রবিবার, ২৭ জুলাই ২০১৪
প্রস্তুত শোলাকিয়া, প্রস্তুত দেশবাসী এবার অনুষ্ঠিত হবে ১৮৭তম ঈদ-উল-ফিতরের জামাত
Home Page » আজকের সকল পত্রিকা » প্রস্তুত শোলাকিয়া, প্রস্তুত দেশবাসী এবার অনুষ্ঠিত হবে ১৮৭তম ঈদ-উল-ফিতরের জামাতডেস্ঃক উপমহাদেশের বৃহত্তম ঈদ-উল-ফিতরের জামাতের জন্য প্রস্তুত শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠ। উক্ত জামাতে অংশগ্রহন করবেন দেশ-বিদেশের লাখ লাখ মুসুল্লী। প্রতিবারের মত এবারও বাংলাদেশ তথা উপমহাদেশের বৃহত্তম ঈদ-উল-ফিতরের ১৮৭তম জামাত অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে।সুষ্ঠুভাবে জামাত অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই জেলা প্রশাসনের গ্রহন করা বিভিন্ন প্রস্তুতিমূলক কর্মকান্ড প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। ঈদ জামাত নির্বিঘেœ সম্পন্নের লক্ষ্যে শ্রমিকরা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কাতারের লাইন টানা, মাঠ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করণ, ধোয়া মুছা ও রংয়ের প্রলেপ দেওয়ার কাজে। যাবতীয় প্রস্তুতির কাজ বর্তমানে প্রায় শেষ পর্যায়ে বলে জানিয়েছে ঈদগাহ কমিটি।
এবারের ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ১০টায়। ঈদের জামাতে ইমামতী করবেন মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ। জামাতে শরীক হওয়া বিপুল সংখ্যক মুসুল্লির দৃষ্টি আকর্ষনের জন্য নামাজ শুরুর ৫ মিনিট পূর্বে ৩টি, ৩ মিনিট পূর্বে ২টি ও ১ মিনিট পূর্বে ১টি শটগানের গুলি ফোটানো হবে।
দূর দূরান্ত থেকে আসা মুসুল্লিদের অংশগ্রহনের সুবিধার্থে “শোলাকিয়া ষ্পেশাল” নামে তিনটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে সরকারীভাবে। একটি ট্রেন ভোর সাড়ে ৫টায় ময়মনসিংহ থেকে, আরেকটি নরসিংদী থেকে ভোর সাড়ে ৫টায় এবং অপর ট্রেনটি সকাল ৬ টায় ভৈরব থেকে কিশোরগঞ্জ শোলাকিয়া মাঠের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসবে। নামাজ শেষে ট্রেনগুলো দুপুর ১২টায় স্ব-স্ব গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবে।
মাঠের সুনাম ও জনশ্রুতির কারণে বাংলাদেশের দূর দূরান্তের জেলাসহ এমনকি বিদেশ থেকেও আগত ভিনদেশী মুসুল্লিরা ঈদের জামাতে অংশগ্রহন করে থাকেন। প্রতি বছরই এ সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। জামাতে অংশগ্রহনের জন্য ঈদের ২/৩ দিন পূর্ব থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মুসুল্লিদের আগমন শুরু হয়। আগত মুসুল্লিরা ঈদগাহ মসজিদ, গেষ্ট হাউস এমনকি ঈদগাহ’র খোলামাঠে রাত্রি যাপন করে থাকেন।
শোলাকিয়া ঈদগাহ মসজিদের ইমাম আব্দুস সালাম গোলাপ বলেন, ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়া মাঠে লাখ লাখ মুসলমান অংশগ্রহন করে থাকে। বড় জামাতে অংশগ্রহন করলে বেশী সোওয়াব হয় আর এ জন্যই দেশ বিদেশ থেকে লাখ লাখ মুসুল্লী ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ময়দানে নামাজে অংশ নিতে আসেন।
কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শরীফুল ইসলাম (শরীফ) বলেন, ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ময়দানে প্রতি বছর মুসুল্লীর সংখ্যা বাড়ছে। মুসুল্লীর অনুপাতে যে পরিমান যে রকম সুযোগ সুবিধা থাকা দরকার সে রকম সুযোগ সুবিধা এখানে নেই। তাই মাঠের পরিধি বৃদ্ধি, অযুখানা ও টয়লেটের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নত করা প্রয়োজন। এ ব্যাপারে সরকারের সু-দৃষ্টি কামনা করেন।
এ ব্যাপারে কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠ কমিটির সভাপতি এস.এম আলম বলেন, নিরাপদে ঈদ জামাত অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে। সুষ্ঠুভাবে জামাত অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে এ পর্যন্ত একাধিকবার মাঠ পরিদর্শনসহ বেশ কয়েকটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইতিমধ্যে মাঠে পানি সরবরাহ, পয়নিস্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়ন, সহ মুসুল্লীদের নামাজ পড়ার উপযোগী করে তোলার জন্যে সব ধরণের প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে। ভবিষ্যতে মাঠের উন্নয়নে মহাপরিকল্পনার প্রণয়নে কার্যক্রম চলছে। ঈদগাহ মাঠের আয়তন বাড়ানোসহ যাবতীয় উন্নয়নের জন্য ইতিমধ্যে ডিজিটাল সার্ভে সম্পন্ন হয়েছে। তাদের রিপোর্টের ভিত্তিতে সকল মহলের সঙ্গে আলোচনা করে ঈদগাহ মাঠ উন্নয়নে মহাপরিকল্পনা গ্রহন করা হবে।
ঈদগাহ কমিটির সহ সভাপতি পুলিশ সুপার, মোঃ আনোয়ার হোসেন খান বলেন, ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদের জামাতকে কেন্দ্র করে ৫০০ পুলিশ, ৫০ জন আমর্ড পুলিশ ও বিপুল সংখ্যক র্যাব নিয়ে বিরাট নিরাপত্তা বেষ্টনি গড়ে তুলা হয়েছে। কিশোরগঞ্জের আইন শৃঙ্খলা এমনিতেই ভাল। তারপরও আইন-শৃঙ্খলা রার ক্ষেত্রে আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত আছি। ঈদ-উল-ফিতরের জামাত সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্তিতি বিবেচনায় এনে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এদিকে মুসুল্লীরা যাতে নির্বিঘেœ জামাতে অংশগ্রহন করতে পারে সে জন্য চলছে শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি। ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়া ময়দানে আসন্ন ঈদ-উল-ফিতরের ১৮৭তম জামাত সুষ্টুভাবেই সম্পন্ন হবে এবং মাঠের পরিধি বৃদ্ধিসহ সার্বিক উন্নয়নে সরকার এগিয়ে আসবে এমনটাই আশা করছেন কিশোরগঞ্জবাসী।
বাংলাদেশ সময়: ১৩:৪৬:৫৭ ৪৬৬ বার পঠিত