শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০১৩
রানা প্লাজার দুই গার্মেন্টস মালিক গ্রেফতার
Home Page » জাতীয় » রানা প্লাজার দুই গার্মেন্টস মালিক গ্রেফতারবঙ্গ-নিউজ ডটকম :ভারে ধসে পড়া রানা প্লাজায় অবস্থিত তিন গার্মেন্টসের দুই মালিককে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল। শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় রাজধানীর রমনা এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার হওয়া দুই মালিক হলেন- নিউ ওয়েব বটমস ও নিউ ওয়েব স্টাইলের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক বজলুস সামাদ আদনান (৪৫) এবং ফ্যান্টম অ্যাপারেলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদুর রহমান তাপস। ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান গ্রেফতারের বিষয়টি বঙ্গ-নিউজকে নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, “গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাদের রমনা এলাকা থেকে গোয়েন্দা পুলিশের পৃথক দু’টি দল তাদের গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের পর তাদের প্রথমে রমনা থানায় এবং পরে ঢাকা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “২৪ এপ্রিল ভবন ধসের ঘটনার পর ওই রাতেই ভবন মালিক ও গার্মেন্টস মালিকদের নামে সাভার থানায় মামলা দায়ের করে পুলিশ। ওই মামলায় এদের গ্রেফতার করা হয়েছে।”ওই ভবনে ফ্যান্টম ট্যাক লিমিটেড ও ইথার টেক্সটাইল লিমিটেড নামে আরও দু’টি গার্মেন্টস রয়েছে। এ দুই গার্মেন্টসের মালিক এখনও পলাতক। তবে তাদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান চলছে বলে জানান ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান। প্রসঙ্গত, এর আগে মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের ঝিটকা গ্রামের পোদ্দারপাড়া এলাকা থেকে রানার দুই নিকটাত্মীয়কে গ্রেফতার করে সাভার থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- সোহেল রানার চাচাতো ভাই জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী মুন্নি বেগম (৩২) ও মুন্নির ফুফা আনোয়ার হোসেন (৫০)। মুন্নির বাবার বাড়ি ঝিটকা পোদ্দারপাড়া। শুক্রবার সকালে ঝিটকার গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে তাদের গ্রেফতার করে সাভার ও হরিরামপুর থানা পুলিশ। সাভার থানার অপারেশন অফিসার শেখ ফরিদ উদ্দিন বঙ্গ-নিউজকে জানান, “আটক আনোয়ার হোসেন রানা প্লাজার দেখাশোনার দায়িত্ব পালন করতেন। বুধবারের ঘটনার পর তিনি সাভার থেকে পালিয়ে মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে চলে যান। আর সোহেল রানার সঙ্গে মুন্নির ব্যবসায়িক লেনদেন রয়েছে।”পুলিশ ধারণা, আটক আনোয়ারকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে রানার অবস্থান নিশ্চিত হওয়া যাবে। সাভার পৌর যুবলীগের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সোহেল রানার মালিকানাধীন এই ভবনের প্রথম ও দ্বিতীয় তলায় ইলেকট্রনিক্স, কম্পিউটার, প্রসাধন সামগ্রী ও পোশাকের দোকান ছিল। ভবনটির তৃতীয় তলা থেকে ওপর পর্যন্ত ৫টি গার্মেন্টস কারখানা ছিল। এগুলো হলো-নিউ ওয়েভ বটমস লিমিটেড, নিউ ওয়েভ স্টাইল, ফ্যান্টম অ্যাপারেলস লিমিটেড, ফ্যান্টম ট্যাক লিমিটেড ও ইথার টেক্সটাইল লিমিটেড। ঘটনার আগের দিন ভবনটিতে ফাটল দেখা গেলেও শ্রমিকদের জোর করে ওই দিন কাজে আনা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন বেঁচে যাওয়া শ্রমিকেরা। বুধবার ২৪ এপ্রিল সকাল পৌনে ৯টার দিকে ৮ তলা ভবনটি ধসে পড়ার ঘটনায় এ পর্যন্ত ৩১৫ জনের মৃতদেহ উদ্ধার, ২৮৯ জনের লাশ হস্তান্তর ও ২৩৭৫ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। আহতদের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ আশপাশের অন্য হাসপাতাল, পঙ্গু হাসপাতাল, সিএমএইচ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ছয় তলা ভবন নির্মাণের অনুমতি নিয়ে নয় তলা ভবন তৈরি করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এর আগে গত নভেম্বর মাসে সাভারের আশুলিয়ায় তাজরিন ফ্যাশন্সে অগ্নিকাণ্ডে শতাধিক পোশাক শ্রমিকের প্রাণহানি হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২:৫৬:৫৯ ৫৬০ বার পঠিত