বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০১৪

ভয়াবহ সন্দ্বীপের পরিনিতি

Home Page » আজকের সকল পত্রিকা » ভয়াবহ সন্দ্বীপের পরিনিতি
বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০১৪



image_36315_0.jpgডেস্করিপোর্টঃঐতিহ্যবাহী প্রাচীন দ্বীপ সন্দ্বীপ কী আবার শূন্য দ্বীপে পরিণত হতে চলেছে! এমন সংশয় সন্দ্বীপবাসীর মনে। যারা প্রাচীন সন্দ্বীপ দেখেছেন, তারা বর্তমান সন্দ্বীপের কথা ভেবে আতঙ্কিত না হয়ে পারেন না।
এককালের বিশাল হাটবাজার, ফসলি জমি, বাড়ি-ঘর, গাছপালা, পুকুর, মৎস্য খামারসহ অনেক কিছুই এখন আর এখানে নেই। প্রতিনিয়ত ভাঙন তাড়িয়ে ফিরছে এখানকার মানুষদের।ঐতিহাসিক সূত্র বলছে, শূন্যদ্বীপ থেকে এ দ্বীপের নামকরণ হয়েছিল সন্দ্বীপ। কথিত আছে, বারো আউলিয়ারা চট্টগ্রাম যাত্রার সময় এ দ্বীপটি জনমানব শূন্য অবস্থায় দেখতে পান। সময়ের বিবর্তনে শূন্যদ্বীপ থেকে এ দ্বীপটি সন্দ্বীপ নামে পরিচিতি পায়। আবার অনেক ঐতিহাসিক সোমদ্বীপ অথবা স্বর্ণদ্বীপ থেকে সন্দ্বীপের নামকরণ হয়েছে বলে দাবি করেন।

সন্দ্বীপের বিভিন্ন এলাকা সরেজমিনে ঘুরে বাংলানিউজ দেখেছে এক একটি এলাকা ক্ষয়ে যাওয়ার চিত্র। ভাঙন ধেয়ে আসছে, এক একটি বাঁধ বিলীন হয়ে গেছে। ঘর-বাড়ি সরিয়ে মানুষজন নতুন বাঁধের পাশে ঘর বেধেছে। শখ করে লাগানো আম-জাম গাছ, অতি যতœ করে বাধানো পুকুর ঘাট, স্বজনদের কবরস্থান সবই চোখের সামনে বিলীন হতে দেখছেন এখানকার মানুষেরা।
আলাপকালে ভাঙন কবলিত মানুষেরা বলেছেন, বছরে কয়েকবার করে বাড়ি বদলানোর ফলে তাদের জীবনে নেমে আসা অবর্ণনীয় দুর্দশার খবর নিতে কেউ আসে না। মাথা গোঁজার এক টুকরো ঠাঁই নেই বলে সেই ভাঙন কবলিত বেড়িবাঁধের ধারেই আশ্রয় নিয়ে কোনোভাবে বেঁচে থাকার চেষ্টা তাদের।
সারিকাইত, রহমতপুর, হরিশপুর- বাংলানিউজ যেখানেই তথ্য সংগ্রহ করেছে, সেখানেই গ্রামের পর গ্রাম ভেঙে চলেছে বছরের পর বছর। রহমতপুরের বয়স্ক ব্যক্তি শওকত হোসেন তর্জনি তুলে মেঘনার বুকে তার বাড়ির সীমানা দেখানোর চেষ্টা করছিলেন। দীর্ঘশ্বাস ফেলে তিনি বলছিলেন, এই নদী সব নিয়ে গেছে। মহিষের হাল নেই, পুকুরের মাছ নেই, থাকার মতো এক টুকরো জমি নেই, শরীরে খেটে খাওয়ার মতো জোর নেই।
রহমতপুরের স্টিমারঘাট থেকে নদীর কিনার ধরে হরিশপুরের দিকে যেতে দেখা মেলে আরও অনেকের। সবারই এক কথা। সন্দ্বীপের অস্তিত্ব নিয়ে তারা শঙ্কিত। সম্পদশালী লোকজন এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে গেলেও একেবারে নি:স্ব মানুষগুলো কোথাও যাওয়ার সুযোগ না পেয়ে বাঁধের কাছেই থেকে গেছেন পরিবার-পরিজন নিয়ে। ভেঙে পড়া ঘরখানা টিকিয়ে রাখতে চারদিকে রশি টানা দেওয়া হয়েছে। ঘরের কাছে ভাঙন চলে এলেও তাদের ঘরটা অন্যত্র সরানোর সুযোগ নেই।

বাংলাদেশ সময়: ৮:২৪:২৩   ৩৬২ বার পঠিত