সোমবার ● ১৫ জানুয়ারী ২০২৪
শিশুর ডায়রিয়া হলে করণীয়
Home Page » প্রথমপাতা » শিশুর ডায়রিয়া হলে করণীয়প্রকৃতিতে শীত জেঁকে বসেছে। শীত এলেই ঠান্ডা-কাশির পাশাপাশি শিশুরা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়।
ডায়রিয়া খাদ্য ও পানিবাহিত রোগ। দুই বছরের নিচে শিশুর ডায়রিয়ার প্রধান কারণ রোটা ভাইরাসজনিত সংক্রমণ। এই ভাইরাসজনিত ডায়রিয়া সাধারণত তিন থেকে সাত দিন পর্যন্ত থাকতে পারে। ডায়রিয়ার সবচেয়ে বড় জটিলতা হলো পানিশূন্যতা। পানিশূন্যতা দেখা দিলে শিশু দুর্বল হয়ে পড়ে। শিশুর প্রস্রাব কমে যায় বা বন্ধ হয়ে যায়, এমনকি শিশুর প্রাণহানি হতে পারে।
শিশুর পানিশূন্যতা বোঝার উপায়
অস্থির ভাব, খিটখিটে মেজাজ বা নিস্তেজ হয়ে যাওয়া, চোখ গর্তে ঢুকে যাওয়া; তৃষ্ণার্ত ভাব বা একেবারেই খেতে না পারা; বারবার বমি হওয়া; চামড়া ঢিলা হয়ে যাওয়া।
পানিশূন্যতার মাত্রাভেদে শিশুর চিকিৎসা নির্ধারণ করা হয়। উপরোল্লিখিত লক্ষণগুলোর যে কোনো একটি থাকলেই শিশুকে হাসপাতালে নিতে হবে।
পানিশূন্যতা রোধে যা করতে হবে
শিশুকে বেশি করে খাওয়ার স্যালাইন ও তরল খাবার, যেমন– ভাতের মাড়, চিড়ার পানি, ডাবের পানি, টক দই, ঘোল, ফলের রস ও লবণ-গুড়ের শরবত খেতে দিন। ডায়রিয়া হলে শরীর থেকে যে পানি ও লবণ বের হয়ে যায়, স্যালাইন তা পূরণ করে। সম্পূর্ণ এক প্যাকেট ছাড়া গুলাবেন না। এতে লবণের মাত্রা কমবেশি হতে পারে এবং শিশুর মারাত্মক সমস্যা দেখা দিতে পারে। প্রতিবার পায়খানার পর ১০ থেকে ১৫ চামচ স্যালাইন শিশুকে খেতে দিন। পাশাপাশি শিশুকে পুষ্টিকর খাবার দিন।
শিশুর বয়স যদি ছয় মাসের কম হয়, তাহলে তাকে বারবার মায়ের দুধ খেতে দিন। শিশুর বয়স ছয় মাসের বেশি হলে বুকের দুধের পাশাপাশি পরিবারের খাবার অবশ্যই দিতে হবে। অনেক পরিবার ডায়রিয়া হলে শিশুকে মাছ, মাংস, ডাল, কলা, শাকসবজি খেতে দেয় না। শুধু চালের গুঁড়া, বার্লি বা জাউভাত খেতে দেয়। অসুস্থ অবস্থায় স্বাভাবিক খাবার খেতে না দিলে পরে শিশুর অপুষ্টি দেখা দিতে পারে। কাঁচকলা সেদ্ধ করে নরম ভাতের সঙ্গে চটকে দিন বা খিচুড়ির সঙ্গে কাঁচকলা দিন। সারাদিন কমপক্ষে ছয়বার, অর্থাৎ তিন-চার ঘণ্টা পরপর শিশুকে খাবার দিন। অল্প করে দিলে শিশুর পক্ষে খাবার হজম করা সহজ হবে। ১৫ দিনের জন্য জিঙ্ক সিরাপ বা বড়ি খেতে দিন।
ডায়রিয়া শুরু হলেই অ্যান্টিবায়োটিক বা মেট্রোনিডাজল জাতীয় ওষুধ খাওয়াবেন না। পায়খানা বন্ধ করার কোনো ওষুধ নেই। সম্ভব হলে শিশুর বয়স ছয় মাসের কম হলে রোটা ভাইসের টিকা দিন।
লেখক : অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান শিশু বিভাগ, জাতীয় হদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল।
বাংলাদেশ সময়: ১৫:৪৯:৪০ ● ১৪৭ বার পঠিত