রবিবার ● ২৩ জুন ২০২৪

আবারও কি রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আশ্রয় নিচ্ছে !

Home Page » জাতীয় » আবারও কি রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আশ্রয় নিচ্ছে !
রবিবার ● ২৩ জুন ২০২৪


ফাইল ছবি- রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ

বঙ্গ-নিউজ: সম্প্রতি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে তীব্র সংঘাতের জের ধরে কিছু রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে প্রবেশ করার চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছেন এক শীর্ষ শরণার্থী কর্মকর্তা। যদিও ঢাকা জোর দিয়ে বলেছে যে, যুদ্ধবিধ্বস্ত প্রতিবেশী দেশ থেকে আর কোনো শরণার্থীকে তারা আশ্রয় দিতে পারবে না।

গত কয়েক দশক ধরেই বৌদ্ধপ্রধান মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে রোহিঙ্গারা। ২০১৭ সালে রাখাইনে সেনা অভিযানের পর বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন বিষয়ক বাংলাদেশি কর্মকর্তা মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, কক্সবাজারের বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে আশ্রিত প্রায় ১০ লক্ষ রোহিঙ্গার সংখ্যা আরও বেড়েছে। নতুন করে রোহিঙ্গারা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে বলে তথ্য পেয়েছে তার দপ্তর।

দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলীয় অঞ্চলে কর্মরত রহমান রয়টার্সকে বলেন, ‘কিছু লোক বিভিন্নভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ করে বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। আমি মনে করি, কিছু লোককে অনানুষ্ঠানিকভাবে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে।’

গত বছরের শেষের দিকে মিয়ানমারের অন্যতম শক্তিশালী জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) সঙ্গে যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার পর থেকেই রাখাইনে পুনরায় সংঘাত শুরু হয়।

এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে এএ এবং মিয়ানমারের সামরিক জান্তার মুখপাত্রদের সঙ্গে রয়টার্সের পক্ষ থেকে টেলিফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোনো সাড়া মেলেনি।

২০২১ সালে ক্ষমতা দখলের পর থেকে এখনই জান্তা সবচেয়ে দুর্বল অবস্থানে রয়েছে। দেশব্যাপী বিদ্রোহী হামলার মুখে পড়ে এএ উপকূলীয় প্রদেশটির নয়টি গুরুত্বপূর্ণ শহর দখল করে নিয়েছে এবং আরও অঞ্চল দখলের জন্য তাদের আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।

গত মে মাসে এএ জানায়, তারা রোহিঙ্গা অধ্যুষিত বুথিডং শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। অভিযান চলাকালীন সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের সদস্যদের ওপর তারা হামলা চালিয়েছে- এমন অভিযোগ উঠেছে। যদিও বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

গত রবিবার এএ বুথিডংয়ের পশ্চিমে অবস্থিত রোহিঙ্গা অধ্যুষিত শহর মংডুর বাসিন্দাদের সতর্ক করে বলে, পরিকল্পিত আক্রমণের আগে তারা যেন শহর ছেড়ে চলে যান।

অসহায় অবস্থা

তবে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে কারণ বের হওয়ার সকল পথ বন্ধ থাকায় মংডুর বাসিন্দাদের পালানোর আর কোনো জায়গা নেই। একজন রোহিঙ্গা নেতা এবং জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধানও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এলাকাটিতে প্রায় ৭০ হাজার রোহিঙ্গা আটকা পড়ে আছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

মিজানুর রহমান বলেন, রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে তিনি বার্তা পেয়েছেন যে, এএ’র আক্রমণের ফলে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী মংডুতে আরও বেশি সংখ্যক মান্তা বাস্তুচ্যুত হতে পারে।

জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি বিভিন্ন সংস্থার, বিশেষ করে ইউএনএইচসিআর’র কাছ থেকে চিঠি পাচ্ছি। তারা তাদের অসহায় অবস্থার কথা জানাচ্ছে, কিভাবে তারা আটকা পড়ে আছে এবং তারা বাংলাদেশে আসতে চায়, আশ্রয় চায়।’

এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে রয়টার্সের পক্ষ থেকে ইউএনএইচসিআর’র কাছে ইমেইল পাঠানো হলেও তাৎক্ষণিকভাবে কোনো উত্তর মেলেনি।

এছাড়াও বাংলাদেশের পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছেও এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে ইমেইল পাঠানো হলেও তারা কোনো উত্তর দেয়নি।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা জানান, রোহিঙ্গা ইস্যুতে সরকারের নীতিতে কোনো পরিবর্তন আসেনি।

বৃহস্পতিবার মংডুর একজন বাসিন্দা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুকতা প্রকাশ করে রয়টার্সকে জানান, এএ কাছে এগিয়ে আসার কারণে বিমান হামলা এবং গোলাবর্ষণের আশঙ্কায় শহরের কিছু বাসিন্দা কাছের গ্রামে চলে গেছেন। গোলা ও বোমার আঘাতে অনেক মানুষ আহতও হয়েছেন।

সূত্র: রয়টার্স

বাংলাদেশ সময়: ১১:১৮:২০ ● ৮৫ বার পঠিত