শনিবার, ৩০ আগস্ট ২০১৪

ভালো ঘুমের পাঁচ পরামর্শ

Home Page » স্বাস্থ্য ও সেবা » ভালো ঘুমের পাঁচ পরামর্শ
শনিবার, ৩০ আগস্ট ২০১৪



images.jpgশরীরের স্বাভাবিক ছন্দ ধরে রাখতে হলে নিয়মিত ও পর্যাপ্ত ঘুম জরুরি। ঘুম ভালো না হলে নানা রকমের শারীরিক ও মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। এসবের মধ্যে রয়েছে তীব্র ও দীর্ঘস্থায়ী শারীরিক যন্ত্রণা, উচ্চ রক্তচাপ, স্থূলতা, টাইপ-টু ডায়াবেটিস, হৃদ্যন্ত্রের বিভিন্ন রোগ, অকাল বার্ধক্য প্রভৃতি। দৈনন্দিন জীবনযাত্রার সময়সূচি ও পরিবেশ পরিবর্তন এবং নানা রকমের চাপের প্রভাবে ঘুমের ঘাটতি হতে পারে।
সুনিদ্রা নিশ্চিত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের একদল বিশেষজ্ঞ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন। তাঁরা বলছেন, নিদ্রাহীনতা দূর করতে কাজকর্ম ও জীবনযাত্রার ধারাবাহিক ছন্দের গুরুত্বকে বিশেষভাবে বিবেচনা করতে হবে। এই ধারাবাহিক ও পর্যায়ক্রমিক ছন্দ নিয়ন্ত্রণের জন্য মানবদেহে রয়েছে এক ধরনের অভ্যন্তরীণ জৈবিক ঘড়ি। এটি নির্দিষ্ট সময়ে মানুষের ঘুমকাতরতা এবং জেগে থাকার বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করে। এই অভ্যন্তরীণ সময়সূচি ব্যাহত কিংবা পরিবর্তিত হওয়ার ফলে ঘুমের মাত্রায় হেরফের হতে পারে। আবার কখনো কখনো ঘুমের অভ্যাসই পরিবর্তিত হয়ে যায়।
আধুনিক ও কর্মব্যস্ত জীবনে অনেকেই অনিদ্রাজনিত নানা সমস্যায় ভুগছেন। নিরাময়ের লক্ষ্যে অনেকেই ওষুধের সহায়তা নিচ্ছেন। ব্যাপারটা অনেক সময় ব্যয়বহুল এবং ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। ওষুধের ওপর নির্ভরশীলতায় অনেক সময় অনিদ্রা সমস্যার স্বল্পমেয়াদি সমাধান পাওয়া যায় বটে। কিন্তু গবেষকেরা বলছেন, ওষুধের পরিবর্তে প্রাকৃতিক সমাধান হিসেবে অভ্যন্তরীণ জৈবিক ঘড়িটি নতুন করে মানিয়ে নেওয়া যেতে পারে। এটি বিশেষ কার্যকর এবং সাশ্রয়ী। আর এতে স্বাস্থ্যঝুঁকিও কম।
১. ঘুমের নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করুন:
সপ্তাহের প্রতিদিন এমনকি ছুটির দিনেও একটি নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যাওয়া এবং ঘুম থেকে জেগে ওঠার অভ্যাস করতে হবে। পরিবেশ, পরিস্থিতি পরিবর্তনের কারণে এই সময়সূচির হেরফের হলে ঘুমাতে যাওয়ার সময় ১৫ মিনিট করে এগিয়ে কিংবা পিছিয়ে নিয়ে নতুন সময়সূচির সঙ্গে মানিয়ে নিন।
২. কারণ খুঁজে বের করুন
জীবনের অর্থ ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়ার জন্য নানা ধরনের জনসেবামূলক কাজে নিজেকে যুক্ত করতে হবে। এতে আপনি বেঁচে থাকার কারণ খুঁজে পাবেন। গবেষণায় দেখা যায়, এ ধরনের কাজ মানুষকে পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে সহায়তা করে। ফলে অপ্রয়োজনীয় উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তা দূর হয়। পরিণামে রাতে ভালো ঘুম হয়।
৩. বিশেষ খাদ্যাভ্যাস
মেলাটোনিনসহ বিশেষ যৌগসমৃদ্ধ প্রাকৃতিক খাবার শরীরকে দীর্ঘ ও পরিপূর্ণ ঘুমের জন্য প্রস্তুত করে। গবেষণায় দেখা যায়, ফলের চাটনিজাতীয় খাবার অধিক মাত্রায় মেলাটোনিন থাকে। এ ধরনের খাবার গ্রহণে শরীর স্বাভাবিকভাবেই লম্বা ঘুমের জন্য প্রস্তুত হয়।
৪. বিছানায় যাওয়ার নির্দিষ্ট সময়
কাজের চাপ কিংবা অন্যান্য কাজকর্মের ফলে ঘুমানো কঠিন হয়ে পড়ে। শোবার ঘরকে নীরব ও পবিত্র হিসেবে বিবেচনা করে শান্ত, অন্ধকার এবং ঠান্ডা রাখুন। কম্পিউটার, স্মার্টফোন, ট্যাবলেটসহ এ ধরনের ইলেকট্রনিক যন্ত্র এড়িয়ে বিছানায় যাওয়ার চেষ্টা করুন। এভাবে ধারাবাহিক প্রচেষ্টায় মাস খানেকের মধ্যেই দ্রুত ঘুমিয়ে পড়ার অভ্যাস তৈরি হয়ে যাবে।
৫. লম্বা শ্বাস নিন
বিছানায় যাওয়ার আগে গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস আপনার মনকে ক্লান্তিহীন এবং প্রাণবন্ত করে তুলবে। এ ক্ষেত্রে শ্বাস-প্রশ্বাসের ৪-৭-৮ সূত্রটি একটি ভালো কৌশল হতে পারে। প্রথমে সোজা হয়ে বসে চার পর্যন্ত গুনতে যে সময় লাগে, ততক্ষণ লম্বা শ্বাস নিন। তারপর সাত পর্যন্ত গণনার সময় নিয়ে শ্বাসকে ভেতরে রাখুন। তারপর আট পর্যন্ত গণনার সময় নিয়ে নিঃশ্বাস ত্যাগ করুন। এভাবে তিনবার করুন।

বাংলাদেশ সময়: ০:৩২:৪১   ৩৭২ বার পঠিত