সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৪

খালেদার অনুপস্থিতিতেই দুর্নীতি মামলায় সাক্ষ্য শুরু

Home Page » জাতীয় » খালেদার অনুপস্থিতিতেই দুর্নীতি মামলায় সাক্ষ্য শুরু
সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৪



559c5e881ce50ffb7c63ba0462fbb8e0_m3.jpgবঙ্গনিউজ-সোয়া পাঁচ কোটি টাকা আত্মসাতের দুই মামলায় বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার সময়ের আবেদন নাকচ করে তার অনুপস্থিতিতেই এক মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করেছে আদালত।এই প্রেক্ষাপটে বিচারকের ওপর অনাস্থা জানিয়ে একটি আবেদন করেছেন খালেদার আইনজীবীরা।এ দুটি মামলার বাদী দুদকের উপ-পরিচালক হারুন অর রশিদের আংশিক জবানবন্দি শুনে সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ১৩ অক্টোবর পরবর্তী দিন রেখেছেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ বাসুদেব রায়।রাজধানীর বকশীবাজারে আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে ঢাকা তৃতীয় মহানগর বিশেষ জজ আদালতের অস্থায়ী এজলাসে জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট ও জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার এই বিচার চলছে।বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের হরতালের মধ্যে সোমবার আদালতে না এসে আইনজীবীদের মাধ্যমে সাক্ষ্যগ্রহণ পেছানোর জন্য আবারও আবেদন করেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা।আদালতে আসতে না পারায় তিনি এদিন ব্যক্তিগত হাজিরা মওকুফেরও আবেদন করেন বলে খালেদার অন্যতম আইনজীবী তাহেরুল ইসলাম তৌহিদ জানান।শুনানি শেষে বিচারক সময়ের আবেদন খারিজ করে দেন। তিনি সোমবারই সাক্ষ্য শুরু করতে চাইলে হট্টগোল শুরু করেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা। দুদকের আইনজীবী মোশারফ হোসেন কাজল এ সময় প্রয়োজনে খালেদাকে পরাতক দেখিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর আবেদন জানান।পরে আদালত খালেদার ব্যক্তিগত হাজিরা মওকুফের আবেদন মঞ্জুর করে সাক্ষ্য শুরুর নির্দেশ দেন। দুদকের উপ-পরিচালক হারুন অর রশিদ জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট মামলার প্রাথমিক ইতিহাস বলতে শুরু করার পর কয়েক মিনিট তার জবানবন্দি শুনে খাস কামরায় চলে যান বিচারক। পরে সাক্ষ্যগ্রহণের নতুন তারিখ জানিয়ে দেয়া হয়।তাহেরুল ইসলাম তৌহিদ জানান, তারা বিচারকের ওপর অনাস্থা জানিয়ে একটি আবেদন করেছেন। তবে এ বিষয়ে কোনো আদেশ পাওয়া যায়নি।সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা এ দুটি মামলায় গত ১৯ মার্চ অভিযোগ গঠন করে আদালত।এর মধ্যে এতিমখানা ট্রাস্ট মামলায় খালেদা ও তার বড় ছেলে তারেক রহমানসহ ছয়জন এবং জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার সঙ্গে আরো তিনজন আসামি হিসাবে রয়েছেন।এ দুই মামলায় অভিযোগ গঠনকারী বিচারকের নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আপিল বিভাগে গেলেও তা খারিজ হয়ে যায়।অভিযোগ গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করেও খালেদা দুটি রিভিশন আবেদন করেছিলেন, যেগুলো হাই কোর্টে খারিজ হয়। হাই কোর্টের ওই আদেশের বিরুদ্ধে করা খালেদার আবেদন বর্তমানে আপিল বিভাগে বিচারাধীন।

মামলা বৃত্তান্ত

২০১১ সালের ৮ অগাস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ চার জনের বিরুদ্ধে জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা দায়ের করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক হারুনুর রশিদ।তেজগাঁও থানার এ মামলায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ আনা হয় আসামিদের বিরুদ্ধে।২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি খালেদা জিয়াসহ চারজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। এ মামলার অপর আসামিরা হলেন- খালেদার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী,হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডব্লিউটিএর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালকজিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।এদের মধ্যে হারিছ চৌধুরী মামলার শুরু হতেই পলাতক। তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও রয়েছে। খালেদাসহ বাকি দুই আসামি জামিনে রয়েছেন।জিয়া এতিমখানা ট্রাস্টে অনিয়মের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় অন্য মামলাটি দায়ের করে।এতিমদের সহায়তার জন্য একটি বিদেশি ব্যাংক থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয় এ মামলায়।দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক হারুনুর রশিদ ২০১০ সালের ৫ অগাস্ট বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া, ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে এ মামলায় অভিযোগপত্র দেন।মামলার অপর আসামিরা হলেন- মাগুরার সাবেক সাংসদ কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী এবং প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।তারেক রহমান উচ্চ আদালতের জামিনে গত ছয় বছর ধরে বিদেশে অবস্থান করছেন। সালিমুল হক কামাল ও শরফুদ্দিন আছেন জামিনে। বাকি দুজন পলাতক।গত ১৯ মার্চ বিএনপি চেয়ারপারসনের উপস্থিতিতে ‘জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট’ ও ‘জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট’ দুর্নীতি মামলায় অভিযোগ গঠনের পর তার বৈধতা ও অভিযোগ গঠনকারী বিচারকের নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে যান খালেদা।সেখানে তার আবেদন খারিজ হওয়ার পর বিষয়টি আপিল বিভাগে নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে।এ দুই মামলা হওয়ার পর তা বাতিল চেয়েও হাই কোর্টে গিয়েছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন। তার আবেদন খারিজ হওয়ার পর তা আপিল বিভাগে শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে

বাংলাদেশ সময়: ১৬:০৯:৩৩   ৩৬৭ বার পঠিত