বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪
ষোড়শ সংশোধনী বিল পাস হচ্ছে আজ
Home Page » জাতীয় » ষোড়শ সংশোধনী বিল পাস হচ্ছে আজনিউজ ডেস্ক, বঙ্গ-নিউজ ডট কম: সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বিল পাস হচ্ছে বুধবারেই। এর মধ্য দিয়ে বিচারপতিদের অপসারন ক্ষমতা ফিরে পাচ্ছে সংসদ। আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে কথা বলে এবং জাতীয় সংসদের আইন শাখা থেকে বিলটি পাসের বিষয়ে জানা গেছে।
বহুল আলোচিত এ বিলটি গত ৭ সেপ্টেম্বর সংসদে উত্থাপন করা হয়। এরপর এটিকে আরও যাচাই বাছাই করার জন্য নিয়ম অনুযায়ী পাঠানো হয় আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটিতে। কমিটির হাতে বিলটি যাওয়ার পরে তারা কয়েক দফা এ নিয়ে বৈঠক করেন। সবশেষ গত ১৪ সেপ্টেম্বর কমিটির সভাপতি সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বিলটি সংসদে উত্থাপন করেন। এর আগে গত ১৮ আগস্ট বিলটি মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পায়।
বুধবারেই বিলটি পাস হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন, ‘বুধবারেই পাস হওয়ার কথা। পাস হবেও ইনশাআল্লাহ।’
আগামী তিন মাসের মধ্যে এ বিলটিকে ‘আইন’ করা হবে বলেও জানান মন্ত্রী।
আইন শাখা হতে বিলের পক্ষে বিপক্ষে ভোট গ্রহণের জন্য বিভক্তি তালিকা ছাপানো হয়েছে। সংসদ সদস্যদের নামের এই তালিকা পাঠানো হবে জাতীয় সংসদের ৫টি লবিতে। বিল পাসের দিন যার যার নাম্বার অনুযায়ী সংসদ সদস্যরা তাদের সমর্থন জানাবেন এ বিলে। স্বাক্ষরগুলো গণনা করে পরে স্পিকারকে দেয়া হবে। সে
স্বাক্ষর গণনা করেই নির্ধারণ হবে এ বিলের পক্ষে ও বিপক্ষে কতোজন রয়েছেন।
জাতীয় সংসদের আইন শাখা হতে জানা গেছে, না ভোটের জন্য ‘লাল কালিযুক্ত’ বিভক্তি তালিকা এবং হ্যাঁ ভোটের জন্য সবুজকালিযুক্ত বিভক্তি তালিকা ছাপানো হয়েছে। এই ভোট সংগ্রহের জন্য ২৫জন কর্মকর্তার তালিকাও চূড়ান্ত করেছে আইন শাখা। একজন গণনাকারী টেলর এর সঙ্গে চারজন করে থাকবেন ভোট গ্রহণকারী।
নিয়ম অনুযায়ী বুধবার স্পিকারের অনুমতি নিয়ে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বিলটি পসের জন্য উত্থাপন করবেন। বিলটি উত্থাপনের পর পাসের জন্য স্পিকার তা কণ্ঠ ভোটে দেবেন। তারপর সর্বসম্মতিক্রমে বিলটি পাস হবে। এরপরেই বিলটির পক্ষে বিপক্ষে ভোট গণনা করে স্পিকার সংসদকে অবহিত করবেন।
বিলের সংশোধনে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদের দফা ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭ ও ৮ এর পরিবর্তে নিন্মরূপ দফা ২, ৩, ও ৪ প্রতিস্থাপিত হইবে।’
সংসদে উত্থাপিত বিলের ও বর্তমান ৯৬ অনুচ্ছেদের ১ দফায় বর্নিত অন্যান্য বিধানাবলী সাপেক্ষে ‘কোন বিচারক সাতষট্টি বৎসর বয়স পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত স্বীয় পদে বহাল থাকিবেন’ অপরিবর্তিত রয়েছে।
সংসদে উত্থাপিত বিলের দফা (৩) এর শব্দগত পরিবর্তন এনেছে স্থায়ী কমিটি। এই অনুচ্ছেদের (২) দফার অধীন প্রস্তাব সম্পর্কিত পদ্ধতি এবং কোনো বিচারকের আসদাচরণ বা অসামর্থ্যসম্পর্কে তদন্ত ও প্রমাণের পদ্ধতি সংসদ আইনের দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করবেন। এই দফায় সংসদ আইনের দ্বারা নিয়ন্ত্রণ ‘করিবেন’ শব্দের পরিবর্তে করিতে ‘পারিবেন’ শব্দ দুটি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।
এদিকে বিলটির পক্ষে সমর্থন আদায়ের জন্য সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী দলগুলোর সঙ্গে আলাদা আলাদা বৈঠক করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সে বৈঠকে সবাই বিলের পক্ষে সম্মতি দিয়েছেন বলে জানা গেছে। বুধবার সংসদের বৈঠক শুরু হওয়ার আগে প্রধানমন্ত্রী স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করবেন বলেও সংসদ সূত্রে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, বিলটি পাস হলে বিচারপতিদের সংসদের কাছে দায়বদ্ধ থাকবেন। ১৯৭২ সালের সংবিধানেও বিষয়টি এমনই ছিল। পরবর্তীতে জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এলে সুপ্রিম জুডিশিয়ালের কাউন্সিলের হাতে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা দেন ।
বাংলাদেশ সময়: ০:১৭:৫৬ ৩৬৯ বার পঠিত