সোমবার ● ২৬ আগস্ট ২০২৪
কুমিল্লার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, ১৪ উপজেলায় ভয়াবহ রূপ
Home Page » আজকের সকল পত্রিকা » কুমিল্লার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, ১৪ উপজেলায় ভয়াবহ রূপবঙ্গনিউজ ডেস্কঃ দেশে চলমান বন্যায় কিছু অঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও কুমিল্লা জেলার বন্যা পরিস্থিতি প্রতিনিয়ত অবনতির দিকেই যাচ্ছে। জেলার ১৭টি উপজেলার মধ্যে ১৪টি উপজেলাতেই ভয়াবহ রূপ নিয়েছে আকস্মিক এই বন্যা। জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, ১৪ উপজেলায় পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা প্রায় ১০ লাখ। তবে স্থানীয় সূত্রের ভাষ্য, এ সংখ্যা আরও অনেক বেশি হবে।
পুরোপুরি প্লাবিত হয়ে এখন পানিতে ভাসছে কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা। এ উপজেলায় বর্তমানে পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা ৭০ হাজারের বেশি। এদিকে, গোমতী নদীর পানি কিছুটা কমলেও এখনো বিপৎসীমার ৪২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি ভয়াবহতা সৃষ্টি করছে জেলার বুড়িচং উপজেলায়।
ভেঙে যাওয়া নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ দিয়ে প্রতিনিয়ত স্রোতের পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে। এতে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। বুড়িচংয়ে এখনো লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে।
এদিকে, জেলার দক্ষিণাঞ্চলের মনোহরগঞ্জ, লাকসাম ও নাঙ্গলকোট উপজেলায় বৃদ্ধি পেয়েছে বন্যাার পানি।
রবিবার রাত থেকে অনবরত বৃষ্টি হতে থাকায় এসব এলাকার মানুষ আতঙ্কে দিন পার করছেন। মনোহরগঞ্জ উপজেলায় অনেক আশ্রয় কেন্দ্রও এখন পানির নিচে। এখানে চারদিকে ত্রাণের জন্য হাহাকার। মনোহরগঞ্জ ও নাঙ্গলকোট উপজেলার বেশিরভাগ প্রত্যন্ত অঞ্চলে এখনো পৌঁছায়নি ত্রাণ সহায়তা। রয়েছে বিশুদ্ধ পানির চরম সংকট।
জেলার চৌদ্দগ্রামে পানি কিছুটা কমলেও ত্রাণ ও বিশুদ্ধ পানির অভাবে মানুষ ভয়াবহ কষ্টে রয়েছেন।
সোমবার কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জমান বলেন, গোমতীর পানি এখনো বিপৎসীমার ৪২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি না কমলে বাঁধ মেরামত করা সম্ভব না। পানি না কমা পর্যন্ত নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হতেই থাকবে।
সোমবার (২৬ আগস্ট) কুমিল্লার জেলা প্রশাসক খন্দকার মুশফিকুর রহমান বলেন, জেলার ১৪টি উপজেলায় ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। এখন পর্যন্ত জেলায় ৯ লাখ ৫১ হাজার ১০৯ জন পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। আর আশ্রয় কেন্দ্রে এসেছেন ৬৬ হাজার ৯৬৬ জন। জেলার বন্যাকবলিত উপজেলাগুলোর দুর্গত এলাকার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। বন্যাকবলিত মানুষের মাঝে শুকনা খাবার, স্যালাইন ও ওষুধ বিতরণ করা হচ্ছে। ত্রাণসামগ্রী বিতরণও অব্যাহত আছে।
এদিকে পানিবন্দি পরিবারের সদস্যদের নিরাপদ আশ্রয়ে আনতে উদ্ধার দলসহ স্বেচ্ছাসেবী ও সামাজিক সংগঠনের সদস্যদের নিয়ে উদ্ধার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে উপজেলা প্রশাসন। পর্যাপ্ত নৌকা সংকটের কারণে ঢাকা থেকে ড্রাম এনে ভেলা তৈরি করে উদ্ধার কাজ চলমান রাখা হয়েছে কিছু জায়গায়। আশ্রয় কেন্দ্রে আনা বন্যার্তসহ বন্যাদুর্গতদের দেওয়া হচ্ছে শুকনো খাবার ও নিরাপদ পানি। তবে এটি চাহিদার তুলনায় সামান্য। এজন্য মানুষের দুর্ভোগ ও কষ্ট বেড়েই চলেছে। দেখা দিয়েছে তীব্র বিশুদ্ধ পানির সংকট। বেশিরভাগ স্থানেই মানুষ সহায়তা নিয়ে গেলেও প্রবেশ পথে জটলা বেধে থাকা ডাঙার মানুষজন কৌশলে ত্রাণ নিয়ে যাচ্ছেন। এতে বঞ্চিত হচ্ছেন বানভাসিরা। জেলার বন্যা কবলিত উপজেলাগুলোর প্রত্যন্ত অঞ্চলে ত্রাণ না পৌছায় কষ্টে হাহাকার করছেন বানভাসি মানুষ।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:১৮:৫১ ● ৭৯ বার পঠিত