শুক্রবার, ৯ মে ২০১৪
বয়ঃসন্ধিকালে মেয়েকে যে পরামর্শগুলো একজন মায়ের অবশ্যই দিতে হবে
Home Page » আজকের সকল পত্রিকা » বয়ঃসন্ধিকালে মেয়েকে যে পরামর্শগুলো একজন মায়ের অবশ্যই দিতে হবেডেস্ঃকদেখতে দেখতেই পার হয়ে গেলো এতোগুলো বছর। এইতো সেইদিনই মাত্র আপনার মেয়েটি জন্মেছিলো, আর এখন সে বড় হয়ে গিয়েছে। মেয়েটি যত বড় হচ্ছে আপনার চিন্তাও বেড়ে চলেছে। এখনকার সময়ের ছেলে মেয়েরা তো বেশ আগেই প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে গিয়ে কত রকমের ভুল করে বসে। আপনার আদরের মেয়েটিও যদি এমন কোনো ভুল করে?আমাদের সমাজের মায়েরা মেয়েদের সাথে প্রেম, ভালোবাসা এসব নিয়ে সাধারণত আলাপ করেননা। এসব বিষয় নিয়ে সন্তানের সাথে আলাপ করাটা তাদের জন্য বেশ লজ্জার বিষয় এবং অনুচিত একটি ব্যাপার। কিন্তু এর ফলাফল হয় হিতে বিপরীত। না জেনে না শুনে কম বয়সেই অনেক রকম ভুল করে বসে কিশোরীরা। তাই আগে থেকেই প্রেম-ভালোবাসা সম্পর্কে কিছু প্রাথমিক ধারণা ও সাবধানতা জানিয়ে দেয়া উচিত। আগে থেকে জানা থাকলে কিশোরী বয়সের বিভিন্ন ভুল থেকে দূরে থাকতে পারবে আপনার সন্তান। আসুন জেনে নেয়া যাক ভালোবাসা সম্পর্কে সন্তানকে জানানো উচিত এমন ৭ টি বিষয়।
তুমি যেমন আছো ঠিক আছো
মায়েরা যখন মেয়েকে বলে যে তুমি যেমন আছো, যা আছো সেটাই যথেষ্ট ভালো; তখন মেয়ের আত্মবিশ্বাস এবং আত্মমর্যাদা বাড়ে। মেয়েটির তখন নিজের উপর বিশ্বাস তৈরী হয় এবং সে বুঝতে পারে ভালোবাসা পাওয়ার জন্য তার কোনো কিছু বদলানোর প্রয়োজন নেই। সে যে রকম আছে, সেটাই যথেষ্ট ভালোবাসা পাওয়ার জন্য। আপনার কন্যাকে বলে দিন যে কেউ যদি ভালোবাসার দোহাই দিয়ে আপনার পরিবর্তন করতে চায় তাহলে সে আপনার ভালোবাসার যোগ্য নয়।
সম্মান পেতে হলে সম্মান দিতে হবে
সম্পর্কের ক্ষেত্রে মেয়েরা সাধারণত সবচেয়ে প্রথমে যা চায় তা হলো সম্মান। মা-এর উচিত মেয়েকে বুঝিয়ে বলা যে সম্মান পেতে হলে সঙ্গীকেও সম্মান করতে হবে। সঙ্গীর মতামত এর গুরুত্ব দেয়া, তাকে কষ্ট না দেয়া, তার সাথে ভালো ব্যবহার করা এবং তার পরিবার সম্পর্কে কটুক্তি না করা ইত্যাদি ব্যাপার গুলো মাথায় রাখতে হবে। তাহলেই তার সঙ্গীটিও তাকে সম্মান করবে।
নিজেকে হারিয়ে ফেলো না
