সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪
মূলধনের আকার ১০০০ কোটি টাকার প্রস্তাব
Home Page » অর্থ ও বানিজ্য » মূলধনের আকার ১০০০ কোটি টাকার প্রস্তাববঙ্গনিউজ-মূলধনের আকার ৫০০ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে এক হাজার কোটি টাকা করার প্রস্তাব রেখে এবং বর্তমান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) অর্ডিনেন্স, ১৯৭৬ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী বাংলায় করতে জাতীয় সংসদে তোলা ‘ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ আইন ২০১৪’ বিলের রিপোর্ট চূড়ান্ত করেছে সংসদীয় কমিটি।রোববার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত অর্থ মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এটি চূড়ান্ত করা হয়।
সংসদের চলমান তৃতীয় অধিবেশন শুরুর দিন ১ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদে বিলটি উত্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। পরে স্পিকার অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য বিলটি সংসদীয় কমিটিতে পাঠিয়ে দেন। এর আগে গত ২৮ এপ্রিল মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিলটির খসড়া অনুমোদন করা হয়।
কমিটি সূত্র জানায়, বৈঠকে বিলটি নিয়ে আলোচনাকালে জানানো হয়, বাংলাদেশের বিনিয়োগের ক্ষেত্র সম্প্রসারণ ও উৎসাহ প্রদান, পুঁজিবাজার উন্নয়ন, সঞ্চয় সংগ্রহ ও আনুষঙ্গিক বিষয়ে সহায়তা দেয়ার লক্ষ্যে আইনটি সংশোধন প্রয়োজন। এ জন্য ইংরেজিতে প্রণীত অধ্যাদেশটি বাংলা ভাষায় রূপান্তর করে যুগপোযোগী আইন হিসেবে প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আইনটি প্রণয়নের ফলে স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত সব কোম্পানির শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের অভিহিত মূল্য দশ টাকা চালুকরণে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের আদেশ বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।
প্রস্তাবিত বিলে আইসিবির পরিশোধিত মূলধন (পেইড আপ ক্যাপিটাল) ৩৩৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪২১ কোটি ৮৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছে এবং প্রতিটি শেয়ারের দাম ১০০ টাকা থেকে কমিয়ে ১০ টাকা করা হয়েছে।
বিলে করপোরেশনের সম্মতি ছাড়া নামের অপব্যবহার করলে শাস্তির মেয়াদ বিদ্যমান ৬ মাস কারদণ্ড বা এক হাজার টাকা জরিমানার পরিমাণ বাড়িয়ে অনধিক দুই বছরের কারাদণ্ড ও ন্যূনতম এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ ছাড়া করপোরশেনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গোপনীয়তা বা বিশ্বস্ততা ভঙ্গ করলে দুই বছরের জেল বা এক লাখ টাকা জরিমানার প্রস্তাব রাখা হয়েছে বিলে।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ-সংবলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিগত দুই সামরিক সরকারের আমলে জারিকরা অধ্যাদেশের প্রয়োজনীয় অধ্যাদেশগুলো আইনে পরিবর্তন করতেই এ উদ্যোগ। ইংরেজিতে প্রণীত অধ্যাদেশটি বাংলা ভাষায় রূপান্তর করে আইন প্রণয়নের ফলে সরকার ও সুপ্রিম কোর্টের আদেশ বাস্তবায়িত হবে। স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত সব কোম্পানির শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিটের অভিহিত মূল্য ১০ টাকা বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।
এ ছাড়া বিলে সিকিউরিটিজের সংজ্ঞাও নতুন করে সংযোজন করা হয়েছে। প্রস্তাবিত আইনে ‘ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর (ডিএমডি)’-এর নতুন পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। বিদ্যমান অধ্যাদেশে আইসিবির অধীন সাবসিডিয়ারি কোম্পানির প্রধান নির্বাহীর পদটি ডিজিএম, তা পরিবর্তন করে ‘মহাব্যবস্থাপক’ হিসেবে সংযোজন করা হয়েছে। প্রচলিত আইসিবি অধ্যাদেশে দায়মুক্তির বিধান ছিল, তবে নতুন আইনে তা বাদ দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।
এদিকে বৈঠকে মানি লন্ডারিং বিষয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে। কমিটির সভাপতি মো. আব্দুর রাজ্জাক নিজেই বিষয়টি সামনে নিয়ে আসেন। তিনি বলেন, মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে প্রচুর অর্থ বিভিন্ন দেশে পাচার হচ্ছে যা আমাদের অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। কমিটি মানি লন্ডারিং প্রতিরোধে বাংলাদেশ ব্যাংক কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে এবং ভবিষ্যতে অর্থ পাচার বন্ধে কী পরিকল্পনা রয়েছে সে বিষয়ে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন আগামী বৈঠকে উপস্থাপনের সুপারিশ করেছে।
কমিটির সভাপতি ড. মো. আব্দুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য এম এ মান্নান, নাজমুল হাসান, টিপু মুন্সি, ফরহাদ হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী, মো. শওকত চৌধুরী ও আখতার জাহান অংশ নেন। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪:১৪:৩৭ ৩৪৭ বার পঠিত