সোমবার ● ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩

খাদ্যে মূল্যস্ফীতি আকাশছোঁয়া

Home Page » প্রথমপাতা » খাদ্যে মূল্যস্ফীতি আকাশছোঁয়া
সোমবার ● ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩


ফাইল ছবি

বঙ্গ-নিউজঃ    গত আগস্ট শুরু হয়েছিল ডিমের বাজারে অস্থিরতা দিয়ে। বেড়ে যায় পেঁয়াজ, রসুন, আদা, আলু, ডালসহ আরও কিছু পণ্যের দাম। এসব কারণে গত মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি ১২ দশমিক ৫৪ শতাংশে ঠেকেছে। গ্রামাঞ্চলে এ হার আরও বেশি– ১২ দশমিক ৭১ শতাংশ। খাদ্যপণ্যে এমন আকাশছোঁয়া মূল্যস্ফীতি নিকট অতীতে দেখা যায়নি।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) গতকাল রোববার আগস্ট মাসের মূল্যস্ফীতির প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

এতে দেখা যায়, সার্বিকভাবে সারাদেশে আগস্টে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি জুলাইয়ের চেয়ে ২ দশমিক ৭৮ শতাংশীয় পয়েন্ট বেড়েছে। জুলাই মাসে খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ। জুনে যা ছিল ৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ।

গ্রামের তুলনায় শহরাঞ্চলে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি সামান্য কম। আগস্টে শহরাঞ্চলে খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি ছিল ১২ দশমিক ১১ শতাংশ, যা আগের মাসে অর্থাৎ জুলাই মাসে ছিল ৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, দেশে গত কয়েক দশকে খাদ্যপণ্যে এত বেশি হারে মূল্যস্ফীতি হয়নি। তবে বিবিএসের প্রকাশিত খাদ্যপণ্যসহ সার্বিক মূল্যস্ফীতির হিসাবেও প্রকৃত বাস্তবতা উঠে আসেনি বলে মনে করেন তিনি। তাঁর মতে, খাদ্যপণ্যের প্রকৃত মূলস্ফীতি বিবিএসের তথ্যের দ্বিগুণের কম নয়। গত অর্থবছর ক্যাবের হিসাবে মূল্যস্ফীতি ছিল ১৭ শতাংশ, যা বিবিএসের হিসাবে ছিল ৯ শতাংশের সামান্য বেশি।

ক্যাব সহসভাপতি বলেন, এখন খাদ্যপণ্যের প্রকৃত মূল্যস্ফীতি গত বছরের চেয়ে অনেক বেশি হওয়ার কথা। কারণ কয়েক মাস ধরে কখনও কাঁচামরিচ, কখনও আদা, রসুন, পেঁয়াজ কিংবা ডিমের বাজারে অরাজকতা লেগেই ছিল। ব্যবসায়ীদের অতি মুনাফার ফাঁদে পড়তে হয়েছে সাধারণ ভোক্তাদের।

খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে আগস্টে সার্বিক মূল্যস্ফীতিও বেড়েছে। মাস শেষে যা ৯ দশমিক ৯২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। জুলাই মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৬৯ শতাংশ। জুনে যা ছিল ৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ।

অবশ্য খাদ্যবহির্ভূত পণ্যে আগস্টে মূল্যস্ফীতি বেশ কমেছে। জুলাই মাসের ৯ দশমিক ৪৭ শতাংশের মূল্যস্ফীতি ৭ দশমিক ৯৫ শতাংশে নেমেছে। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি কমেছে ১ দশমিক ৫২ শতাংশীয় পয়েন্ট। গ্রাম ও শহরাঞ্চল– উভয় ক্ষেত্রেই এ প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। গত মাসে গ্রামাঞ্চলে খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি ছিল ৭ দশমিক ৩৮ শতাংশ। জুলাই মাসে এটি ছিল ৯ দশমিক ৪৮ শতাংশ। অন্যদিকে শহরাঞ্চলে খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি ৮ দশমিক ৪৮ শতাংশে নেমে এসেছে, যা আগের মাসে ছিল ৯ দশমিক ২০ শতাংশ। খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি গ্রামের চেয়ে শহরে কিছুটা বেশি।

ভোক্তা মূল্যসূচকে থাকা খাদ্যপণ্যের মধ্যে রয়েছে চাল, ডাল, মাছ, মাংস, তেল, চিনিসহ ১২৭টি পণ্য। অন্যদিকে খাদ্যবহির্ভূত খাতের মধ্যে রয়েছে কেরোসিনসহ সব ধরনের জ্বালানি তেল, স্বর্ণ, পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যয়সহ ২৫৬টি পণ্য ও সেবার খরচ। মোট ৭৪৯ ধরনের পণ্য ও সেবার বাজারদর সংগ্রহ করে থাকে বিবিএস। সব সিটি করপোরেশন এবং ৫৬ জেলা শহরের বাজার থেকে শহরের দর এবং ৬৪ জেলার বিভিন্ন গ্রামীণ বাজার থেকে গ্রামীণ পণ্য ও সেবার দর সংগ্রহ করা হয়। কোনো মাসে ভোক্তা মূল্য সূচক আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কতটুকু বাড়ল, তার শতকরা হারই পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতি।

গত এপ্রিল থেকে মূল্যস্ফীতির হিসাব পদ্ধতিতে বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হয়।

আগে ২০০৫-০৬ অর্থবছরকে ভিত্তিবছর ধরে এ হিসাব করা হতো। এখন ভিত্তিবছর পরিবর্তন করে ২০১৫-১৬ অর্থবছর করা হয়েছ। নতুন পদ্ধতিতে পণ্য ও সেবার সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১০:২৪:৫৬ ● ১৬৭ বার পঠিত