তিমুর-লেস্তের বিপক্ষে। সামগ্রিকভাবে অন্যদের চেয়ে বাংলাদেশই এগিয়ে। ভালোই তো! কিন্তু এই তৃপ্তিতেই কি বুঁদ হয়ে থাকার সুযোগ আছে বাংলাদেশের ফুটবলের?

বাংলাদেশ সময়: ১৩:০৩:৫৬   ৪২০ বার পঠিত