মঙ্গলবার ● ২০ আগস্ট ২০২৪
ভর্তি পরীক্ষায় বহুনির্বাচনী পদ্ধতি বাতিলের সুপারিশ
Home Page » আজকের সকল পত্রিকা » ভর্তি পরীক্ষায় বহুনির্বাচনী পদ্ধতি বাতিলের সুপারিশবঙ্গনিউজ ডেস্কঃ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় বহুনির্বাচনী পদ্ধতি বাদ দিয়ে বুদ্ধিমত্তা-দক্ষতাভিত্তিক ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতি চালুর সুপারিশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক। গতকাল সোমবার শিক্ষক নেটওয়ার্ক আয়োজিত ‘কেমন বিশ্ববিদ্যালয় চাই’ শীর্ষক সভায় লিখিত বক্তব্যে এ সুপারিশ করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
দীর্ঘ সুপারিশপত্রে পাবলিক-প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ, প্রশাসন, সিলেবাস ইত্যাদি বিষয়ে নানা সুপারিশ উল্লেখ করা হয়। সুপারিশগুলোর মধ্যে আছে– প্রথম বর্ষে সবাইকে হলে আসন দেওয়া; তারপর মেধা ও চাহিদার ভিত্তিতে এগিয়ে থাকাদের মধ্যে আসন বণ্টন হতে পারে। স্নাতকের সব ক্লাসে ৪০ শিক্ষার্থীর মধ্যে সীমিত রাখা; শিক্ষার্থীদের অন্তত তিনটি ভাষা শেখার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখা; তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষতার জন্য আলাদা ইনস্টিটিউট খোলা এবং সব বিভাগের আবশ্যিক আধা-আবশ্যিক কোর্স হিসেবে এতে অন্তর্ভুক্ত করা। ঢালাওভাবে স্নাতকোত্তরের সুযোগ না রেখে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদেরই সুযোগ দেওয়া; এতে গবেষণানির্ভর করে বিশ্বের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো ঢেলে সাজানো; একাধিক মাস্টার্স করার সুযোগ চাহিদা সাপেক্ষে তৈরি করা আবশ্যক।
দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সংস্কারে সুপারিশের মধ্যে আছে– বিশ্বের অন্যান্য দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রচলিত পদ্ধতি নিয়ে গবেষণা করে শিক্ষক নিয়োগ পদ্ধতি ঠিক করা ও বাইরের দেশ থেকে ভিজিটিং প্রফেসর নিয়োগ করা। বিভাগকেন্দ্রিক শিক্ষক-সিন্ডিকেটের অবসান ঘটানো, যা শিক্ষার্থীদের ফলাফল নিয়ন্ত্রণ ও অনৈতিক প্রভাব বিস্তারে সাহায্য করে। উচ্চতর গবেষণায় একটা সম্পূর্ণ পূর্ণকালীন পিএইচডি প্রোগ্রাম চালু করা। প্রাথমিক পরিকল্পনাটা হতে পারে এ রকম: প্রতিবছর অনুষদের সক্ষমতা বিবেচনায় পিএইচডিতে ভর্তি (সর্বোচ্চ ১০০ জন); তিন বছরের মধ্যেই প্রথম ব্যাচ ডিগ্রি শেষ করবে। ভর্তিকৃতদের সপরিবার আবাসিক সুবিধা দেওয়া এবং প্রথম শ্রেণি বেতন সমপরিমাণ বৃত্তি বরাদ্দ করা। দেশের এবং বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত বিদেশে কর্মরতদের দুটি দল সুপারভাইজ করবে।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিদেশে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি গ্রহণের বিদ্যমান সরকারি তহবিল বাতিল করে সেই তহবিল দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের মানসম্পন্ন স্নাতকোত্তর গবেষণার জন্য ব্যয় করতে হবে। এ ছাড়া বিষয়ভিত্তিক প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার ও উন্নত আন্তর্জাতিক জার্নালের অ্যাকসেস ও প্রকাশনার জন্য শিক্ষকদের প্রণোদনা দেওয়া এবং শিক্ষকদের বৈশ্বিক গবেষণা তহবিল আনার সাফল্যের জন্য প্রণোদনা, মূল্যায়ন ও প্রশাসনিক সহযোগিতা দেওয়া ইত্যাদি সুপারিশ করা হয়।
দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কয়েকটি সংকট চিহ্নিত করেছে শিক্ষক নেটওয়ার্ক। এগুলো হলো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নিজের স্বার্থে সরকারের কর্তৃত্ব; ইউজিসির কৌশলপত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের আয় বাড়ানোর চাপ দেওয়া এবং সরকারি বরাদ্দ কমানোয় গুরুত্ব দেওয়ায় মেধাবীদের উচ্চশিক্ষা কঠিন হয়ে পড়ছে।
সভায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন, অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ৯:২৭:০০ ● ৪৮ বার পঠিত