সোমবার ● ১১ ডিসেম্বর ২০২৩

কুয়াশা উৎসবে মেতেছে কবি কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়

Home Page » শিক্ষাঙ্গন » কুয়াশা উৎসবে মেতেছে কবি কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়
সোমবার ● ১১ ডিসেম্বর ২০২৩


কুয়াশা উৎসবে মেতেছে কবি কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়

রোববার ভোরে শুকনী বিলে অবস্থিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারপাশ ছিল ঘন কুয়াশায় ঢাকা। এর মধ্যে ‘হারাবার আগে পায়ে মাখো শিশির, কুয়াশার মাঠে বাড়ুক প্রাণের ভিড়’ স্লোগানে শুরু হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক-শিক্ষার্থী আয়োজিত তৃতীয়বারের মতো ১০ ও ১১ ডিসেম্বর দুই দিনব্যাপী কুয়াশা উৎসব।

কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে খোলা মঞ্চে শুরু হয়েছে গান। বিভিন্ন ফেস্টুন, ব্যানার, প্রতিকৃতির মাধ্যমে পুরো খেলার মাঠ সাজানো হয়েছে। সেই কুয়াশা উৎসবে দল বেঁধে ঘুরছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ অনেকেই। অনেকেই ব্যস্ত সেলফি ও ছবি তোলায়। বিশ্ববিদ্যালয়ে সবার মধ্যে যেন উৎসবের আমেজ।

নানা আয়োজনে রোববার আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী কুয়াশা উৎসব। উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য সৌমিত্র শেখর। এ উৎসব আয়োজন চলবে সোমবার মধ্যরাত পর্যন্ত।

শীতের গ্রামীণ আবহে সাজানো হয়েছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ। ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে গ্রামবাংলার লোকসংস্কৃতিকে।

এ উৎসব আয়োজনে রয়েছে আবহমান গ্রামবাংলার নানা ঐতিহ্য বহন করে এমন সব অনুষ্ঠান। রয়েছে আদিবাসী নৃত্য, গান ও কবিতা, লোকগান, কীর্তন, চিত্রকলা, চলচ্চিত্র ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী, রাগ সঙ্গীত, যন্ত্রসঙ্গীত, আবৃত্তি, সাহিত্য আলোচনা, রম্য বিতর্ক, নাট্য পরিবেশনা, নৃত্য পরিবেশনা, রস উৎসব, পিঠা পার্বণ, পালাসহ নানা আয়োজন। আরও আসছেন কফিল আহমেদ ও সহজিয়া ব্যান্ড।

২০১৯ সালে প্রথমবার কুয়াশা উৎসবের আয়োজন করা হয়। এবার চলছে তৃতীয়বারের আয়োজন।

দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের প্রথম দিন রোববার বাংলা গান, নাটক, সাহিত্যবিষয়ক আলোচনা, কবিতা পাঠ, আদিবাসীদের পরিবেশনা ও লোকগান চলবে রাত পর্যন্ত।

বিশ্ববিদ্যালয় উপজাতি শিক্ষার্থীরা জানান, কুয়াশা উৎসব আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণের উৎসব। এ উৎসবে আমাদের উপজাতীর অনেক কিছু তুলে ধরা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক ধর্মের শিক্ষার্থী রয়েছে তারা আমাদের উপজাতি সংস্কৃতি সম্পর্কে জানে না। তাদের জানানোর জন্যই প্রদর্শনী করেছি। আমাদের সম্প্রদায়ের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য সবাইকে জানাতে চাই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাহিম, চৈতী ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কুয়াশা উৎসবটি একটি সর্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে। কুয়াশাকে অনেকেই নিরাশার প্রতীক মনে করে। সে ধারণা পাল্টে কুয়াশাকেই আশার প্রতীক মনে করাতে এ আয়োজন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রত্যন্ত অঞ্চল হওয়ায় এখানে ঘন কুয়াশা পড়ে। এখন মানুষ কুয়াশা খুব বেশি দেখতে পায় না। এছাড়া আমাদের প্রত্যেকেরই শীত নিয়ে রয়েছে শৈশব স্মৃতি। এ কুয়াশা উৎসব আমাদের তা স্মরণ করিয়ে দেয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন তপন কুমার সরকার বলেন, কুয়াশা উৎসব আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃতীয়বারের মতো উদযাপিত হচ্ছে। এটি সাড়া জাগানোর মতো একটি প্রোগ্রাম। কুয়াশাকে কেন্দ্র করে ব্যতিক্রমী আয়োজন। এটি সারা দেশে প্রভাব ফেলবে। বিশ্ববিদ্যালয় যতদিন থাকবে ধারাবাহিতা বজায় রেখে এ আয়োজন হবে। এ আয়োজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের মধ্যে মিলনমেলা তৈরি করে। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ে উৎসবে পরিণত হয়েছে। আমি এ আয়োজনে সাফল্য কামনা করি।

কুয়াশা উৎসবের আয়োজক পরিষদের উপদেষ্টা ফোকলোর বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মেহেদী উল্লাহ বলেন, বাংলার লোক উৎসবগুলোর তাৎপর্যকে ধারণ করেই কুয়াশা উৎসব শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারী এই আয়োজনের সঙ্গে জড়িত রয়েছে। আশা করছি সবার সার্বিক সহযোগিতায় সুন্দরভাবে এবারের উৎসব পালিত হবে। এবারের কুয়াশা উৎসব উৎসর্গ করা হয়েছে মৈমনসিংহ গীতিকার শতবর্ষ উদযাপনকে।

বাংলাদেশ সময়: ১২:৪৪:৪৪ ● ১৯৪ বার পঠিত