বুধবার, ৪ জুন ২০১৪
জামাইষষ্ঠী
Home Page » এক্সক্লুসিভ » জামাইষষ্ঠীবঙ্গ নিউজঃ জামাইষষ্ঠী সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম উৎসব। এটি কোনো ধর্মীয় উৎসব নয়। এ অনুষ্ঠানটি মূলত জামাইকে কেন্দ্র করে হয়ে থাকে। যদিও জামাইবাবাজী সব সময়ই শ্বশুর বাড়িতে পরম আদরের।জামাইয়ের জন্য সব সময় থাকে স্পেশাল খাবার-দাবার। শ্বশুরবাড়িতে জামাইয়ের জন্য পঞ্চব্যঞ্জন রান্না হয়ে থাকে অবধারিতভাবেই।
দ্বীন-হীন লোকও সাধ্যমতো জামাইকে তুষ্ট করতে ব্যস্ত থাকেন। জামাই আদরে যেন কোনোদিকই ঘাটতি না থাকে সেদিকে কড়া নজর রাখেন শাশুড়িমা। আর বাজারঘাট করতে কোনোদিনই কার্পণ্য করেন না শ্বশুরমহাশয়।
বলা যায়- সব শ্বশুরবাড়িতে জামাইকে বসানো হয় দেবতার আসনে। জামাই তরুণ বা বৃদ্ধ যে বয়সেরই হোক না। জামাই- জামাই-ই জামাইয়ের আদর আলাদা।অবশ্য সবাই জামাইকে এমন সমাদরে রাখেন যাতে আদরের মেয়েটিকে জামাই সারাজীবন কোনো দুঃখ-কষ্ট না দিয়ে সুখের সঙ্গে ঘর-সংসার করে।
এসব বিবেচনায় নিয়েই জামাইকে আলাদাভাবে একটা সম্মান দেখানোর জন্যই হিন্দু পণ্ডিতরা একটা পৃথক দিনক্ষণ বেছে নিয়েছেন। এদিনটা শুধুই জামাইদের জন্য। তাই নাম রাখা হয়েছে জামাইষষ্ঠী। দিনটা বরাদ্দ শুধুমাত্র জামাইকে আপ্যায়ন করার জন্য।
বাজারের সেরা ইলিশ, পাবদা, গলদা চিংড়ি, দৈ-মিষ্টি, আম-কাঠাল দিয়ে শুধু আপ্যায়নই নয়- জামাইকে দেওয়া হয় নতুন শার্ট-প্যান্ট-কোর্টসহ বিবিধ উপহার।
অপরদিকে, কম যায় না জামাইবাবাজী। তিনিও খালি হাতে শ্বশুরবাড়ি আসেন না, যতই আত্মভোলা হোক না কেন, শাশুড়ি মায়ের জন্য তাঁত বা জামদানি, ঝুড়ি ভর্তি আম, কাঁঠাল, লিচু, পেয়ারা, পান-সুপুরী, নদীর ঘাট থেকে কানকো নাড়ানো পাকা রুই বা কাতল মাছ, ময়রার দোকান থেকে গরম রসগোল্লার হাঁড়ি, ছানার সন্দেশ ভর্তি বাক্স সাথে আনতে ভোলেন না।
শাশুড়ি মা যখন ‘শিব ঠাকুর’ জামাতাটিকে ধান-দূর্বা-উলু দিয়ে আশীর্বাদ করেন, জামাই বাবাজীও শাশুড়িমায়ের চরণ স্পর্শ করে, চরণধূলিটুকু আশীর্বাদ হিসেবে মাথায় তুলে নেয়। নানা পদের খাবার রান্নার পর তা সাজিয়ে মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে শাশুড়ি মা বসেন পরম মমতায় জামাইকে ভুরিভোজ করাতে। তবে জামাইয়ের কাছেই থাকে শালী ও অন্য নারীরা।
এ সময় বাড়ির পুরুষদের সেখানে প্রবেশ নিষেধ। কেবলমাত্র জামাইকে খাওয়াতে উপস্থিত থাকেন বাড়ির নারীরা।
বাংলাদেশ সময়: ৪:০৩:০০ ১৬৬২ বার পঠিত