বৃহস্পতিবার ● ৮ জুন ২০২৩

২৭ বারের মতো ভর্তি পরীক্ষা দিলেন চীনা মিলিয়নেয়ার !

Home Page » জাতীয় » ২৭ বারের মতো ভর্তি পরীক্ষা দিলেন চীনা মিলিয়নেয়ার !
বৃহস্পতিবার ● ৮ জুন ২০২৩


ভর্তি পরীক্ষা দিলেন চীনা মিলিয়নেয়ার লিয়াং শি

বঙ্গ-নিউজ:অদম্য মিলিয়নেয়ার লিয়াং শি। তিনি দমে যাবার পাত্র নন। এক সময়  কারখানার শ্রমিক ছিলেন তিনি। পরে নিজে ব্যবসা শুরু করেছেন। নির্মাণ সামগ্রীর রমরমা কারবার তার। অনেক মানুষের কর্মসংস্থান করেছেন, নিজে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি না থাকার আক্ষেপ তার ঘোচেনি। গতকাল  ২৭ বারের মতো বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা দিলেন চীনা মিলিয়নেয়ার লিয়াং শি।

চীনের প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি হতে গেলে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ গাওকাও টেস্টে উত্তীর্ণ হতে হয়। নিয়মিত শিক্ষার্থীরাই গাওকাও পরীক্ষার কথা শুনলে ভয় পান। এজন্য অনেকে স্কুল পাশের পর বিভিন্ন কারিগরি প্রশিক্ষণ অথবা দ্বিতীয় সারির কলেজ-ইনস্টিটিউটে ভর্তির পথ বেছে নেন। তবে লিয়াং শি এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার আগ্রহ ও জেদ তার ৪০ বছরের পুরোনো।

গতকাল ১ কোটি ৩০ লাখ তরুণ-তরুণী এ বছরের গাওকাও পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। তাদের মধ্যে প্রথম দেখাতেই ব্যতিক্রম হয়ে চোখে পড়েন লিয়াং। একঝাঁক নবীনের মধ্যে বসে থাকা পাকা চুলের স্বনির্মিত মিলিয়নেয়ার। গাওকাও টেস্টের প্রস্তুতির জন্য গত কয়েকমাস ধরে প্রতিদিন ভোরে ঘুম থেকে উঠে টানা ১২ ঘণ্টা পড়াশোনা করেছেন তিনি। তার ভাষায়, সন্যাসীর মতো জীবনযাপন করেছেন কয়েক মাস।

লিয়াংকে স্রেফ জেদী বা আবেগী মানুষ ভাবলে ভুল হবে। কারখানার একেবারে সাধারণ শ্রমিক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করা এই লোক একপর্যায়ে নিজে উদ্যোক্তা হয়েছেন। নির্মাণ সামগ্রীর বিশাল ব্যবসা তিনি নিজ হাতে গড়ে তুলেছেন। ব্যবসায়ী হিসেবে অভাবনীয় সাফল্য তাকে তার স্বপ্নের পথ থেকে বিচ্যুত করতে পারেনি। নিজের ছেলের আপত্তিও তাকে ঠেকাতে পারেনি।

চার দশক ধরে লিয়াং সিচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন পুষছেন। ১৯৮৩ সালে প্রথমবারের মতো গাওকাও টেস্টে অংশগ্রহণের সময় তার বয়স ছিল ১৬ বছর। সেবার চান্স মেলেনি। এরপর ১৯৯২ সাল পর্যন্ত নিয়মিত পরীক্ষা দিয়ে প্রতিবারেই ব্যর্থ।

১৯৯২ সালে নিয়ম করা হয় যে কেবলমাত্র ২৫ বছরের কম বয়সী অবিবাহিত তরুণ-তরুণীরাই গাওকাও পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন। বাধ্য হয়ে লিয়াং শিকে থেমে যেতে হয়। ২০০১ সালে বয়সসীমা তুলে নেওয়ার পর আবারও অধরা স্বপ্ন ছুঁতে উদগ্রীব হয়ে ওঠেন তিনি। ২০০১ সালের পর আরও ১৬ বার গাওকাও টেস্টে তিনি অংশ নিয়েছেন। এর মধ্যে ২০১০ সালের পর একবারও মিস করেননি, কোভিডের বিধিনিষেধের সময়ও না।

এরইমধ্যে লিয়াং শির ছেলে ২০১১ সালে গাওকাও পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উতরে গেছে। বারবার অংশ নিয়ে নিয়মিত ব্যর্থ হওয়ায় লিয়াংকে অনেকে অনলাইনে ট্রল করতে থাকে। তবে লিয়াং থামেননি।

গতকাল পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর লিয়াং বলেন, গত কয়েক মাস কিছু করিনি। আড্ডা দিইনি, মাহজং খেলিনি। এখন সেগুলো পুষিয়ে নেব। টানা তিনদিন বন্ধুদের সঙ্গে মাহজং খেলব।

বাংলাদেশ সময়: ২০:৫৬:৫২ ● ৩৭৫ বার পঠিত