বুধবার, ৪ জুন ২০১৪
পর্যায়ক্রমে প্রতিটি জেলা ও বিভাগে হাইটেক পার্ক হবে
Home Page » আজকের সকল পত্রিকা » পর্যায়ক্রমে প্রতিটি জেলা ও বিভাগে হাইটেক পার্ক হবেডেস্করিপোর্ঃটপর্যায়ক্রমে দেশের প্রতিটি জেলা শহর ও বিভাগে প্রযুক্তির প্রসারে হাইটেক পার্ক প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড ২০১৪-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ গঠন করেছি। এর মাধ্যমে সারা দেশে হাইটেক পার্ক, সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক এবং আইসিটি ইনকিউবেটর তৈরির প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। গাজীপুর, যশোর, সিলেট ও রাজশাহীতে হাইটেক পার্ক স্থাপনের কার্যক্রম চলছে। ক্রমে প্রতিটি জেলা ও বিভাগে হাইটেক পার্ক প্রতিষ্ঠা করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার মাধ্যমে আমরা শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান, দারিদ্র্য বিমোচন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও জনগণের ক্ষমতায়নে তথ্য প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহার নিশ্চিত করতে চাই। ইউনিয়ন তথ্য সেবা কেন্দ্রগুলো এ লক্ষ্যেই গড়ে তোলা হয়েছে। প্রতিটি ইউনিয়ন তথ্য সেবা কেন্দ্রে একজন পুরুষ ও একজন নারীর কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে। এসব কেন্দ্রের মাধ্যমে গ্রামীণ জনগোষ্ঠী বিভিন্ন সরকারি ফরম ও সেবা, পাসপোর্ট ও ভিসা সংক্রান্ত তথ্য, কর্মসংস্থানের আবেদন, পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল, জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন, নাগরিকত্ব সনদ, মোবাইল ব্যাংকিং, জীবন বীমা, ইউটিলিটি বিল পরিশোধসহ বিভিন্ন ধরনের সেবা পাচ্ছেন।
তিনি বলেন, আমরা শিক্ষিত প্রজন্মকে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার ও উন্নয়নের সুযোগ করে দিয়েছি। মোবাইল অ্যাপস উন্নয়নে তাদের সম্পৃক্ত করতে সারা দেশে তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ২ হাজার ৩শ’ ৬০ জনকে এ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে স্ব-কর্মসংস্থানের জন্য লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। এর আওতায় ইতোমধ্যে ১৪ হাজার ৭শ’ জন আউটসোর্সিংয়ের প্রশিক্ষণ নিয়েছে। বর্তমানে প্রায় ৫ লাখ মানুষ আউটসোর্সিংয়ে নিয়োজিত আছেন এবং তারা ঘরে বসে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছেন বলেও তথ্য দেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা জনপ্রশাসনকে প্রযুক্তি-ভিত্তিক সেবা প্রদানে সক্ষম করে তুলেছি। জেলা প্রশাসনে এজন্য কম্পিউটার নেটওয়ার্ক ভিত্তিক ই-সেবা কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়, বিভাগ, জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যন্ত সব সরকারি অফিসকে একটি সরকারি নেটওয়ার্কের আওতায় সংযুক্ত করার কাজ চলছে। জাতীয় ই-তথ্য কোষ থেকে জনগণ কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন সেবা বিষয়ক তথ্য পাচ্ছেন।
তিনি বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বিকাশে আইসিটি বিভাগের আওতায় গবেষণা ফেলোশিপ, বৃত্তি প্রদান এবং উদ্ভাবনী কাজের জন্য অনুদানের ব্যবস্থা করেছি। জেলা পর্যায়ে নিয়মিত ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলার আয়োজন করা হচ্ছে। বিশ্বের প্রায় ৫০টি দেশে বাংলাদেশের তৈরি সফটওয়্যার ও আইটি সেবা রপ্তানি করছি। ২০২১ সালের মধ্যে সফটওয়্যার ও আইটি সেবা রপ্তানি বর্তমানের একশো মিলিয়ন থেকে পাঁচ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করতে চাই।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত সফটওয়্যার ও আইটি ব্যবসাকে আয়কর মুক্ত রাখা হয়েছে। সফটওয়্যার আমদানি ও উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট মওকুফ করা হয়েছে। ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ঋণসহ ইকুয়িটি এন্টারপ্রেনিয়রশিপ ফান্ডের ব্যবস্থা চালু রয়েছে। তিনি জানান, বাংলাদেশে স্যামসাং গবেষণা ও উন্নয়ন কেন্দ্র স্থাপন করছে। গুগল, মাইক্রোসফট ও ডেলের মতো বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশে তাদের অফিস স্থাপন করেছে। আমরা তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানাই। সরকার তাদের সর্বতোভাবে সহযোগিতা দেবে। এর ফলে দেশের তরুণ মেধাবী প্রজন্ম নিজের ও দেশের উন্নয়নে অবদান রাখার সুযোগ পাবে।
সবশেষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি বিশ্বাস করি, ভিজিটররা বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড ২০১৪ পরিদর্শন করে নতুন নতুন উদ্ভাবন ও নাগরিক সেবার সঙ্গে পরিচিতি হবে। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ায় অবদান রাখবে। ডিজিটাল প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন তরুণ প্রজন্মের হাত ধরেই এ দেশ হবে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ
বাংলাদেশ সময়: ১৯:৪৭:৫২ ৫০৩ বার পঠিত