বৃহস্পতিবার ● ৮ আগস্ট ২০২৪

ড. ইউনূসকে সর্বতোভাবে সহযোগিতা করব

Home Page » জাতীয় » ড. ইউনূসকে সর্বতোভাবে সহযোগিতা করব
বৃহস্পতিবার ● ৮ আগস্ট ২০২৪


সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান

বঙ্গনিউজ ডেস্কঃ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শপথ হতে পারে আজ বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে। নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সদস্য ১৫ জন কিংবা দু-একজন বেশিও হতে পারেন। গতকাল বুধবার বিকেলে সেনাসদরে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

সেনাপ্রধান বলেন, ‘কিছুক্ষণ আগে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। কথা বলে খুব ভালো লাগছে। আমার মনে হয়েছে, এই কাজটা (প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন) করতে তিনি অত্যন্ত আগ্রহী। আমি নিশ্চিত, তিনি আমাদের সুন্দর একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হবেন এবং এতে আমরা উপকৃত হবো।’

পরিস্থিতি অনেক শান্ত হয়ে আসছে উল্লেখ করে সেনাপ্রধান বলেন, ‘পুলিশ এখন ডিউটিতে নেই। পুলিশে একটা শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে। সেনাবাহিনীর স্ট্রেংথ দিয়ে এটা পূরণ করা সম্ভব না। তার পরও আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। অনেক পুলিশ সদস্য, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রেসকিউ (উদ্ধার) করেছি। বিমানবন্দর, কূটনীতিকপাড়া, সচিবালয়, বিচারকদের বাসভবনসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় আমরা নিরাপত্তা দিচ্ছি, টহল দিচ্ছি। তার পরও প্রাথমিকভাবে দু-এক দিন কিছু জায়গায় হামলা হয়েছে। আমরা এতে দুঃখিত ও বিব্রত। কিন্তু যারা এসব অপরাধ করেছে, তাদের ছাড় দেব না। অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। রাজনৈতিক নেতারা কথা দিয়েছিলেন এগুলো হবে না। তার পরও যদি কোনো ব্যর্থতা থাকে, এটা আমার। তিন-চার দিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে।’

ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, ‘বৃহস্পতিবার (আজ) দুপুরের দিকে ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশে আসবেন। আমি তাঁকে রিসিভ করতে (অভ্যর্থনা জানাতে) যাব। আমরা তাঁকে সর্বতোভাবে সহায়তা করব। আমরা নিশ্চিত, সবাই সহযোগিতা করলে তিনি অত্যন্ত সফলভাবে এ কাজ সমাধান করতে সক্ষম হবেন।’

এক প্রশ্নের জবাবে সেনাপ্রধান বলেন, ‘আগামীকাল (আজ) উপদেষ্টাদের শপথ গ্রহণের জন্য আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। একটি প্রস্তাব ছিল বিকেল বেলায়। কিন্তু বিকেলে খুব টাইট হয়ে যেতে পারে। ড. ইউনূস হয়তো ২টা ১০ মিনিটে দেশে পৌঁছাবেন। রাত ৮টার দিকে শপথ হতে পারে। সেখানে ৪০০ জন থাকবেন।

সেনাপ্রধান আরও বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত করতে চাচ্ছি, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী সর্বদা জনগণের সঙ্গে আছে এবং থাকবে। আমরা একসঙ্গে কাজ করে যাব। আমরা দেশকে সুন্দর ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যেতে পারব। একটি চমৎকার পরিবেশে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। অনেক ধরনের গুজব চলছে। জনগণকে আহ্বান করব, তারা যেন গুজবে কান না দেয়। সেনানিবাসে বিভিন্ন কিছু হচ্ছে– এমন গুজব চলছে। এগুলোতে কান দেবেন না। এগুলো ছড়াতে সাহায্য করবেন না। নিশ্চিত না হয়ে কাউকে খবর দেওয়া থেকে বিরত থাকবেন।’

সেনাপ্রধান বলেন, ‘আমরা অনেক আলোচনা করে ড. ইউনূসকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে নির্বাচিত করেছি। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, শিক্ষার্থীদের সমন্বয়কদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আলোচনা করে আমরা সর্বসম্মতভাবে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রস্তাব দিয়েছি। তিনি রাজি হয়েছেন। সফলভাবে কাজ সম্পন্ন করতে পারবেন। সেনাপ্রধান, নৌবাহিনী প্রধান, বিমানবাহিনী প্রধান, সব রাজনৈতিক দল, শিক্ষার্থী– সবার কাছ থেকে তিনি সহযোগিতা পাবেন।’

শিক্ষার্থী ও স্বেচ্ছাসেবকরা খুব ভালো কাজ করছেন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশ ছিল না। তারা ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করছেন, রাস্তা পরিষ্কার করছেন। যেসব স্থাপনায় ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে, সেগুলো পরিষ্কার করছেন। তাদের অনুরোধ করব, যেন এই ভালো কাজ চালিয়ে যান। আমি নিশ্চিত, আমরা সবাই মিলে সুন্দর-স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে ফিরে যাব। খুব কম সময়ের মধ্যে একটি স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফেরত এসেছে। আমাদের আরও অনেক কাজ করতে হবে। আমাকে একটু সময় দিন। স্বাভাবিক পরিস্থিতি নিয়ে আসব।’ গণমাধ্যম ইতোমধ্যে অত্যন্ত দায়িত্বপূর্ণভাবে সংবাদ পরিবেশন করছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, ‘পুলিশ পুনর্গঠন কাজ চলছে। ইতোমধ্যে পুলিশপ্রধান নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। খুব শিগগির পুলিশ প্রফেশনালি কাজ শুরু করতে পারবে বলে আশা করি। পুলিশ একটি বিরাট ফোর্স। সেই ফোর্স এখন ডিউটিতে নেই। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’

বাংলাদেশ সময়: ১২:৫৪:০৩ ● ১৫৩ বার পঠিত