শুক্রবার ● ২২ নভেম্বর ২০২৪
চড়া শীতের সবজি, বাকি সবগুলোর কি অবস্তা ?
Home Page » আজকের সকল পত্রিকা » চড়া শীতের সবজি, বাকি সবগুলোর কি অবস্তা ?বঙ্গনিউজ ডেস্কঃ সরবরাহ কমায় সপ্তাহ ব্যবধানে বাজারে ফের বাড়তে শুরু করেছে বেশিরভাগ শাক-সবজির দাম। তবে কিছুটা স্থিতিশীল রয়েছে মাছ ও মাংসের বাজার।
শুক্রবার (২২ নভেম্বর) কেরানীগঞ্জের আগানগর এবং রাজধানীর নয়াবাজার, নিউমার্কেট ও কারওয়ানবাজারসহ বেশকটি বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।
বাজারে মানভেদে প্রতি কেজি বেগুন ৭০-৮০ টাকা, করলা ৬০-৭০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৬০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, মুলা ৪০ টাকা, লতি ৭০ টাকা, কহি ৬০ টাকা, ধুন্দুল ৫০ টাকা ও পটোল ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি কেজি পেঁপে ৪০ টাকা, গাজর ১৩০ টাকা, কচুরমুখী ৮০ টাকা, টমেটো ১২০ টাকা, শিম ১০০ টাকা, শালগম ১২০ টাকা ও শসা বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়।
এছাড়া প্রতি কেজি ধনেপাতা ৭০ টাকা, পেঁয়াজের কালি ৫০-৬০ টাকা ও চিচিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়। আর মানভেদে প্রতি পিস ফুলকপি ৪০ টাকা, বাঁধাকপি ৫০ টাকা এবং লাউয়ের জন্য গুনতে হচ্ছে ৫০-৭০ টাকা।
বাজারে লালশাকের আঁটি ১০ টাকা, পাটশাক ১০-১৫ টাকা, পুঁইশাক ৩০-৪০ টাকা, মুলাশাক ১০ টাকা, ডাঁটাশাক ১০-১৫ টাকা, কলমিশাক ১০ টাকা ও পালংশাক বিক্রি হচ্ছে ১৫-২০ টাকায়।
বিক্রেতারা বলছেন, সরবরাহ কমায় বাজারে বাড়তে শুরু করেছে সবজির দাম। রাজধানীর কারওয়ানবাজারের সবজি বিক্রেতা আনিস বলেন,
শীতকালীন সবজি আসায় দাম কমার কথা। কিন্তু চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত সবজি না আসায় দাম বাড়ছে।
কেরানীগঞ্জের আগানগর বাজারের সবজি বিক্রেতা হাবিবুর বলেন, সপ্তাহ ব্যবধানে কেজিপ্রতি ৫-১০ টাকা বেড়ে গেছে সবজির দাম। সরবরাহ না বাড়লে দাম কমার সম্ভাবনা নেই।
ক্রেতাদের দাবি, ফের সবজির বাজার অস্থিতিশীল করা চেষ্টা করছেন ব্যবসায়ীরা। সুরঞ্জরন নামে এক ক্রেতা বলেন,
লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়া সবজির দাম অনেকটাই নাগালে এসেছিল; তবে ফের এটি বাড়ানোর পাঁয়তারা চলছে। এখনই বাজারে অভিযান পরিচালনা না করলে আবার দাম ১০০ টাকা ছাড়াবে।
তবে দাম কমছে কাঁচা মরিচের। খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়, আর পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৭০-৮০ টাকা দরে। বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে সরবরাহ বেড়েছে কাঁচা মরিচের। এতে পাইকারি ও খুচরা উভয় পর্যায়েই কমেছে দাম।
বাজারে সবজির দাম বাড়লেও স্থিতিশীল রয়েছে ডিম ও মাংসের দাম। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৮০-১৯০ টাকা, সোনালি মুরগি ৩০০ থেকে ৩১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া দেশি মুরগি ৫৫০-৬০০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৩০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ২৮০ টাকায়। আর জাতভেদে প্রতি পিস হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৫৫০-৬০০ টাকায়।
বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৮০-১৯০ টাকায়।
মুরগি ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে সরবরাহ ঠিক থাকায় দাম বাড়েনি। তবে সামনে বিয়ের মৌসুম আসছে। সে সময় আবারও বাড়তে পারে মুরগির দাম। রাজধানীর কারওয়ানবাজারের মুরগি ব্যবসায়ী দিদার বলেন,
বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক আছে। কিন্তু চাহিদা বাড়লে দাম বেড়ে যেতে পারে। কারণ ইতোমধ্যে বিয়ের মৌসুম শুরু হয়ে গেছে।
অপরিবর্তিত আছে গরু ও খাসির মাংসের দামও। প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮০০ টাকায়। এছাড়া প্রতি কেজি খাসির মাংস ১ হাজার ৫০ টাকা থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা এবং ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকায়।
আর বর্তমানে প্রতি ডজন লাল ডিম খুচরা পর্যায়ে ১৪৪-১৪৫ টাকা ও সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪৪ টাকায়। আর প্রতি ডজন হাঁসের ডিম ২৪০-২৫০ টাকা ও দেশি মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকায়।
নতুন করে দাম বাড়েনি চালেরও। বিক্রি হচ্ছে আগের বাড়তি দামেই। রাজধানীর কারওয়ানবাজারের বরিশাল রাইছ এজেন্সির বিক্রেতা জানান, নতুন করে আর না বাড়লেও চালের দাম কমেনি। বাজারে প্রতি কেজি মিনিকেট ৭০-৭২ টাকা, আটাইশ ৬০-৬২ টাকা, নাজিরশাইল ৭৬-৮২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে আমন ধান উঠা শুরু হলে বাজারে দাম কমতে শুরু করবে।
সুখবর নেই মাছের দামেও। বিক্রি হচ্ছে আগের বাড়তি দামেই। প্রতি কেজি রুই ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, কাতল ৪০০ থেকে ৪৮০ টাকা, চাষের শিং ৫৫০ টাকা, চাষের মাগুর ৫০০ টাকা, চাষের কৈ ২৪০ থেকে ২৮০ টাকা, কোরাল ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা, টেংরা ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকা, চাষের পাঙাশ ১৮০ থেকে ২৩০ টাকা ও তেলাপিয়া ১৮০ থেকে ২২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া প্রতি কেজি বোয়াল ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, পোয়া ৪৫০, পাবদা ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, আইড় ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা, দেশি কৈ ১ হাজার ৩০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা, শিং ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা, শোল ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকা এবং নদীর পাঙাশ বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায়।
দাম না বাড়লেও বাজারে দেখা নেই পর্যাপ্ত ইলিশের। খুচরা পর্যায়ে দেড় কেজি ওজনের ইলিশ কেজি হারে বিক্রি হচ্ছে ২২০০-২৩০০ টাকায়, আর এক কেজি ওজনের ১৬০০-১৭০০ টাকায়। ৮০০-৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৫০০-১৬০০ টাকা হারে, আর ৫০০-৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের জন্য গুনতে হচ্ছে ১৩০০-১৪০০ টাকা পর্যন্ত।
বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে ইলিশ কম আসছে। নতুন করে দাম বাড়েনিও। তবে অন্যান্য মাছের দাম এখনও বেশ চড়া।
নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত বাজার মনিটরিংয়ের দাবি ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়েরই। ক্রেতারা বলছেন, নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হয় না। এতে বিক্রেতারা ইচ্ছেমতো দাম বাড়ানোর সুযোগ পান।
আর বিক্রেতারা বলছেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছেন। বাজারে নিয়মিত অভিযান চালালে অসাধুদের দৌরাত্ম্য কমবে।
বাংলাদেশ সময়: ১০:১৪:০৫ ● ২৫ বার পঠিত