মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০১৪
১৫ শতাংশ রফতানি কমেছে টেরি টাওয়ালের
Home Page » অর্থ ও বানিজ্য » ১৫ শতাংশ রফতানি কমেছে টেরি টাওয়ালেরবঙ্গ-নিউজঃ আমেরিকান অঞ্চলে জিএসপি স্থগিত হওয়ায় টেরি টাওয়ালের রফতানি কমেছে ১৫ দশমিক ৫৫ শতাংশ। ইপিবি থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১২-১৩ অর্থ বছরের জুলাই-এপ্রিল সময়কালের থেকে চলতি বছরের একই সময়ে টেরি টাওয়ারের রফতানি কমেছে।রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) থেকে জানা যায়, ২০১২-১৩ অর্থ বছরের টেরি টাওয়াল রফতানির আয় ছিলো ৬৯ মিলিয়ন ডলার। অথচ ২০১৩-১৪ অর্থবছরের প্রথম দশ মাসে রফতানি আয় হয়েছে ৫৮ দশমিক ২৭ মিলিয়ন ডলার। এ হিসাবে চলতি সময়কালে রফতানি কমেছে ১০ দশমিক ৭৩ মিলিয়ন ডলার।
চলতি অর্থ বছরের প্রথম দশ মাসে টেরি টাওয়ালের রফতানির লক্ষমাত্রা অর্জনেও ব্যর্থ হয়েছে ইপিবি। ২০১৩-১৪ অর্থবছরের প্রথম দশ মাসে টেরি টাওয়াল রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৬৯ দশমিক ২৯ মিলিয়ন ডলার। লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আয় হয়েছে ৫৮ দশমিক ২৭ মিলিয়ন ডলার যা লক্ষ্যমাত্রার থেকে ১৫ দশমিক ৯০ শতাংশ কম।
টেরি টাওয়ালের রফতানি কমে যাওয়ায় কারণ আমেরিকান অঞ্চলে জিএসপি সুবিধা বন্ধ বলে মন্তব্য করেছেন টেরি টাওয়াল উৎপাদনকারী ও রফতানিকারক সমিতির সভাপতি খন্দকার আবদুল মুক্তাদির।
বাংলাদেশ থেকে যেসব জায়গায় টেরি টাওয়াল রফতানি হয় সেগুলোর বেশির ভাগেরই ক্রেতা হচ্ছে ইউরোপ, আমেরিকা। আর আমেরিকায় জিএসপি সুবিধা বন্ধ হওয়া ও অন্যদিকে পাকিস্তানের জিএসপি সুবিধা পাওয়াই কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশের এই শিল্পের জন্য। ইউরোপ আমেরিকার ক্রেতারা বাংলাদেশের টেরি টাওয়াল কিনত, কারণ এতে তাদের ডিউটি কস্ট থাকতো না। এখন বাংলাদেশের টেরি টাওয়াল কিনতে হলে তাদের ডিউটি কস্ট দিতে হয়। আমাদের দেশে ডিউটি বন্ধ হওয়ার কিছুদিনের মধ্যে জিএসপি সুবিধা পেয়ে যায় পাকিস্তান। ফলে আমাদের বাজার চলে যাচ্ছে পাকিস্তানের হাতে।
এর ফলে এই শিল্পে জড়িত প্রায় ৩০ লক্ষ লোকের কর্মসংস্থান হুমকির মুখে পড়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, বর্তমান অবস্থা আমাদের ওপর খুব একটা প্রভাব এখনো ফেলেনি এটা সত্য। কিন্তু যদি এই অবস্থা চলমান থাকে তাহলে ইউরোপীয়ান ক্রেতারাও আমাদের ওপর আস্থা হারাবে। বিপর্যয়ের সম্মুখীন হবে এই শিল্প।
যেহেতু জিএসপি সুবিধা বন্ধের কারণে নানা সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন তাই নগদ প্রণোদনা সুবিধা চান এই খাতের সংশ্লিষ্টরা।
টেরি টাওয়াল সমিতির সদস্যরা জানান, এই মুহূর্তে যদি এই শিল্পের পাশে সরকার না দাড়ান ও প্রণোদনা সুবিধা না দেন তাহলে বড় ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে এ শিল্পকে।
এসব বিষয়ে রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর সহ-সভাপতি শুভাষিস বসুর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সম্ভব হয়নি।
তবে এসব বিষয়ে বাণিজ্য সচিব মাহবুব আহমেদ বলেন, জিএসপি স্থগিত হয়ে যাওয়ায় রফতানি কমেছে এটা ঠিক। তবে জিএসপি যাতে পুনর্বহাল করা হয় সে বিষয়ে বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে। আর ব্যবসায়ীদের যদি নগদ প্রণোদনার প্রয়োজন থাকে তাহলে আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করতে হবে।
তারপর সরকার ভেবেচিন্তে দেখবে কী করা যায়। এভাবে মিডিয়ার মাধ্যমে বললে তো আর হয় না।
ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরে টেরি টাওয়াল রফতানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হয়েছে ৮৬ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলার। গত অর্থবছরের টেরি টাওয়াল খাত থেকে বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়েছিলো ৮১ দশমিক ৯৬ মিলিয়ন ডলার।
গত ২৭ জুন বাংলাদেশে আন্তর্জাতিকভাবে শ্রম অধিকার ও শ্রমিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে না অভিযোগ করে জিএসপি সুবিধা স্থগিত করে যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে জিএসপি সুবিধা ফিরে পেতে বাংলাদেশকে কর্মপরিকল্পনা অনুপায়ী পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দেয় যুক্তরাষ্ট্র।
সর্বশেষ চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে শর্ত পূরণ সংক্রান্ত চিঠি আমেরিকায় পাঠানো হয়েছে বলে জানায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র।
বাংলাদেশ সময়: ১৩:২৩:০৭ ৪২৪ বার পঠিত