বুধবার ● ১৮ অক্টোবর ২০২৩
পূজার পর মহাসমাবেশসহ বিএনপির নতুন কর্মসূচি
Home Page » প্রথমপাতা » পূজার পর মহাসমাবেশসহ বিএনপির নতুন কর্মসূচি
বঙ্গ-নিউজঃ ঘনিয়ে আসছে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন। স্ব-স্ব অবস্থানে অনড় সরকারি ও রাজপথের বিরোধী দল। সংলাপ ও সমঝোতার কোনো লক্ষণ নেই। পাল্টা কর্মসূচির মাধ্যমে রাজপথ দখলে নিতে প্রস্তুত দুই দল। আজ নয়াপল্টনে জনসমাবেশ থেকে চূড়ান্ত আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করবে বিএনপি। অন্যদিকে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে পাল্টা সমাবেশ থেকে কর্মসূচি দেবে আওয়ামী লীগও। পূজার পরপরই শুরু হবে রাজপথে ‘ফয়সালা’র লড়াই
সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনের চলমান কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ ঢাকায় জনসমাবেশ করবে বিএনপি। একই দিন সমমনা অন্যান্য দল ও জোট পৃথকভাবে একই কর্মসূচি পালন করবে। এর মধ্য দিয়ে শেষ হচ্ছে টানা দ্বিতীয় দফার কর্মসূচি। এখান থেকেই আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা আসতে পারে। পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য সরকারকে দেওয়া হতে পারে আলটিমেটাম। আসতে পারে দুর্গাপূজা শেষে মহাসমাবেশসহ আরও অনেক কর্মসূচি। তপশিল ঘোষণার আগ পর্যন্ত এ ধরনের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন কর্মসূচি নিয়েই এগিয়ে যেতে চায় দলটি।
এতেও সরকার কর্ণপাত না করলে তপশিলের পর লাগাতার ঘেরাও, অবস্থান, অবরোধেরে মতো কর্মসূচিতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত রয়েছে। জানা গেছে, আগামী ২০ থেকে ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত দুর্গাপূজার মধ্যে কোনো কর্মসূচি পালন করবে না বিএনপি। আজ থেকে এক সপ্তাহ সময় দিয়ে সরকারকে আলটিমেটাম দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করেছেন দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামের স্থায়ী কমিটির নেতারা। আন্দোলনের এই ধাপে মাসের শেষে ঢাকায় মহাসমাবেশের মধ্য দিয়ে ধারাবাহিক আন্দোলনে প্রবেশ করতে চায় দলটি। তপশিলের আগ পর্যন্ত সেই আন্দোলন টেনে নেওয়া হবে। এর পর চূড়ান্ত পর্যায়ের আন্দোলনে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে দলের শীর্ষ নেতাদের।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনকে এক করেই দুর্গাপূজার পরে ‘দুর্বার গণআন্দোলন’ হবে। অনেক চড়াই-উৎরাই পার হয়ে এসেছি। এখন তাদের সামনে লক্ষ্য মাত্র একটাই– দেশকে বাঁচাতে হলে, অর্থনীতিকে বাঁচাতে হলে, একই সঙ্গে খালেদা জিয়াসহ সব রাজনৈতিক নেতাকর্মীকে বাঁচাতে হলে এই সরকারকে সরানো ছাড়া তাদের সামনে আর কোনো বিকল্প নেই। এক দফা আন্দোলনের কর্মসূচি হিসেবে গত ১৮ সেপ্টেম্বর ছয়টি রোডমার্চসহ টানা ১৫ দিনের কর্মসূচি পালন করে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। পরবর্তী সময়ে ৩ অক্টোবর থেকে ওই কর্মসূচিকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়। এ ছাড়া ৯ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া কর্মসূচি ঢাকায় জনসমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হবে।
বিএনপি নেতারা জানান, চূড়ান্ত আন্দোলনের আগে সমমনা দল ও জোটের সঙ্গে পৃথকভাবে বৈঠক শুরু করেছেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা। গুলশান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ওইসব বৈঠকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়াল উপস্থিত ছিলেন। সেখানে আগামীতে এক দফার আন্দোলনে সবাইকে সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণের পাশাপাশি সরকারের পাতা ফাঁদে না পড়ার জন্য সতর্ক করা হয়েছে। চলমান আন্দোলনে বেইমানি না করতেও এসব দল ও জোটের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা।
জানা গেছে, নির্বাচনের তপশিল ঘোষণার পর ‘ডু অর ডাই’ আন্দোলনে যেতে চান বিএনপিসহ অন্যান্য দলের নেতা। এবারের কর্মসূচিতে বিভিন্ন জেলা থেকে নেতাকর্মীকে ঢাকায় আসার কৌশল নিয়ে আলোচনা করেন নেতারা। তপশিল পর্যন্ত লাগাতার কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে, যা পূজার পর ২৭ অথবা ২৮ অক্টোবর থেকে শুরু হতে পারে। চূড়ান্ত পর্যায়ে বেশির ভাগ কর্মসূচি হবে ঢাকাকেন্দ্রিক। শুরুতে মহাসমাবেশের মতো কর্মসূচি দিয়ে এ কর্মসূচি আরম্ভ করা হবে। তবে শেষ ধাপে তা ঘেরাও আন্দোলনে রূপান্তর ঘটবে। এর মধ্যে ঢাকা ঘেরাও, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, সচিবালয়, নির্বাচন কমিশনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ঘেরাওয়ের প্রস্তাব রয়েছে।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, পূজার পর আরও শক্ত কর্মসূচি নিয়ে হাজির হবো। ওই আন্দোলনে অবৈধ দখলদার সরকারের মসনদ ভেঙে যাবে। জনগণের দুর্বার আন্দোলনে সরকার পদত্যাগে বাধ্য হবে।
জনসমাবেশের প্রস্তুতি
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আজ দুপুর ২টায় এ জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত এ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে দলটি। এ ছাড়া পৃথকভাবে অন্যান্য দল ও জোট সমাবেশ কর্মসূচি পালন করবে।
দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম জানান, এমনিতেই তাদের ধারাবাহিক কর্মসূচি চলছে। সেখানে নেতাকর্মী ছাড়াও সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ প্রতিনিয়ত বাড়ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১০:০১:৫২ ● ২৩৮ বার পঠিত