শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৪
কানেক্টিভিটির জন্য বাংলাদেশকে খুলে দেয়া প্রয়োজন : গওহর রিজভী
Home Page » জাতীয় » কানেক্টিভিটির জন্য বাংলাদেশকে খুলে দেয়া প্রয়োজন : গওহর রিজভীবঙ্গ-নিউজ-কানেক্টিভিটির জন্য বাংলাদেশকে খুলে দেয়া প্রয়োজন মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী বলেছেন, হাসিনা সরকারের লক্ষ্য বাংলাদেশকে কানেক্টিভিটির কেন্দ্র হিসাবে প্রতিষ্ঠা করা। এজন্য এখন জাতীয় ঐকমত্য গঠিত হয়েছে, সব বিতর্কের অবসান হয়েছে। এখন যাত্রা শুরুর পালা। আর এই দিক থেকে বিসিআইএম-ইসি (বাংলাদেশ-চীন-ভারত-মিয়ানমার অর্থনৈতিক করিডোর) গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, এক হিসাবে বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়নে ১৪ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন। এ অর্থ শুধুমাত্র সরকারের পক্ষে জোগান দেয়া সম্ভব নয়। অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগের জন্য তাই পুরো অঞ্চলের জন্য বাংলাদেশকে খুলে দেয়া প্রয়োজন।
আজ রাজধানীর লেইক শোর হোটেলে বিসিআইএম-ইসি ও মেরিটাইম সিল্ক রুটের ওপর আয়োজিত এক সেমিনারে গওহর রিজভী প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছিলেন। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত মিও মিন্ট থান, চীনের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত চু কোয়াংজু এবং ভারতের ডিফেন্স অ্যাটাসে ব্রিগেডিয়ার পি সি থিমাইয়া। সেন্টার ফর ইস্ট এশিয়া ফাউন্ডেশন (সিইএএফ) এই সেমিনারের আয়োজন করে।
বিসিআইএম সরকারের অগ্রাধিকারে রয়েছে উল্লেখ করে গওহর রিজভী বলেন, চীন ও ভারত উভয়ের সাথে বাংলাদেশের চমৎকার সম্পর্ক রয়েছে। এ দুটি দেশ আবার বাংলাদেশকে একে অন্যের সাথে ভালো সম্পর্ক রাখতে উৎসাহিত করে। অন্যদিকে মিয়ানমারের সাথে সম্পর্কটি কেবল রোহিঙ্গা ইস্যুতে সীমাবদ্ধ রাখলে চলবে না। মিয়ানমার ও বাংলাদেশ ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী হওয়া সত্ত্বেও আমরা একে অন্যের সম্পর্কে কম জানি। এটা দু:খজনক। আমরা মিয়ানমারের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রামের সাথে চীনের কুনমিংয়ের সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করতে চাই।
তিনি বলেন, সমুদ্রসীমার ইস্যু সমাধান হওয়ার পর এখন ভারত ও মিয়ানমারের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যেতে কোনো সমস্যা নেই।
রিজভী বলেন, কানেক্টিভিটির অপার সম্ভাবনা রয়েছে। এটা কেবল সড়ক, রেল বা নদী পথের যোগাযোগ নয়, বিদ্যুৎ ও জ্বালানী খাতের সহযোগিতাও এতে অন্তর্ভূক্ত। এ অঞ্চলে জলবিদ্যুতের যে সম্ভাবনা, তা আঞ্চলিক সহযোগিতা ছাড়া কাজে লাগানোর উপায় নেই। দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার আওতায় বাংলাদেশ ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ভারত থেকে আমদানি করছে। আরো ৫০০ মেগাওয়াট আমদানির প্রস্তাব দিয়েছে। ভুটানে ২৫ হাজার মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। বিনিয়োগের মাধ্যমে ভারত দেশটি থেকে ১০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির জন্য চুক্তিবদ্ধ। বিনিয়োগের মাধ্যমেই ভুটান থেকে বাকি সম্ভাবনাময় জলবিদ্যুত বাংলাদেশে আমদানি করা যেতে পারে। জলবিদ্যুতের ক্ষেত্রে এ অঞ্চলের অপর সম্ভাবনাময় দেশ নেপাল, যাদের উৎপাদন এখনো এক হাজার মেগাওয়াট পার হয়নি।
বিসিআইএমের প্রতি মিয়ানমারের আগ্রহের কথা তুলে ধরে মিও মিন্ট থান বলেন, অবকাঠামো উন্নয়ন, বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও জনগণের মধ্যে সম্পৃক্ততার লক্ষ্যকে সামনে রেখে বিসিআইএম গঠিত। সাম্প্রতিক সময়ে সরকারি পর্যায়ে বিসিআইএমের ধারণা এগিয়ে নেবার কার্যক্রম জোরদার হয়েছে এবং তা নতুন মাত্রা পেয়েছে। মেরিটাইম সিল্করুট বিসিআইএমের সম্পূরক হতে পারে।
চীনের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত বলেন, গত বছর চীনের প্রেসিডেন্টের ভারত সফরকালে বিসিআইএম নিয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয় হয়। এর পর থেকে অগ্রগতি ভালোই। চলতি বছর বাংলাদেশে বিসিআইএমের কারিগরি পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। আগামী বছরের মধ্যে এর একটি রূপরেখা দাড় করানো সম্ভব হবে। এর পর থেকে বিসিআইএমের আওতায় চারদেশীয় সহযোগিতা দৃশ্যমান হবে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সিইএএফের নির্বাহী পরিচালক নাসিম মাহমুদ। ধারণাপত্র উত্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলাপমেন্ট স্টাডিসের অধ্যাপক ড. রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর ও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটিজিক স্টাডিসের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. এম জসিম উদ্দিন।
বাংলাদেশ সময়: ২২:১৯:৪৯ ২৬৭ বার পঠিত