সোমবার, ২৫ আগস্ট ২০১৪

অনিশ্চয়তায় জমজ বোনের উচ্চশিক্ষা

Home Page » প্রথমপাতা » অনিশ্চয়তায় জমজ বোনের উচ্চশিক্ষা
সোমবার, ২৫ আগস্ট ২০১৪



jessore_2_sister_bg_725005773.jpgবঙ্গ-নিউজ:: জমজ বোনের জোড়া সাফল্যে আলোকিত কৃষক আব্দুল মজিদের ঘর। দারিদ্র্যকে জয় করে জমজ দু’বোন সাবিহা ও আম্বিয়া এবছর এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছেন।কিন্তু উচ্চশিক্ষার অনিশ্চয়তায় তাদের এ সাফল্যের আনন্দ ম্লান হতে চলেছে। পরিবারের সঙ্গতি না থাকায় দু’টি মেধাবী মুখ অকালেই ঝরে যাওয়ার আশঙ্কা তাদের শিক্ষকদেরও।

যশোর সদর উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম চাউলিয়া। এ গ্রামের প্রান্তিক কৃষক আব্দুল মজিদের দুই জমজ মেয়ে সাবিহা খাতুন ও আম্বিয়া খাতুন। এ বছর তারা রূপদিয়া শহীদ স্মৃতি কলেজ থেকে এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন।

দারিদ্র্যের সঙ্গে সংগ্রাম করে উচ্চ মাধ্যমিকে এ সাফল্য পেলেও পরবর্তী পথের কোনো দিশা তাদের জানা নেই। জিপিএ-৫ প্রাপ্তির খুশি তাই দিনে দিনে মলিন হতে বসেছে।

সাবিহা ও আম্বিয়া জানান, প্রান্তিক কৃষক পরিবারে তারা ৬ ভাই বোন। বড় বোনের বিয়ে দেওয়ার পর তার ছোট দুই ভাইও বিয়ে করেছে। তারা এখন আলাদা থাকে। বাবা, মা, ছোট ভাই ও তারা দুই বোন মিলে এখন তাদের ৫ জনের সংসার। অন্যের জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাস করে চলে তাদের সংসার।

তারা আরও জানান, বাবা মায়ের সঙ্গতি নেই তাদের লেখাপড়া করানোর। তারপরও তারা দুই বোন কলেজের শিক্ষকদের সহযোগিতায় সংগ্রাম করে এইচএসসি পাস করেছেন। এখন তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণে আগ্রহী।

সাবিহা জানান, সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চশিক্ষা নিয়ে প্রশাসনে চাকরি করে দেশের সেবা ও পরিবারের পাশে দাঁড়াতে চান। আর আম্বিয়ার স্বপ্ন সে উচ্চশিক্ষা শেষ করে মানুষ গড়ার মহান পেশা শিক্ষকতায় নিজেকে নিয়োজিত করতে চান।

সাবিহা ও আম্বিয়ার মা মর্জিনা খাতুন   জানান, খেয়ে না খেয়ে তার দুই মেয়ে অনেক পরিশ্রম করে ভালো ফল করেছে। তাদের কলেজের শিক্ষকরা অনেক সাহায্য সহযোগিতা করেছেন।

সাবিহা ও আম্বিয়ার বাবা আব্দুল মজিদ   জানান, তার দুই মেয়ের এই সাফল্যে তার পরিবারসহ এলাকাবাসীও আনন্দিত। এখন সাবিহা ও আম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চায়। কিন্তু ইচ্ছা থাকলেও কিভাবে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াবেন তা জানেন না তিনি।

রূপদিয়া শহীদ স্মৃতি কলেজের শিক্ষক রেজাউল ইসলাম ও ইস্রাফিল হোসেন  জানান, সাবিহা ও আম্বিয়া দরিদ্র কৃষকের ঘর থেকে উঠে এসে জিপিএ-৫ পেয়েছে। কলেজের বেতন, ফিস দিতে পারেনি। অর্থের অভাবে প্রাইভেট পড়ারও সুযোগ হয়নি।কিন্তু সব প্রতিবন্ধকতা জয় করে সে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছে।

রূপদিয়া শহীদ স্মৃতি কলেজের অধ্যক্ষ আইয়ুব হোসেন   জানান, কঠোর সংগ্রাম করে উচ্চ মাধ্যমিকের গণ্ডি পার হলেও জমজ বোন সাবিহা ও আম্বিয়ার উচ্চশিক্ষা অনিশ্চিত। কারণ গ্রামের কলেজেই তাদের লেখাপড়া করানোর সামর্থ্য ছিল না পরিবারের।

সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো তো প্রায় অসম্ভব। তাই জমজ এ দু’বোনের লেখাপড়া এখানেই শেষ হয়ে যাবে কিনা এ নিয়ে তিনিও চিন্তিত।
-

বাংলাদেশ সময়: ০:৩৪:৪৮   ৫০০ বার পঠিত