শনিবার, ১৪ জুন ২০১৪
‘বিহারি ক্যাম্পে’ সংঘর্ষ, নিহত ৯
Home Page » প্রথমপাতা » ‘বিহারি ক্যাম্পে’ সংঘর্ষ, নিহত ৯ বঙ্গ-নিউজ ডটকমঃ রাজধানীর মিরপুরের কালশীতে আতশবাজি পোড়ানোকে কেন্দ্র করে আটকে পড়া পাকিস্তানিদের ক্যাম্পে সংঘর্ষে অন্তত নয়জন নিহত হয়েছেন।
শনিবার ভোরের দিকের এই সংঘর্ষের সময় কয়েকটি ঘরে আগুন দেয়া হলে অগ্নিদগ্ধ হয়ে এই নয়জন মারা যান বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে।
দুপুর পর্যন্ত সেখানে পুলিশের সঙ্গে থেমে থেমে সংঘর্ষ চলছিল। পুলিশও বিহারি ক্যাম্প নামে পরিচিত ওই এলাকায় ঢুকতে পারেনি বলে মৃত্যুর সংখ্যা তারা নিশ্চিত করে বলতে পারেনি।
তবে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের আলোকচিত্র সাংবাদিক আসিফ মাহমুদ অভি সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে নয়জনের লাশ দেখতে পেয়েছেন, যাদের দেহ পুড়ে গিয়েছিল। নিহতদের চারজন নারী, দুটি শিশু।
ক্যাম্পের বাসিন্দারা জানায়, সকালে হঠাৎ করে দুর্বৃত্তরা হামলা চালায়। এ সময় তারা বেশ কয়েকটি ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে অন্তত ১০টি ঘর পুড়ে গেছে। আরো বেশ কয়েকটি ঘরে ভাংচুর হয়েছে।
ক্যাম্পের ‘স্ট্র্যান্ডেড পাকিস্তানি জেনারেল রিপ্যাট্রিয়েশন কমিটির’ একটি কক্ষে সাতজনের লাশ দুপুরে রাখা ছিল। দগ্ধ লাশ সাতটি কাপড় দিয়ে মুড়িয়ে রাখা হয়েছে।
ক্যাম্পের বাসিন্দা মুন্না নামে এক যুবক এই সাতজনের পরিচয় জানান। নিহতরা হলেন- বেবি, ফারজানা, লালু, ভুলু, সাহানি, সুলতানা ও মারুফ।
আরো দুজনের তাদের লাশ কোথায় রাখা আছে, তা মুন্না জানাতে পারেননি।
আব্দুল শাহজাহান নামে একজন জানান, নিহতরা এক পরিবারের সদস্য।
সংঘর্ষের ঘটনা ভোর ৬টার দিকে শুরু হয় বলে জানান তিনি।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে পৌঁছালে এলাকাবাসীর সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল ছুড়েছে পুলিশ।
মিরপুর জোনের উপকমিশনার ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, “ভোররাতে বিহারিদের পটকা ফাটানো নিয়ে কয়েকটি দল সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এর জেরে ঘরে আগুন দিলে কয়েকজন মারা যায়।
“আমরা সেখানে গিয়ে লাশ হস্তান্তরও করতে বললেও স্থানীয়রা আমাদের কোনো সহায়তাও করেনি। কতজন মারা গেছে তাও বলেনি।”
বেলা পৌনে ২টার দিকে ঘটনাস্থলে যান ঢাকা মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি ও সাবেক সংসদ সদস্য সাহিদা তারেখ দিপ্তী।
তিনি বলেন, “আমরা এখানে পুলিশ প্রশাসন ও বিহারি ক্যাম্পের নেতাদের সঙ্গে নিয়ে আলোচনা করছি।”
ময়নাতদন্তের জন্য লাশ দিতেও আটকে পড়া পাকিস্তানিদের প্রতি অনুরোধ জানান ক্ষমতাসীন দলের এই নেতা।
তিনি জানান, সরকারের পক্ষ থেকে নিহতদের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা করে দেয়া হবে। যাদের ঘরবাড়ি পুড়ে গেছে তাদের পুনর্বাসন করা হবে।
আটকে পড়া পাকিস্তানিরা হামলার জন্য স্থানীয় আওয়ামী লীগ সংসদ সদস্য ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লার দিকে অভিযোগ তুলেছেন।
নির্বাচনী এলাকায় এই ঘটনার পর সেখানে দেখা যায়নি সাংসদ ইলিয়াসকে। তিনি আসেননি কেন- জানতে চাইলে সাহিদা বলেন, “ইলিয়াস কেন আসেননি তা লোকজন জানে, তারাই বলতে পারবে।”
ঘটনার পর থেকে কালশী রোডে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত ওই রুটে গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখা হবে।
মিরপুরের এই ঘটনার পর মোহাম্মদপুরসহ অন্যান্য ক্যাম্পগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে
বাংলাদেশ সময়: ১৬:০৯:৫৯ ৩৯৯ বার পঠিত