সোমবার ● ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪

‘জাতীয় ঐক্যমত গঠন কমিশন’ প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে

Home Page » জাতীয় » ‘জাতীয় ঐক্যমত গঠন কমিশন’ প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে
সোমবার ● ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪


ফাইল ছবি

বঙ্গনিউজ :  অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, যে কোনো সংস্কারের কাজে হাত দিতে গেলে রাজনৈতিক ঐক্যমতের প্রয়োজন। অন্তর্বর্তী সরকার প্রথম পর্যায়ে ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠন করেছে। এ কমিশন শিগগির চূড়ান্ত প্রতিবেদন পেশ করবে বলে আমি আশা করি।

তিনি বলেন, আমরা এই ছয় কমিশনের চেয়ারম্যানদের নিয়ে একটি ‘জাতীয় ঐক্যমত গঠন জাতীয় ঐক্য’ প্রতিষ্ঠা করার দিকে অগ্রসর হচ্ছি। এর কাজ হবে রাজনৈতিক দলসহ সব পক্ষের সঙ্গে মতবিনিময় করে যে সমস্ত বিষয়ে ঐক্যমত স্থাপন হবে সেগুলো চিহ্নিত করা এবং বাস্তবায়নের জন্য সুপারিশ করা।

সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এসব কথা বলেন তিনি। জাতির উদ্দেশে দেওয়া প্রধান উপদেষ্টার এই ভাষণ একযোগে সম্প্রচার করে বিটিভি ও বিটিভি ওয়ার্ল্ড।

অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, যেহেতু জাতীয় ঐক্যমত প্রতিষ্ঠা করা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অতি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব, তা বিবেচনা করে আমি এই কমিশনের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করব। আমার সঙ্গে এই কমিশনের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন অধ্যাপক আলী রিয়াজ। কমিশন প্রয়োজন মনে করলে নতুন সদস্য কো-অপ্ট করতে পারবে। প্রথম এই ছয়টি কমিশনের চূড়ান্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর আগামী মাসেই জাতীয় ঐক্যমত গঠন কমিশন কাজ শুরু করতে পারবে বলে আমি আশা করছি।

প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে ‘জাতীয় ঐক্যমত গঠন কমিশন’
নির্বাচন কবে হতে পারে জানালেন প্রধান উপদেষ্টা
এর আগে দেওয়া ভাষণে আগামী বছর ২০২৫ সালের শেষ থেকে ২০২৬ সালের প্রথমার্ধে দেশে জাতীয় নির্বাচন হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, যদি অল্প কিছু সংস্কার করে ভোটার তালিকা নির্ভুলভাবে তৈরি করার ভিত্তিতে নির্বাচন সম্পন্ন করতে হয় তাহলে ২০২৫ সালের শেষের দিকে নির্বাচন অনুষ্ঠান হয়তো সম্ভব হবে। আর যদি এর সঙ্গে নির্বাচন প্রক্রিয়া এবং নির্বাচন সংস্কার কমিশনের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে এবং জাতীয় ঐক্যমতের ভিত্তিতে প্রত্যাশিত মাত্রার সংস্কার যোগ করি তাহলে আরও অন্তত ছয় মাস অতিরিক্ত সময় লাগতে পারে। মোটাদাগে বলা যায়, ২০২৫ সালের শেষ দিক থেকে ২০২৬ সালের প্রথমার্ধের মধ্যে নির্বাচনের সময় নির্ধারণ করা যায়।

দেশবাসীকে মহান বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমি সব প্রধান সংস্কারগুলো সম্পন্ন করে নির্বাচন আয়োজন করার ব্যাপারে বারবার আপনাদের কাছে আবেদন জানিয়ে এসেছি।

সরকারপ্রধান আরও বলেন, প্রথমে সবচেয়ে বড় কাজ ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা। এটা এমনিতেই কঠিন কাজ। এখন কাজটা আরও কঠিন হলো এজন্য যে, গত তিনটি নির্বাচনে ভোটারদের অংশগ্রহণ করার সুযোগ ছিল না। ভোটার তালিকা যাচাই করার সুযোগ হয়নি কারো। গত ১৫ বছরে যারা ভোটার হওয়ার যোগ্য হয়েছে তাদের সবার নাম ভোটার তালিকায় তোলা নিশ্চিত করতে হবে। এটা একটা বড় কাজ। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর এখানে গলদ রাখার কোনো সুযোগ নেই। দীর্ঘদিন পর এবার বহু তরুণ-তরুণী জীবনে প্রথমবারের মতো ভোট দেবে। অতীতে তাদের সে অধিকার এবং আনন্দ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিল।

এবারের নির্বাচনে তরুণদের ভোটদান একটি স্মরণীয় ঘটনা হয়ে থাকবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই অভিজ্ঞতাকে মসৃণ করার সব আয়োজন করতে হবে। আমার একান্ত ইচ্ছা এবারের নির্বাচনে প্রথমবারের তরুণ-তরুণী ভোটাররা শতকরা ১০০ ভাগের কাছাকাছি সংখ্যায় ভোট দিয়ে একটি ঐতিহ্য সৃষ্টি করুক। নির্বাচন কমিশন এবং সব সামাজিক প্রতিষ্ঠান ও রাজনৈতিক দলের প্রতি আমার আহ্বান- সবাই মিলে আমরা যেন এই লক্ষ্য অর্জনে নানা ধরনের সৃজনশীল কর্মসূচি গ্রহণ করি। এখন থেকে সবাই মিলে এমন একটা ঐতিহ্য সৃষ্টি করতে পারি যে, স্থানীয় নির্বাচনসহ সব নির্বাচনে সব কেন্দ্রে প্রথমবারের ভোটাররা ১০০ শতাংশের কাছাকাছি সংখ্যায় ভোটদান নিশ্চিত করবে। এটা নিশ্চিত করতে পারলে ভবিষ্যতে কোনো সরকার মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার সাহস করতে পারবে না।

আগামী নির্বাচনে প্রবাসীদের ভোটদান নিশ্চিত করার ব্যাপারে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, অতীতে আমরা এ ব্যাপারে অনেকবার আশ্বাসের কথা শুনেছি। এই সরকারের আমলে এটা যেন প্রথমবারের মতো বাস্তবায়িত হয় এটা আমরা নিশ্চিত করতে চাই। এর জন্য একটা নির্ভরযোগ্য ব্যবস্থা করতে হবে। সবকিছুই সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। এর সঙ্গে যদি আমরা নির্বাচন প্রক্রিয়া আরও উন্নত করতে চাই, নির্বাচন সংস্কার কমিশনের সুপারিশমালা বাস্তবায়ন করতে চাই, তাহলে প্রয়োজনীয় সংস্কারের বিস্তৃতি ও গভীরতা অনুসারে নির্বাচন কমিশনকে সময় দিতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩:২২:২১ ● ৩১ বার পঠিত