শনিবার ● ২০ মে ২০২৩
হিরোশিমায় মার্কিন প্রেসিডেন্টের পারমাণবিক স্যুটকেস, প্রতিবাদ
Home Page » জাতীয় » হিরোশিমায় মার্কিন প্রেসিডেন্টের পারমাণবিক স্যুটকেস, প্রতিবাদবঙ্গ-নিউজ: জি৭ সম্মেলন উপলক্ষে জাপানের হিরোশিমায় অবস্থান করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক অস্ত্রপ্রয়োগের মোবাইল কমান্ড হিসেবে পরিচিত নিউক্লিয়ার স্যুটকেসটিও তার সঙ্গে রয়েছে। পারমাণবিক অস্ত্রের বিভীষিকার শিকার হিরোশিমার মানুষ এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ করছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক হিসেবে প্রেসিডেন্ট সে দেশের পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন। হোয়াইট হাউসের সিচুয়েশন রুম থেকেই পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে নির্দেশ পাঠানোর প্রযুক্তি রয়েছে। তবে হোয়াইট হাউসের বাইরে থাকলে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ পাঠাতে তিনি ব্যবহার করবেন নিউক্লিয়ার স্যুটকেস। চামড়ার তৈরি ৪৫ পাউন্ড (২০ কেজি) ওজনের স্যুটকেসটি প্রেসিডেন্টের একজন সামরিক সহকারী বহন করে থাকেন।
নিউক্লিয়ার স্যুটকেসে রয়েছে ম্যানিলা ফোল্ডার, অথেনটিকেশন কার্ড ও ব্ল্যাক বুক। এর মধ্যে ম্যানিলা ফোল্ডারে ইমার্জেন্সি এলার্ট সিস্টেম অ্যাক্টিভেশনের পদ্ধতি লেখা রয়েছে। অথেনটিকেশন কার্ডে থাকা লঞ্চ কোড কৌশলগত অস্ত্র কমান্ডে গোপনীয় নির্দেশ পাঠাবে। ব্ল্যাক বুকে আছে গোপনীয় স্থাপনার তালিকা, যেখানে প্রেসিডেন্টকে সরিয়ে নিতে হবে। স্যুটকেসের হাতলের কাছে একটি ছোট অ্যান্টেনা রয়েছে, যা বিশেষ যোগাযোগব্যবস্থা সংযোজনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট যেখানে যান, তার সঙ্গে ওই পারমাণবিক স্যুটকেস থাকে। তবে বিপত্তি বেঁধেছে হিরোশিমায় ওই স্যুটকেসের উপস্থিতির কারণে। এ পর্যন্ত বিশ্বের দুটি শহর পারমাণবিক বিভীষিকার শিকার হয়েছে- হিরোশিমা ও নাগাসাকি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের একেবারে শেষপর্যায়ে জাপানের এ দুটি শহরে পারমাণবিক বোমা নিক্ষেপ করে যুক্তরাষ্ট্র।
ইউরোনিউজের খবরে জানা যায়, গতকাল রাতে কয়েকশ মানুষ নানা স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে হিরোশিমার প্রধান প্রদক্ষিণ করেন। এ সময় তারা ‘হিরোশিমা সম্মেলনকে না’ ‘পারমাণবিক যুদ্ধকে না’ ‘ইউক্রেন থেকে হাত সরাও’ ‘হিরোশিমায় নিউক্লিয়ার স্যুটকেস মানি না, মানি না’ ‘চীনের সঙ্গে যুদ্ধ নয়’ বলে স্লোগান দেন।
বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী এক ব্যক্তি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, আমাদের জন্য এটা অনেক বড় আবেগিক ইস্যু। আমার মা একজন হিবাকুশা (পারমাণবিক বোমা হামলার পর বেঁচে থাকা মানুষ)। এই স্যুটকেসের উপস্থিতি আমার মা ও তার মতো মানুষদের খুব দুঃখ দেয়।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী, পেশাজীবী, অশীতিপর বৃদ্ধ-বৃদ্ধাসহ নানা বয়স ও শ্রেণীপেশার মানুষ এ বিক্ষোভে যোগ দেন। যদিও বিক্ষোভকারীর সংখ্যার তুলনায় কমপক্ষে ১০ গুণ বেশি পুলিশ সেখানে মোতায়েন করা হয়েছিল।
নিশিমা নামে এক তরুণ বলেন, আমি সম্পূর্ণভাবে পারমাণবিক বোমার বিরুদ্ধে, যুদ্ধের বিরুদ্ধে। এ কারণে এখানে এসেছি। একটা পারমাণবিক যুদ্ধের প্রস্তুতির জন্য এ সম্মেলন হচ্ছে।
এদিকে জো বাইডেন হিরোশিমা পিস মেমোরিয়াল পরিদর্শন ও সেখানে রাখা বইয়ে স্বাক্ষর করেছেন। পরিদর্শন বইয়ে বাইডেন লিখেছেন- পৃথিবীকে পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত করতে হবে। হিরোশিমা আমাদের শান্তিপূর্ণ ভবিষ্যতের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ থাকার গুরুত্ব স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০:০৫:৫৬ ● ২৫৯ বার পঠিত