
বুধবার ● ৫ মার্চ ২০২৫
শেখ হাসিনার মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার হবে
Home Page » জাতীয় » শেখ হাসিনার মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার হবেবঙ্গনিউজ : বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য বিচারের মুখোমুখি করা হবে। স্কাই নিউজের এশিয়া সংবাদদাতা কর্ডেলিয়া লিঞ্চকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।
স্কাই নিউজ বুধবার (৫ মার্চ) সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করে। এতে ড. ইউনূস বলেন, শেখ হাসিনার বিচার হবে। তিনি বাংলাদেশে উপস্থিত থাকুন বা অনুপস্থিত থাকুন না কেন তিনি মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য বিচারের মুখোমুখি হবেন।
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি তার সরকারে থাকাকালীন জোরপূর্বক গুমের ব্যবস্থা তত্ত্বাবধান করেছিলেন। সেই সাথে গত বছরের জুলাই ও আগস্টে বিক্ষোভকারীদের গণহত্যার ঘটনাও তার তত্ত্বাবধানে হয়েছে।
স্কাই নিউজের সাথে কথা বলতে গিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বিচার হবে। কেবল তারই (শেখ হাসিনা) নয়, বরং তার সাথে যুক্ত সবার, তার পরিবারের সদস্য, তার মক্কেল বা সহযোগীদেরও বিচার হবে।
শেখ হাসিনার মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার হবে
চিফ প্রসিকিউটর / শেখ হাসিনার বিচার এক-দেড় মাসের মধ্যেই শুরু হবে
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে বর্তমানে ভারতে পালিয়ে আছেন শেখ হাসিনা। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি গোপন আটক কেন্দ্রের একটি নেটওয়ার্ক তত্ত্বাবধান করেছিলেন। যেখানে রাজনৈতিক বিরোধীদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ধরে আনা হতো, নির্যাতন করা হতো এবং কয়েকজনকে হত্যা করা হয়েছিল। এ সবই হাসিনা করতেন ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’-এর ব্যানারে।
বাংলাদেশ হাসিনার বিরুদ্ধে দুটি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ হাসিনার গ্রেপ্তারের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠিয়েছে কিন্তু নয়াদিল্লি থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাননি।
তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশে শারীরিকভাবে উপস্থিত হয়ে অথবা ভারতে অনুপস্থিতিতে আদালতের মুখোমুখি হবেন।
অধ্যাপক ইউনূস সম্প্রতি আয়নাঘর নামে পরিচিত কুখ্যাত গোপন কারাগারগুলোর মধ্যে একটি পরিদর্শন করেছেন। দরিদ্রদের ব্যাংকার হিসেবে পরিচিত এবং বর্তমানে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অর্থনীতির এই অধ্যাপক বলেন, তিনি যা দেখেছেন তাতে তিনি হতবাক। ‘এটি সবচেয়ে কুৎসিত জিনিস; যা আপনি দেখতে পাচ্ছেন। অনুভব করতে পারছেন, অথবা আপনি পর্যবেক্ষণ করতে পারছেন।’
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তিনি তার নিরাপত্তা বাহিনী এবং পুলিশকে ব্যবহার করে শত শত অ্যাক্টিভিস্টকে অপহরণ, নির্যাতন এবং হত্যা তদারকি করেছেন।
যদিও হাসিনা এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং বলেছেন, তাকে রাজনৈতিকভাবে নির্যাতিত করা হচ্ছে।
শেখ হাসিনা ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা ৮০০টিরও বেশি গোপন কারাগারের নেটওয়ার্ক তদারকির অভিযোগে অভিযুক্ত। যাদের অনেকেই বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে গেছেন। অধ্যাপক ইউনূস বলেন, অপরাধের সাথে জড়িতদের সংখ্যা এবং পরিসর নিয়ে কাজ করতে সময় লাগছে।
ড. ইউনূস বলেন, সবাই এতে জড়িত ছিল। পুরো সরকার (হাসিনার সরকার) এতে জড়িত ছিল। তাই আপনি পার্থক্য করতে পারবেন না কে সত্যিই এবং উৎসাহের সাথে এটি করছিল। কে আদেশে এটি করছিল এবং কে এসব সমর্থন করত না কিন্তু এই ধরনের কাজগুলো বাধ্য হয়ে করেছিল।
তিনি আরও বলেন, কিছু লোককে শাস্তি দেওয়া হবে। কিছু লোক তদন্তাধীন থাকবে। কিছু লোককে শনাক্ত করা যাবে না।
প্রসঙ্গত, শনিবার (১ মার্চ) দুপুরে সিলেট প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে আয়োজিত এক কর্মশালায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেছেন, চলতি মাসেই শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে থাকা মামলাসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতিবেদন পেলে এক-দেড় মাসের মধ্যে বিচার কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বজায় রেখে এসব মামলায় ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে। বিচার কাজে কোনো তাড়াহুড়ো করা হবে না।
বাংলাদেশ সময়: ১১:২৫:২৯ ● ১৩ বার পঠিত