শনিবার, ২২ মার্চ ২০১৪

বিশ্ব পানি দিবস

Home Page » আজকের সকল পত্রিকা » বিশ্ব পানি দিবস
শনিবার, ২২ মার্চ ২০১৪



image_29473_0.jpgডেস্করিপোর্টঃআজ বিশ্ব পানি দিবস। দিবসটির প্রাক্কালে গতকাল শুক্রবার ইউনিসেফ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) যৌথ সমীক্ষাভিত্তিক ওই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এতে বলা হয়, ২০১৩ সালের হিসাব অনুযায়ী বিশ্বের ৭৬০ কোটি ৮০ লাখ মানুষ নিরাপদ পানি পায় না। এ কারণে প্রতি বছর অসুস্থ হয়ে মারা যায় হাজারো শিশু। আর পানীয় জলের সুবিধাবঞ্চিত বেশিরভাগ মানুষই দরিদ্র এবং তারা দুর্গম গ্রামাঞ্চল অথবা বস্তিতে বসবাস করেন।
বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্রতমদেরই নিরাপদ পানি পাওয়ার সুযোগ সবচেয়ে কম। বর্তমানে বিশ্বের প্রায় সাতশ’ কোটি মানুষের নিরাপদ পানি পানের সুযোগ নেই। এর মধ্যে বাংলাদেশে নিরাপদ পানি পায় না প্রায় দুই কোটি ষাট লাখ মানুষ। এছাড়া নিরাপদ পানি, পয়ঃনিষ্কাষণ এবং স্বাস্থ্য সেবার অভাবের সাথে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কারণে বিশ্বে প্রতিদিন পাঁচ বছরের কম বয়সী এক হাজার চারশ শিশু প্রাণ হারায় বলে জাতিসংঘ শিশু বিষয়ক তহবিল-ইউনিসেফ এর এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
ইউনিসেফের বিশ্ব পানি, পয়ঃনিষ্কাষণ ও স্বাস্থ্য কর্মসূচির প্রধান সঞ্জয় বিজেসেকেরার বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ধনী বা দরিদ্র যাই হোক না কেন প্রতিটি শিশুর রয়েছে বেঁচে থাকার, স্বাস্থ্যের এবং একটি নিশ্চিত ভবিষ্যতের অধিকার। পৃথিবীর প্রতিটি পুরুষ, নারী ও শিশু যে পর্যন্ত না পানি এবং পয়ঃনিষ্কাষণের সুযোগ পাচ্ছে, সে পর্যন্ত সবাইকে কাজ চালিয়ে যেতে হবে, কারণ এটা মানবাধিকার।’
উল্লেখ্য, নিরাপদ খাবার পানি সংক্রান্ত এমডিজি লক্ষ্যমাত্রা ২০১০ সালে অর্জিত এবং স্বীকৃত হয়। ওই সময়ে বিশ্বের ৮৯ শতাংশ মানুষ উন্নত উত্স থেকে নিরাপদ পানি পানের সুযোগ পেতো। কিন্তু বর্তমানে সবচেয়ে বেশি উদ্বেগজনক হচ্ছে - অনেক মধ্যম আয়ের দেশেও লাখ লাখ দরিদ্র মানুষ নিরাপদ পানি পায় না।
প্রতিবেদন মতে, বিশ্ব জনসংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশের আবাসস্থল ১০টি দেশে নিরাপদ পানি পানের সুযোগ নেই। দেশগুলো হলো: চীন (দশ কোটি আশি লাখ); ভারত (নয় কোটি নব্বই লাখ); নাইজেরিয়া (ছয় কোটি ত্রিশ লাখ); ইথিওপিয়া (চার কোটি ত্রিশ লাখ); ইন্দোনেশিয়া (তিন কোটি নব্বই লাখ); কঙ্গো (তিন কোটি সত্তর লাখ); বাংলাদেশ (দুই কোটি ষাট লাখ); তানজানিয়া (দুই কোটি বিশ লাখ); কেনিয়া (এক কোটি ষাট লাখ) এবং পাকিস্তান (এক কোটি ষাট লাখ)।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, নারী এবং অল্প বয়সের মেয়েরাও নিরাপদ পানির অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অথচ খাবার পানি সংগ্রহের দায়িত্বের শতকরা ৭১ ভাগই তারা পালন করে। তবে আশার কথা, ইউনিসেফ এর ‘ওয়াশ’ কার্যক্রম ১০০টিরও বেশি দেশে কাজ করছে এবং ব্যয়-বান্ধব খনন এবং কমিউনিটি-নির্ভর নিরাপদ পানি পরিকল্পনা কার্যক্রমের মাধ্যমে বিচ্ছিন্ন অঞ্চলে বসবাসকারী পরিবারগুলোতে নিরাপদ পানি পৌঁছে দিচ্ছে। বাংলাদেশেও নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে বৃষ্টি ও পুকুরের পানি বিশুদ্ধ করে এবং গভীর নলকূপ থেকে একাধিক সংযোগের মাধ্যমে নিরাপদ পানি সরবরাহ করছে ইউনিসেফ। এছাড়া চলতি সপ্তাহে নিরাপদ পানি প্রাপ্তির সুবিধাবঞ্চিত ওই দশ দেশের সত্তর কোটি ষাট লাখ আশি হাজার লোকের জন্য সহযোগিতা কামনা করে বিশ্বব্যাপী সামাজিক গণপ্রচারাভিযান শুরু করেছে সংস্থাটি।

বাংলাদেশ সময়: ১২:১৮:২৭   ৩৮৬ বার পঠিত