প্রেমে পড়লে সাধারণত মেয়েরা নিজের অস্তিত্বকে হারিয়ে ফেলে। প্রেমিক ছাড়া নিজেকে কল্পনা করাটাই অসম্ভব হয়ে পড়ে তাদের কাছে। প্রেমিকের প্রতি অতিরিক্ত নির্ভরশীল হয়ে পরলে নিজের বন্ধু-বান্ধব, শখ, ইচ্ছা সব কিছুর চাইতে প্রেমকে প্রাধান্য দেয় বেশি। তাই কন্যাকে মায়ের বোঝাতে হবে যে সম্পর্কে জড়ালেও যেন নিজেকে হারিয়ে ফেলে। প্রেমের সম্পর্কের বাইরেও আপনার মেয়ের আরো অনেক ধরণের সম্পর্ক আছে এবং সেগুলোও গুরুত্বপূর্ন।
বিয়ের আগে শারীরিক সম্পর্ক নয়
আপনার কন্যাকে আপনারই বোঝাতে হবে যে কোনো প্রলোভনেই যেন সে প্রেমিকের সাথে শারীরিক সম্পর্কে রাজী না হয়। হয়তো অনেক কিছু বুঝিয়ে, বিয়ের কথা বলে কিংবা বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে মেয়েকে শারীরিক সম্পর্কের জন্য চেষ্টা করবে। কিন্তু কন্যাকে বুঝিয়ে বলুন যেন এপথে ভুলেও এগোয়। তাকে বুঝিয়ে বলুন যে প্রেম পর্যন্ত ঠিক আছে, কিন্তু ভুলেও যেন কাউকে পুরোপুরি বিশ্বাস না করে বিয়ের আগ পর্যন্ত। তাকে বুঝিয়ে বলুন কেউ যদি মন থেকে কাউকে ভালোবাসে তাহলে সে শারীরিক সম্পর্কের জন্য জোর করবে না। বিয়ের আগে শারীরিক সম্পর্কের সামাজিক ও ধর্মীয় ক্ষতি গুলো তাকে বুঝিয়ে দিন ভালো করে।
সম্পর্কে সততা বজিয়ে রাখতে বলুন
আপনার কন্যাকে বলুন কোনো সম্পর্কে যদি জড়িয়েই যায় তাহলে সে যেন সম্পর্কের ক্ষেত্রে সব সময় সততা বজআয়ে রাখে। একই সঙ্গে একাধিক সম্পর্কে জড়ানো একটি অনৈতিক কাজ এটা তাকে বুঝিয়ে দিন। এছাড়াও কারো সাথে প্রতারণা করলে যদি সে প্রতিহিংসা পরায়ণ হয় তাহলে বড় ধরণের ক্ষতি করতে পারে এটাও তাকে বুঝিয়ে বলুন।
সম্পর্ক ভাঙ্গতেই পারে
আপনার মেয়েকে বুঝিয়ে বলুন যে সম্পর্কের ভাঙ্গা গড়া আছেই। সম্পর্ক ভেঙ্গে গেলে মন থেকে বিপর্যস্ত না হয়ে জীবনের চলার পথে এগিয়ে যেতে হবে। তাছাড়াও কোনো ক্ষতিকর বা ভুল সম্পর্কে থাকার চাইতে সময় থাকতে সেটা ভেঙ্গে ফেলাই ভালো। নাহলে পুরো জীবন সেই ভুলের মাশুল দিতে হবে।
জীবন রূপকথা নয়
ছোট বেলা থেকেই রূপকথার গল্প পড়ে মেয়েরা নিজেদের জীবনটাকে সিন্ডারেলার জীবনের মত কল্পনা করে নেয়। তাঁরা ধরেই নেয় যে তার স্বপ্নের রাজপুত্র তাকে একসময় নিয়ে যাবে স্বপ্নপুরীতে। যেখানে কোনো দুঃখ থাকবে না কিংবা অভাব থাকবে না। কিন্তু পরবর্তিতে মেয়েরা জীবনের নানান জটিলতায় সেই স্বপ্ন ভেঙ্গে যায় এবং মনকষ্টে ভুগে। রূপকথার গল্প তো মানুষেরই মন গড়া লেখা। তাই আপনার মেয়েকে বুঝিয়ে বলুন যে জীবনটা গল্পের মত সুন্দর নয়। তাই জীবনের ধাপগুলোকে যেনও সে রূপকথার গল্পের সাথে মিলিয়ে না ফেলে।
বাংলাদেশ সময়: ২১:০০:৩৯ ৪৫১ বার পঠিত