শনিবার, ১৫ মার্চ ২০১৪
খুনও কেন্দ্র দখলের মধ্য দিয়ে ভোটগ্রহণ শেষ, চলছে গণনা
Home Page » জাতীয় » খুনও কেন্দ্র দখলের মধ্য দিয়ে ভোটগ্রহণ শেষ, চলছে গণনা বঙ্গ-নিউজ ডটকমঃ খুন, ব্যালট ছিনতাই, জাল ভোট ও কেন্দ্র দখলের মধ্য দিয়ে শেষ হলো চতুর্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপ। এবারই প্রথমবারের মত কোন নির্বাচনে উপিস্থত ছিলেন না প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দিন আহমেদ। প্রথম দুই ধাপের নির্বাচন থেকে এ নির্বাচনে ব্যাপক সংঘর্ষ, গোলাগুলি ও হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বাগেরহাটের মেঘনাতলি এলাকার ভোট কেন্দ্র থেকে ধরে নিয়ে মানজারুল ইসলাম (২৪) নামে এক শিবির নেতাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। এ সময় আরো ৭ জন আহত হয়েছে বলে দাবি করেছেন ১৯ দল সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী ও বিএনপি নেতা সৈয়দ নাসির আহমেদ।
এছাড়া ভোটগ্রহণের শেষ পর্যায়ে নেত্রকোনার মদন উপজেলার ফতেহপুরে পোস্টার ছেঁড়াকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে গেনু মিয়া (৩৩) নামে একজন নিহত হয়েছেন।
বেলা ১২টার দিকে ভোলার সদর উপজেলার পশ্চিম বাপ্তা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আওয়ামী লীগ-বিএনপি প্রার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। এসময় পোলিং অফিসারের মোটরসাইকেলেও আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছে।
ভোলা সদর উপজেলায় নির্বাচন শুরুর আধাঘণ্টার মধ্যে বেশ কিছু কেন্দ্র থেকে প্রিজাইডিং অফিসার ও পুলিশের সহায়তায় বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীদের বের করে দিয়েছে আওয়ামী লীগ কর্মীরা। এসব কেন্দ্রে প্রশাসনের সহায়তায় প্রকাশ্যে ব্যালট পেপারে সিল দিয়েছে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর কর্মীরা।
এ ব্যপারে নির্বাচন কমিশনার শাহনেওয়াজ বলেন, জাল ভোটের বিষয়টি কমিশন আমলে নিয়েছে। মিডিয়ার মাধ্যমে জালভোট দেওয়া কেন্দ্রগুলো চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বেলা ২টা পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের ৯ কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ স্থগিতের প্রতিবেদন এসেছে বলে জানিয়েছেন ইসির সহকারী সচিব আশফাকুর রহমান।
স্থগিত হওয়া কেন্দ্রগুলো হচ্ছে, চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার বেরকোটা প্রাথমিক বিদ্যালয়, তেগুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, পশ্চিম রাজারগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পানৈর উচ্চ বিদ্যালয় ও মাঝিগাছা এম এম উচ্চ বিদ্যালয়, ফেনীর দাগনভূঞার আলাতলি বিদ্যালয়সহ দুটি কেন্দ্র এবং কুমিল্লার সিজিয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও রামপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়।
সকাল ১০টার দিকে দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগে ময়মনসিংহের ধোবা উড়া উপজেলা চন্দ্রকোনা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা খায়রুল হাসানকে আটক করেছে পুলিশ।
ভোট গ্রহণের শুরুতে ফেনীর দাগনভূঞায় অর্ধশতাধিক কেন্দ্রে ককটেল বিস্ফোরণ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। ওই ঘটনায় দুই জনের গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সেখানে সাংবাদিকদের দুটি গাড়িতেও হামলা হয়েছে বলে জানা গেছে।
এছাড়া সকাল ৯টার দিকে ওই এলাকায় জাল ভোট দেওয়ার সময় তিন পোলিং কর্মকর্তাকে হাতেনাতে আটক করেছেন দায়িত্বরত ম্যাজিস্ট্রেট। তারা হলেন, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার নাসির উদ্দীন খন্দকার, পোলিং অফিসার জিএম নাজমুল করিম ও ওয়াহিদুজ্জামান। এছাড়া কেন্দ্র দখল করে ভোট জালিয়াতির অভিযোগে সেখানে চারটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
উল্লেখ্য, তৃতীয় ধাপে ৪১টি জেলার ৮১টি উপজেলায় মোট ১ হাজার ১১৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান প্রার্থী রয়েছে ৪১৯, ভাইস-চেয়ারম্যান (পুরুষ) প্রার্থীর সংখ্যা ৪২৩ জন ও ভাইস- চেয়ারম্যান (মহিলা) প্রার্থীর সংখ্যা ২৭৭ জন।
এসব উপজেলায় মোট ভোটার ১ কোটি ৩১ লাখ ৮৫ হাজার ১৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬৫ লাখ ৬৭ হাজার ৯৩২ জন, মহিলা ভোটার ৬৬ লাখ ১৭ হাজার ১৮১ জন।
ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৫ হাজার ৪৪৪টি। ভোটকক্ষ ৩৫ হাজার ২৩১টি। প্রিজাইডিং অফিসার প্রতি ভোট কেন্দ্রে একজন করে ৫ হাজার ৪৪৪ জন। সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার প্রতি ভোটকক্ষের জন্য একজন করে মোট ৩৫ হাজার ২৩১ জন। পোলিং অফিসারের সংখ্যা ৭০ হাজার ৪৬৪ জন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:৩৩:৪৫ ৩৪৮ বার পঠিত