বুধবার, ৯ এপ্রিল ২০১৪

ঝিনাইদহসহ বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন ভারতেরবিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে ২৪টি ফেনসিডিল কারখানা

Home Page » জাতীয় » ঝিনাইদহসহ বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন ভারতেরবিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে ২৪টি ফেনসিডিল কারখানা
বুধবার, ৯ এপ্রিল ২০১৪



image_32420_0.jpgডেস্করিপোর্টঃউন্মুক্ত সীমান্ত দিয়ে অবাধে আসছে যুব সমাজের মেধা ও মনন ধ্বংসকারী মরণবিষ ফেনসিডিল। দেশি-বিদেশি মাদক সিন্ডিকেট ভারত থেকে প্রতিদিন লাখ লাখ বোতল ফেনসিডিল বাংলাদেশে পাচার করলেও প্রতিরোধের কোন ব্যবস্থা নেই। বর্তমানে অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, দেশের প্রত্যেকটি সীমান্ত এলাকা মাদকের জন্য উন্মুক্ত। একটি সূত্রে জানা যায়, বিপুল পরিমাণ মাদকের সরবরাহ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন ভারতের বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে ২৪টি ফেনসিডিল কারখানা। দেশের সীমান্ত এলাকায় মাঝে মধ্যে লোক দেখানো ফেনসিডিল বা ইয়াবার চালান ধরা হলেও কোন কোন ক্ষেত্রে বহনকারীরা ধরা পড়ে। তবে অধিকাংশ বড় মাদকের চালান উদ্ধার করা হয় লোক ছাড়া । উন্মুক্ত সীমান্ত দিয়ে অবাধে ভারত থেকে ফেনসিডিলের বড় বড় চালান আসলেও মূল মাদক ব্যবসায়ী ও তার বিপরীতে সোনা পাচারকারীদের গ্রেফতারের কোন উদ্যোগ নেই। সীমান্ত দিয়ে অবাধে যারা মাদক ব্যবসা করছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না। অথচ, আমাদের সমাজে অধিকাংশ অপরাধের মূল কারণ মাদক। সূত্র জানায়, বাংলাদেশ সীমান্তসংলগ্ন ভারতের বিভিন্ন এলাকায় যে ২৪টি ফেনসিডিল কারখানা রয়েছে কার্যকর কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন ভারতের ভূখন্ডে ফেনসিডিল উৎপাদন এবং চোরাচালানের মাধ্যমে বাংলাদেশে পাচার বন্ধ হয়নি। সীমান্তসূত্রে জানাগেছে,বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে ১ কিলোমিটারের মধ্যে ভারতে ৪টি ফেনসিডিল কারখানা রয়েছে। আমাদের দেশের সীমান্ত এলাকায় বিজিবি পুরোপুরি নিষ্ক্রিয়। সীমান্ত দিয়ে অবাধে মাদক আসার খবর পত্রিকায় প্রকাশিত হচ্ছে। অথচ বিজিবি তেমন কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে বলে মনে হয় না। বিজিবি সীমান্ত রক্ষা করার চেয়ে দেশের অভ্যন্তরে রাজনৈতিক আন্দোলনে ভূমিকা রাখতে বেশি ব্যস্ত। পুলিশ ও বিজিবির মতো সীমান্তে মাদক প্রতিরোধে ভূমিকা রাখতে পারছে না। তবে মাঝে মধ্যে র‌্যাবের অভিযানে মাদক ধরা পড়ছে । সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে ফেনসিডিলসহ নানা প্রকার মাদক প্রবেশ করছে। ফেনসিডিলসহ মাদক দ্রব্য সহজলভ্য হয়ে যাওয়ায় মাদকাসক্তের সংখ্যাও বাড়ছে। মাদক পাচার বন্ধে বিজিবি ও পুলিশকে আরো সক্রিয় হওয়ার পাশাপাশি জনসচেতনতা বাড়াতে হবে বলে সচেতন মহলের ধারনা। এক পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, বাংলাদেশের ৬৮ লাখ মানুষ মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছেন। এদের মধ্যে ৮৪ ভাগ পুরুষ, আর ১৬ ভাগ নারী। সমাজের বিত্তশালী ব্যক্তি থেকে শুরু করে নারী ও শিশু-কিশোররাও মাদকাসক্ত হচ্ছে এবং মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে। আর সারাদেশে দেড় লক্ষাধিক মানুষ নানাভাবে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। তবে প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি। এ বিষয়ে আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার মিডিয়াকে বলেছিলেন, মাদক নিয়ে কোনো ধরনের আপস নেই। মাদকের সঙ্গে কোনো পুলিশ সদস্য বা কর্মকর্তা জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। নেশায় বুদ হয়ে থাকা আজকের যুব সমাজ ভবিষ্যতে দেশের জন্য এক বিশাল বোঝা হয়ে দাঁড়ানোর পাশাপাশি মেধার অভাবে দেশের সার্বিক উন্নতি ও অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করবে। মাদকাসক্তরা মাদক ক্রয়ের অর্থ সংগ্রহ করতে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই ও খুনসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। এর প্রেক্ষিতে বহু পরিবারের স্বপ্ন আজ ধ্বংসের পথে। তারপরও থামানো যাচ্ছে না ফেনসিডিলের ছোবল।

বাংলাদেশ সময়: ১১:৫৫:৩৪   ৩৯৮ বার পঠিত