বৃহস্পতিবার ● ৩ নভেম্বর ২০২২
মোহনপুর-রাজিনপুরের কুস্তিখেইড় আটকে দেওয়ার হুমকির ঘটনায় জেলা ক্রিড়া সংস্থার নিন্দা
Home Page » সারাদেশ » মোহনপুর-রাজিনপুরের কুস্তিখেইড় আটকে দেওয়ার হুমকির ঘটনায় জেলা ক্রিড়া সংস্থার নিন্দাস্টাফ রিপোর্টার::সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মোহনপুর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার রাজিনপুর গ্রামের মধ্যে ভাইয়াপি কুস্তিখেইড় উপলক্ষে কথিত কুস্তি ফেডারেশনকে চাদা না দেওয়ায় রাজিনপুর গ্রামকে হুমকি দিয়ে খেলতে বারণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। জেলা ক্রিড়া সংস্থাও বিষয়টি স্বীকার করে এ ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে কুস্তির অসাংগঠনিক ঐতিহ্য রক্ষা করে শান্তি ও সম্প্রীতির খেলা নির্বিগ্নে চালিয়ে যেতে আহ্বান জানিয়েছে। চাঁদা না দেওয়ার কারণে খেলা বন্ধের হুমকি দেওয়ায় তীব্র নিন্দাও জানায় জেলা ক্রিড়া সংস্থা।
মোহনপুর গ্রামের প্রাণী চিকিৎসক মো. সেলিম জানান, গত এক মাসে চারটি কুস্তি খেলার আয়োজন করে মোহনপুর গ্রাম। শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রেখে তারা উৎসবমুখর পরিবেশে খেলা সম্পন্ন করেছেন। সম্প্রতি জনৈক নূরুল হক আফিন্দি নামের এক ব্যক্তি নিজেকে কুস্তি ফেডারেশনের সভাপতি ঘোষণা দিয়ে মোহনপুর গ্রামের ইউপি সদস্য মো. নূরুল আমিনের কাছে ৩ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। জামালগঞ্জের বিছনা গ্রামের সঙ্গে মোহনপুর গ্রামের কুস্তি খেলার দিন রাতে মোবাইলে ফোন দিয়ে এই চাঁদা দাবি করেন নূরুল হক আফিন্দি। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় এরপর মোহনপুর গ্রামের বিরুদ্ধে তিনি ষড়যন্ত্র করে তাদেরকে ঐতিহ্যবাহী কুস্তিখেইড় থেকে বিরত রাখার হুমকি ধমকি দিচ্ছেন মোহনপুর গ্রামের সঙ্গে খেলতে আগ্রহী অন্যান্য গ্রামের লোকদের।
মোহনপুর গ্রামের সাজু তালুকদার বলেন, আমাদের মুরুব্বী ও রাজিনপুরের মুরব্বিরা বসে আগামী সোমবার কুস্তিখেইড়ের তারিখ ঘোষণা করেছেন। এখন রাজিনপুরের মুরুব্বীদের ফোন করে জনৈক নূরুল হক আফিন্দি মোহনপুরের সঙ্গে খেলতে আসলে রক্তি নদীতে তাদের নৌকা ডুবিয়ে দেওয়ার হুমকি ধমকি দেন। এতে ভয় পেয়ে মোহনপুর গ্রামের গণ্যমান্যদের বিষয়টি অবগত করে খেলা বন্ধ রাখার অনুরোধ করেন রাজিনপুর গ্রামের লোকজন। পাশাপাশি মোহনপুর ও রাজিনপুর গ্রামবাসী জেলা ক্রিড়া সংস্থার কর্ণধারদেরও বিষয়টি অবগত করেন।
এই অভিযোগ পেয়ে ক্ষোভ ও নিন্দা জানান জেলা ক্রিড়া সংস্থার কর্মকর্তারা। সুনামগঞ্জ জেলা ক্রিড়া সংস্থার কোষাধ্যক্ষ আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, আমরা খবর পেয়েছি জনৈক নূরুল হক আফিন্দিকে চাঁদা না দেওয়ায় বিভিন্ন গ্রামের কুস্তিখেইড় হুমকি দিয়ে আটকে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী কুস্তিখেইড় কয়েকশ বছর ধরে কোন সাংগঠনিক তৎপরতা ছাড়াই কেবল দুই গ্রামের মুরব্বি ও তরুণদের উদ্যোগেই নির্বিগ্নে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এখন হঠাৎ নিজেকে নেতা ঘোষণা করে এক ব্যক্তি এই খেলা নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। আমরা এ ঘটনায় নিন্দা জানাই। পাশাপাশি চাঁদাবাজি ও হুমকি দেওয়ার ঘটনায় তার বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানাই।
উল্লেখ্য গত সপ্তাহে কুস্তি খেলার নামে চাঁদাবাজি বন্ধ ও ক্রিড়া সংস্থার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করায় নূরুল হক আফিন্দির বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
নূরুল হক আফিন্দির মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ফোন ধরেননি।
বাংলাদেশ সময়: ১৯:১১:০২ ● ৪৩৩ বার পঠিত